1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২২ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

ব্যাংকিং খাতে আওয়ামী লীগ সরকার যেভাবে জনগণের আস্থা ফেরাবে : মো. হাসানুর রহমান (হাসান)

  • আপডেট সময় বুধবার, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

একটি অর্থনীতির চালিকাশক্তি হিসেবে ব্যাংকিং খাতে সাফল্য লাভ এবং পরিধি বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। বাংলাদেশ বিগত দেড় দশকে যে দৃশ্যমান উন্নয়ন স¤পন্ন করতে সক্ষম হয়েছে, ঠিক এর বিপরীতে অনেকটা সমালোচনার মধ্যে রয়ে গেছে ব্যাংকিং খাত। বর্তমান সরকারের কর্মতৎপরতা থাকা সত্ত্বেও খেলাপি ঋণ একটি বড় প্রতিবন্ধকতা হিসাবে রয়ে ব্যাংকিং খাতে।
বিগত বছরগুলোতে ব্যাংকিং খাতে আধুনিক পরিষেবা বৃদ্ধি এবং সহজলভ্য করার লক্ষে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ও ডিজিটালাইজেশনের সক্ষমতা অর্জন করেছে, এরপরেও সমস্যাটি রয়ে গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, বর্তমানে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ১ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। যা মোট বিতরণ করা ঋণের ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ। এর মধ্যে সরকারি খাতের ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের হার ২০ শতাংশের বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রোডম্যাপে আগামী ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণের হার ৮ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশের মধ্যে ও বেসরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার ৫ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপি ঋণ আদায়ে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এই পরিকল্পনাই বলা হয়েছে, ইচ্ছাকৃত যেসব ঋণখেলাপি রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা ইচ্ছাকৃতভাবে ঋণ পরিশোধ করছেন না বা কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়াই ঋণ পরিশোধ করা থেকে বিরত থাকছেন তাদের ইচ্ছাকৃত খেলাপির আওতায় ফেলা হবে। এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কোনো ঋণখেলাপি নতুন ঋণ নিতে পারবে না। এছাড়া ঋণ নিয়ে গাড়ি-বাড়ি কিনতে রয়েছে বিধিনিষেধ। ঋণখেলাপিদের স¤পদের ওপরও তদারকি করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক একইসাথে তদারকি ক্ষমতা ব্যাংকগুলোকে দেওয়া হবে। অর্থাৎ কোনো ঋণখেলাপি অন্য ব্যাংকে গিয়ে ব্যবসা করাও আটকে দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিকল্পনা অনুযায়ী ঋণ গ্রহণকারী ব্যবসা করতে হলে তাকে আগে খেলাপিমুক্ত হতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকিং খাতের সুশাসন নিশ্চিতে নীতিমালা সংশোধন করে আরও স্পষ্টীকরণ করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি এবং এর মধ্যদিয়ে এই খাতের সেবার মান আরও উন্নত এবং গ্রাহকের আস্থা বৃদ্ধি পাবে।
অন্তর্ভুক্তিমূলক আর্থিক বা ব্যাংকিং সেবা প্রান্তিক মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য সরকারের সময়োপযোগী কার্যক্রমগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিং, এজেন্ট ব্যাংকিং, উপশাখা, এটিএম এবং অন্যান্য সেবা চালুকরণ।
এসব সেবার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে স্বল্প বা বিনা খরচে আর্থিক তথা ব্যাংকিং সেবায় অন্তর্ভুক্ত করা। এ সেবার প্রকৃষ্ট উদাহরণ হলো কৃষকদের জন্য মাত্র ১০ টাকায়, তৈরি পোশাক শ্রমিক বা স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য ১০০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার বিধান। এই অন্তর্ভুক্তি লক্ষ লক্ষ বাংলাদেশীকে ক্ষমতায়ন করেছে, তাদের সঞ্চয়, বিনিয়োগ এবং তাদের আর্থিক ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করার সুযোগ দিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্বিক কার্যক্রম অটোমেশনের লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বিগত দশ বছরে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে এবং প্রকল্পের সবচেয়ে বড় খাত অটোমেশন এর আওতায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক স¤পূর্ণ পেপারলেস ব্যাংকিং ব্যবস্থায় রূপান্তরের প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
সমৃদ্ধ ও নিরাপদ ব্যাংকিং ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে গৃহীত পদক্ষেপগুলো অনলাইন ব্যাংকিং, বাংলাদেশ অটোমেটেড চেক প্রসেসিং সিস্টেম, বাংলাদেশ ইলেক্ট্রনিক ফান্ডস ট্রান্সফার নেটওয়ার্ক, রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট (আরটিজিএস), ই-কমার্স ও এম-কমার্স, মোবাইল ব্যাংকিং সেবা, অনলাইন পেমেন্ট, বিজনেস প্রোসেস আউটসোর্সিং সেবা, ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ, বাংলাদেশ (এনপিএসিবি) ও ইলেকট্রনিক ড্যাশবোর্ড চালুকরণ। এসকল উদ্যোগ সফল করার মধ্য দিয়ে ব্যাংকিং খাতে জনগণের আস্থা সমুন্নত থাকবে এবং ব্যাংকিং পরিধি বৃদ্ধি পাবে।
ঋণ খেলাপি রোধে সরকারের এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্মিলিত কর্মপরিকল্পনা এবং এর বাস্তবায়ন ব্যাংকিং খাতে বাংলাদেশের জনগণের আস্থা এবং আর্থিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে সহায়ক হবে। একইসাথে একটি অ্যাক্সেস যোগ্য পরিষেবা, উদ্ভাবনী সমাধান, নৈতিক অনুশীলনের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে আরও ত্বরান্বিত করতে ব্যাংকিং খাত সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
লেখক: প্রভাষক, অর্থনীতি বিভাগ, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ইউনিভার্সিটি।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com