1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৩৭ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

নিজেদের দায়িত্ব বিষয়ে জানেন না জেলা পরিষদের সদস্যরা!

  • আপডেট সময় সোমবার, ২ জানুয়ারী, ২০১৭

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
জেলা পরিষদে নির্বাচনে বিজয়ী ওয়ার্ড সদস্যরা জানেন না তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। তাদের মর্যাদা কী হতে পারে, সেই বিষয়েও ওয়াকিবহাল নন এই সদস্যরা। স্থানীয় সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতোই কাজকর্ম হতে পারে – এমনটি মনে করেই তারা এ নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। তাদের মতে, সরকার যেহেতু নির্বাচন দিয়েছে, সেহেতু কোনও না কোনও দায়িত্বও তাদের দেওয়া হবে। আইনে জেলা পরিষদের দায়িত্ব-কর্তব্য স¤পর্কে কিছু ব্যাখ্যা দেওয়া থাকলেও পরিষদ সদস্যদের দায়িত্ব স¤পর্কে ¯পষ্ট কোনও ধারণা দেওয়া নেই। আইনে এ বিষয়ে বিধিমালা প্রণয়নের কথা থাকলেও আইন প্রণয়নের পর গত ১৬ বছরে সরকার কোনও বিধিমালা তৈরি করতে পারেনি।
গত বুধবার পার্বত্য তিন জেলা বাদের দেশের ৬১টি জেলায় জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে পরিষদের চেয়ারম্যান ছাড়াও সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে নির্বাচন হয়। প্রতিটি জেলাকে ১৫টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ৫টি সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডে বিভক্ত করে এই নির্বাচন হয়। এই হিসেবে ৬১ জেলায় ৯১৫টি সাধারণ ও ৩০৫টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে বিভক্ত করে এসব পদে ভোট হয়েছে। নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ওয়ার্ডের সীমানা নির্ধারণ করা হয়। এতে ৫ থেকে ৮টি ইউনিয়ন মিলে একটি সাধারণ ওয়ার্ড ও ১৫ থেকে ২৪টি ইউনিয়ন মিলে একটি সংরক্ষিত ওয়ার্ড গঠিত হয়।
নির্বাচনে বিজয়ী ও বিজিত ওয়ার্ড সদস্যদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, বেশিরভাগ প্রার্থীই পদমর্যাদা ও দায়িত্ব-কর্তব্য না জেনে বুঝেই নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। নির্বাচনী সীমানার আয়তন বেশি মনে করে ক্ষমতা বেশি থাকবে, এমনটা মনে করে তারা আগ্রহী হয়ে নির্বাচনে এসেছেন।
এদিকে এখতিয়ার না জানলেও বিজয়ী হতে মরিয়া ছিলেন সদস্য পদের প্রার্থীরা। গড়ে ৬৯ জন ভোটারের এই নির্বাচনে কেউ-কেউ কোটি টাকারও বেশি খরচ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনেকে ভোটার-প্রতি এক থেকে দুই লাখ টাকা খরচ করেছেন বলে নির্বাচনের পর জানা যাচ্ছে। বেসরকারি সংস্থাগুলো জেলা পরিষদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণের পর তাদের প্রাথমিক প্রতিবেদনেও নির্বাচনে টাকা ছড়াছড়ির অভিযোগের কথা জানিয়েছে।
জেলা পরিষদ আইন ২০০০ (সংশোধিত ২০১৬) পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এর কয়েকটি ধারায় জেলা পরিষদের কার্যক্রমের কথা বলা হয়েছে। পরিষদের বাধত্যমূলক ও ঐচ্ছিক এই দুই ধরনের কাজ রয়েছে। বাধ্যতামূলক কার্যাবলির মধ্যে রয়েছেÑ ১। জেলার সব উন্নয়ন কার্যক্রম পর্যালোচনা, ২। উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভা কর্তৃক গৃহীত উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা, ৩। সাধারণ পাঠাগারের ব্যবস্থা ও রক্ষণাবেক্ষণ, ৪। উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা বা সরকার কর্তৃক সংরক্ষিত নয়, এমন জনপথ, কালভার্ট ও ব্রিজ নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন, ৫। রাস্তার পাশে ও জনসাধারণের ব্যবহার্য স্থানে বৃক্ষরোপণ ও সংরক্ষণ, ৬। জনসাধারণের ব্যবহারার্থে উদ্যান, খেলার মাঠ ও উন্মুক্ত স্থানের ব্যবস্থা ও রক্ষণাবেক্ষণ, ৭। সরকারি, উপজেলা পরিষদ বা পৌরসভার রক্ষণাবেক্ষণে নয় এমন খেয়াঘাটের ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ, ৮। সরাইখানা, ডাকবাংলা এবং বিশ্রামাগারের ব্যবস্থা ও রক্ষণাবেক্ষণ, ৯। জেলা পরিষদের অনুরূপ কার্যাবলি স¤পাদনরত অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সহযোগিতা, ১০। উপজেলা ও পৌরসভাকে সহায়তা, সহযোগিতা এবং উৎসাহ দেওয়া, ১১। সরকার কর্তৃক জেলা পরিষদের ওপর অর্পিত উন্নয়ন পরিকল্পনার বাস্তবায়ন ও ১২। সরকার কর্তৃক আরোপিত অন্যান্য কাজ।
আর ঐচ্ছিক কাজের মধ্যে রয়েছে, শিক্ষা, সাংস্কৃতিক, সমাজকল্যাণ, অর্থনৈতিক কল্যাণ, জনস্বাস্থ্য, গণপূর্ত ইত্যাদি। এছাড়া কয়েকটি ক্ষেত্রে টোল আদায়ের কাজও পরিষদের রয়েছে।
প্রসঙ্গত, আইনে জেলা পরিষদের কার্যক্রম স¤পর্কে ব্যাখ্যা দেওয়া থাকলেও এর সদস্যদের কাজের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলা নেই। এক্ষেত্রে দায়িত্ব কর্তব্য নির্ধারণের জন্য আইনে বিধি প্রণয়নের বিধান রাখা হয়েছে। তবে ২০০০ সালে আইন প্রণয়ন করা হলেও এখন পর্যন্ত বিধি তৈরি করা হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এক নির্বাচিত সদস্য বলেন, এই নির্বাচনটা প্রথমবারের মতো হয়েছে। দায়িত্বের বিষয়টি আমরা সেভাবে ওয়াকিবহাল নই। এই পদের কাজ কী, তাও জানি না। এই নিয়ে সরকার হয়তো প্রজ্ঞাপন জারি করে আমাদের ক্ষমতা ও দায়িত্ব-কর্তব্য ঠিক করে দেবে। সরকার যখন নির্বাচন দিয়েছে, নিশ্চয়ই দায়িত্বও ¯পষ্ট করবে।
অপর এক নির্বাচিত সদস্য বলেন, আমাদের পদের অধিক্ষেত্র কী, মর্যাদা বা ক্ষমতা কী, সেটা এখনও জানি না। আগে থেকে জানার চেষ্টাও করিনি। নির্বাচন সামনে এসেছে। তাই অংশ নিয়েছি। নিশ্চয়ই কোনও না কোনও কাজ আমাদের থাকবে।
নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত এক প্রার্থী বলেন, জেলা পরিষদের নির্বাচনের তফসিল হওয়ার পর সদস্য পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলাম। পরে পরিচিত লোকের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানলাম ওই পদের দায়িত্ব ও মর্যাদা এখনও ¯পষ্ট নয়। অল্প কয়েকটি ভোটের এই নির্বাচনে জিততে হলে খরচও করতে হবে অনেক। যে কারণে পরে নির্বাচন থেকে সরে গেছি।
জেলা পরিষদের দায়িত্ব-কর্ত্যব্য স¤পর্কে মঙ্গলবার বিসিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্থানীয় সরকার বিষয়ক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, স্থানীয় অবকাঠামো তৈরি, সমন্বয় করা, বিদ্যালয় বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কবরস্থান নির্মাণ, কৃষি কাজ সহায়তার জন্য জেলা পরিষদ ছোট ছোট খাল তৈরি করবে। জেলা পরিষদের এ রকম অনেক কাজ করার আছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com