1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:২৯ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

মিয়ানমার সংকট : বাংলাদেশের গলার কাঁটা: মোহাম্মদ তানভীর কায়ছার

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যা বাংলাদেশের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানবতাবাদী বিশ্ব নেত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিক দিক বিবেচনা করে রাখাইন রাজ্যের প্রায় দশলক্ষ মুসলিম নাগরিককে আশ্রয় দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতায় তাদের নিজ ভূমিতে ফিরিয়ে নেয়ার কথা থাকলেও তাদের ফিরিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক মহল তেমন কোন কার্যকরী উদ্যোগ নিতে ব্যর্থ হচ্ছে। একদিকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যেমন মানবেতর জীবনযাপন করছে, তেমনি বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশের অর্থনীতিতে এই চাপ বুকের মধ্যে জগদ্দল পাথরের মত চেপে আছে। হালে যুক্ত হয়েছে মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধ। বাংলাদেশের সীমান্ত অনিরাপদ হয়ে পড়ছে।
মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ যুদ্ধের প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশের সীমান্তে। প্রায়ই গুলি কামানের গোলার সাথে বাংলাদেশের ভিতর ঢুকে পড়ছে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়নরত মিয়ানমারের বর্ডারগার্ড। এমনিতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী নানা অপরাধমূলক কর্মকা-ে জড়িয়ে পড়েছে। বিভিন্ন সংঘাত ও অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ার পাশাপাশি তাদের কেউ কেউ বাংলাদেশের পাসপোর্ট পর্যন্ত জোগাড় করে নিচ্ছে। পরিবেশগত বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলে দিচ্ছে অপরিকল্পিত ভাবে প্রবেশকৃত এই জনগোষ্ঠী। এই প্রভাব হচ্ছে দীর্ঘস্থায়ী।
এত বড় জনগোষ্ঠীর ভরণপোষণ বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশ কতদিন বইতে সক্ষম, সে নিয়ে আশঙ্কা আছে। এই অঞ্চলের নিরাপত্তার আলোচনায় চীন, ভারত গভীরভাবে জড়িয়ে আছে। মিয়ানমার বিষয়ে চীন ও ভরতের পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেরও একটা নিজস্ব অবস্থান আছে। মার্কিন সিনেটে “বার্মা এক্ট” পাশের বিষয়টিও আমরা জানি। এত কিছুর পরও স্পষ্ট নয় যে, আন্তর্জাতিক মহল মিয়ানমার বিষয়ে কি করতে চাইছে। শুধু রোহিঙ্গা ইস্যু নয়, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ গৃহযুদ্ধও বাংলাদেশে নিরাপত্তার জন্য মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারমধ্যে যুক্ত হয়েছে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত বিভিন্ন গোষ্ঠী। আর তাদের সংঘর্ষের খেসারত দিতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।
বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী এমনকি সীমান্তে বসবাসকারী সাধারণ জনগোষ্ঠী চরম নিরাপত্তাহীনতায় আছে। এর আশু সমাধান জরুরি। মাদক, চোরাচালান এসব তো আছেই। মোটকথা, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। সমস্যাটি মিয়ানমার তৈরি করেছে, আর সমাধান তাদেরই করা উচিত। বছর গড়াচ্ছে, কিন্তু সমাধানের আলো দেখা যাচ্ছে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সারা বিশ্বে খবরদারি করলেও তাদের নিষ্ক্রিয় ভূমিকা আমাদের অবাক করছে।
একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা শুধুমাত্র বাংলাদেশের ঘাড়ে ছাপিয়ে দেয়া একধরনের কাপুরুষতা। আন্তর্জাতিক বিশ্বের এহেন পলায়নপর মানসিকতা আমাদের ভাবাচ্ছে। এই সংকটকে আরও জিইয়ে রাখছে সারা বিশ্বের সংকট ডেকে আনবে। বিশ্বের বিভিন্ন সংকটের মধ্যে রোহিঙ্গা সমস্যা একটি গুরুতর সমস্যা। এই আধুনিক বিশ্বে একটি দেশের মানুষ গৃহহীন হয়ে অন্য একটি দেশে মানবেতর জীবন যাপন করছে এটি মেনে নেয়া যায়না।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক বিশ্বের হয়ে এই গৃহহীন মানুষদের আশ্রয় দিয়েছেন এবং অন্ন সংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন সেটি তার উদারতা ও মানবতার প্রতিফলন, কিন্তু বাংলাদেশের সাথে বিশ্বমোড়লদের একত্রে কাজ করে এই সংকটের সমাধান করতে হবে।
বিশ্বমানবতার সবচেয়ে বড় বোঝা রোহিঙ্গা ইস্যু এটি আন্তর্জাতিক পরিম-লকে বুঝতে হবে। বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহলে ও মিয়ানমারের কাছে দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের দাবি জানিয়ে আসছে। সেই সাথে বাংলাদেশের সক্ষমতাকেও আমলে নিতে হবে। মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যার বলী বাংলাদেশ হতে পারে না। ১০ লক্ষ রোহিঙ্গার রাষ্ট্রীয় ও মানবিক অধিকার নিশ্চিত করার দায়িত্ব আন্তর্জাতিক বিশ্বের। বাংলাদেশের একক না। আমরা এই সংকটের স্থায়ী সমাধান চাই। মিয়ানমার ইস্যুতে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ আরও কার্যকর হোক।
[মোহাম্মদ তানভীর কায়ছার, ডিন, কলা ও মানবিক অনুষদ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়]

 

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com