1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৩৫ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের বিবরণী জমা দেয়ার বাধ্যবাধকতা বহাল রাখুন

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ, ২০২৪

‘সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯-এর সংশোধন করে সম্পদের বিবরণী জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ উদ্যোগের কঠোর সমালোচনা করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সরকারের এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে দেশের প্রায় ১৫ লাখ সরকারি কর্মচারীকে জবাবদিহি থেকে দায়মুক্তি দেওয়া হবে। পাশাপাশি দুর্নীতি সুরক্ষিত ও উৎসাহিত হবে এমন আশঙ্কা করে এ উদ্যোগ বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।’ এইমর্মে একটি সংবাদপ্রতিবেদন বেরিয়েছে গতকালের (২০ মার্চ ২০২৪) দৈনিক সুনামকণ্ঠে। সংবাদপ্রতিবেদনটির শিরোনাম ছিল, ‘সরকারি চাকরিজীবীদের সম্পদের তথ্য জমা বাতিল হলে দুর্নীতি বাড়বে : টিআইবি’।
প্রচলিত আর্থসামাজিক বিন্যাস-ব্যবস্থা বজায় থাকলে এক শ্রেণির মানুষের বিপরীতে প্রজাতন্ত্রের সাধারণ প্রজাদের দাসত্বের বন্ধন আরও মজবুত হতে থাকবে, এটা কোনও নতুন কথা নয়। সরকারি কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রহিত করার প্রয়াসÑ এক অর্থে যাকে বলা যায়Ñ জনসাধারণের দাসত্বের বন্ধন আরও মজবুত করারই একটি আইনি তৎপরতা। ‘সম্পদের বিবরণী জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রহিতকরণ’-এর অর্থ হলো টিআইবি’র মতে দুর্নীতি বৃদ্ধি এবং বিদগ্ধমহলের কারও কারও মতে জনসম্পদ অবাধে আত্মসাতের ছাড়পত্র প্রদান করা। এতে করে সরকারি কর্মচারীরা বিপুল সম্পদের মালিক হয়ে উঠবেন এবং পরিণতিতে সম্পদের পুঞ্জিভবন তাদেরকে সমাজে ক্ষমতাধর করে তুলে প্রশাসনিক অর্থেই জনগণের দ-মু-ের প্রভু করে তোলবে। তখন শুরুর হবে ক্ষমতার বহিপ্রকাশ হিসেবে অন্য রাজনীতি। ভুলে গেলে চলবে না, সম্পদ সকল ক্ষমতার উৎস, বন্দুক নয়। কারণ সম্পদ যার বন্দুক ও বাহুবলও তার এবং তদুপরি টাকাওয়ালাই কেবল সুপারি দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। বিপুল সম্পদের অধিকারী একজন আমলা ফিল্মি কায়দায় কোনও সাধারণ মানুষের প্রতি ‘তোকে উচিত মূল্য দিলাম, তো জমিটা আমাকে লিখে দিচ্ছিস না কেন? খুব ভালো, তোর দেখি ছবি হওয়ার সাধ জেগেছে।’ প্রয়োজনে এবংবিধ বাক্যোচ্চারণের ক্ষমতার অধিকারী করে তোলবে না, তার কি কোনও নিশ্চয়তা আছে?
এমনিতেই আমলাদের মামলা সুবিধার নয়, তারা কেউ কেউ সাধারণ মানুষকে মানুষ মনে করেন না। ক্ষমতার উৎস সম্পদ হয়ে উঠলে তারা অনেকেই ধরাকে সরা জ্ঞান করবেন, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
সম্পদ সম্পদহীনের প্রতি ঘৃণার উদ্রেক করে। ভুলে গেলে চলবে না একদা দাসকে দাসপ্রভুরা প্রয়োজনে বলি দিতে কসুর করতেন না, তারা তাদের দাসদেরকে গরু-ছাগলের বেশি কীছু মনে করতেন না। অর্থাৎ সম্পদের সঞ্চয়ন বা পুঞ্জিভবন মানুষের মানবিকতাকে বিনাশ করে তার অন্তরের মানবত্বকে দানবত্বে পর্যবসিত করে। টাকার জন্য মানুষ মানুষকে খুন করে। গাজায় মানবিক বিপর্যয় চলছে, সেখানে খাদ্য পৌঁছতে দিচ্ছে না ইসরাইল, খাদ্যকে তারা অস্ত্র করে তোলেছে। সেখানে শিশুরা মরছে অনাহারে। তার মূলেও আছে টাকা কিংবা সম্পদ। যুদ্ধাবস্থা বজায় রেখে সা¤্রাজ্যবাদ সম্পদ আহরণ করতে চায় নিজের জন্য। সুযোগ পেলে সরকারি চাকুরেরা কী করবেন? প্রশ্ন থেকেই যায়। আর প্রশ্ন থেকেই যায়, আমাদের পূর্বসূরিরা কেন ‘সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯’-এ ‘সম্পদের বিবরণী জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা’র বিধান রেখেছিলেন? এর পেছনে কি কোনও রাষ্ট্রীয় মঙ্গল নেই, মানুষের মঙ্গলচিন্তা থেকে সে-বিধান কি বিচ্ছিন্ন ছিল?
বর্তমানে দেশ এমনিতেই দ্বন্দ্বশঙ্কুল অবস্থার ভেতর দিয়ে অতিক্রম করছে, একটু শান্তিতর জন্য মানুষ হাপিত্যেশ করছে। উক্ত আইনটি প্রবর্তিত হলে মানুষে মানুষে দ্বন্দ্ব আরও তীব্র হয়ে উঠবে এবং সমাজের শান্তি বিঘিœত হবে। সুতরাং বিদগ্ধমহল মনে করেন, আইনটি প্রবর্তিত ও কার্যকর করে এক শ্রেণির মানুষের কাছে আর এক শ্রেণির মানুষকে গরু-ছাগল বানিয়ে দেওয়া সমীচীন হবে না।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com