1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৩০ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

বঙ্গবন্ধু ও ইস্পাত কঠিন নেতৃত্ব : জয়নাল আবেদীন

  • আপডেট সময় সোমবার, ১৫ আগস্ট, ২০১৬

বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ- এ দুটি নাম, দুটি শব্দ একে অপরের পরিপূরক। যা আজ ঐতিহাসিকভাবে স্বীকৃত। একটি ছাড়া অন্যটি যেন মূল্যহীন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন যে মহানায়ক, তিনি বঙ্গবন্ধু, আমাদের জাতির জনক। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতীয়তাবাদের ¯্রষ্টা। তাঁর দীর্ঘদিনের সংগ্রাম, নেতৃত্ব ও আত্মত্যাগের পথ ধরেই বাঙালি তাদের নিজ আবাসভূমি প্রতিষ্ঠা করে। তাঁর নেতৃত্বেই বাঙালি জাতি অনুপ্রাণিত ও ঐক্যবদ্ধ হয়ে ঔপনিবেশিক শাসন, শোষণ তথা পাকিস্তানি আধিপত্যবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার নাগপাশ থেকে মুক্ত করেছে আমাদের স্বদেশভূমিকে বিশ্ব ইতিহাসে যে ক’জন নেতার নাম সগর্বে উচ্চারিত হয় বঙ্গবন্ধু তাঁদের অন্যতম।
যুক্তরাষ্ট্রের জর্জ ওয়াশিংটন, চীনের মাও সেতুং, ভিয়েতনামের হো চি মিন, ভারতের মহাত্মা গান্ধী, দক্ষিণ আফ্রিকার নেলসন ম্যান্ডেলা, আলজেরিয়ার আহমেদ বেন বেল্লা আর কিউবার ফিদেল ক্যাস্ট্রো রাজনীতিক হিসেবে নিজ নিজ নেতৃত্বের ক্ষেত্রে যেমন সফল, তেমনি বঙ্গবন্ধুও নিজ নেতৃত্বগুণে বাঙালি জাতির জন্য একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সফল হয়েছেন। বিশ্ব রাজনীতির ইতিহাসে অনেক রাজনৈতিক হত্যাকান্ড ঘটেছে। তবে নানা কারণে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকান্ডটি ছিল বিশ্বে আলোচিত। এই হত্যাকান্ডে স¤পৃক্ত ছিল একদল বিপথগামী সেনা কর্মকর্তা এবং সুযোগ সন্ধানী রাজনীতিক। তাদের এই ষড়যন্ত্রে দেশী-বিদেশী নানা চক্রও স¤পৃক্ত ছিল। এর প্রমাণ মেলে হত্যাকান্ডের পর খুনীদের বিদেশে আশ্রয় লাভের ঘটনায়। বিশ্বের যে কোনো রাজনৈতিক নেতা বা রাষ্ট্রপ্রধান হত্যাকান্ডের তুলনায় বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডটি ছিল নজিরবিহীন। আমরা যদি আব্রাহাম লিংকনের হত্যাকান্ড দেখি- বিল বুথ নামে এক ব্যক্তি তাকে হত্যা করেছিল। কেনেডিকে হত্যা করেছিল হারবে ওসওয়াল্ড নামের এক সন্ত্রাসী। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খানকে হত্যা করেছিল আকবর নামে এক আফগান যুবক। ভারতের জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীকে হত্যা করেছিল নাথুরাম গডসে। এসব হত্যাকান্ডের বিচারের সঙ্গে তুলনা করলে বঙ্গবন্ধুর সপরিবারের হত্যাকান্ডটি নানা কারণেই নজিরবিহীন। যাইহোক, বঙ্গবন্ধুর সাহসী নেতৃত্ব নিয়ে কয়েকটি উদাহরণ দিবো।
বাঙালি জাতীয়তাবাদ এক মহাকাব্য আর সেই মহাকাব্যের নায়ক ছিলেন বঙ্গবন্ধু। পাকিস্তানি রাষ্ট্রকাঠামোর অধীনে বাঙালি জাতীয়তাবাদের অভ্যুত্থান ঘটান বঙ্গবন্ধু। এর পরিণতিতে নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা। বাঙালি জাতীয়তাবাদের অভ্যুত্থান ও স্বাধীনতার ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর মতো সাহস আর কারোর মধ্যে দেখা যায়নি। ফাঁসির মঞ্চ থেকে তিনি একাধিকবার ফিরে এসেছেন, আপোস করেননি।
সেই কিশোর বয়সেই তিনি নিজ নেতৃত্বকে সংগঠিত করতে সাংগঠনিক দক্ষতার প্রমাণ রাখেন। ১৯৩৮ সালে গোপালগঞ্জ মহকুমা পরিদর্শনে আসা বাংলার প্রধানমন্ত্রী শেরেবাংলা একে ফজলুল হক ও খাদ্যমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর উপস্থিতিতে কিশোর মুজিব স্কুলের ভাঙা ছাদ দিয়ে পানি পড়া বন্ধে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে নিজের উপস্থিতি জানান দেন। পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক সংগ্রামের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে নেতৃত্বে আসেন আমাদের স্বাধিকার আন্দোলনের। ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর থেকেই পূর্ব পাকিস্তানকে একটি কলোনি হিসেবে বিবেচনা করত পাকিস্তানি শাসকরা। সেই থেকে এ দেশের মানুষের ওপর পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর অত্যাচার, নির্যাতনের বিরুদ্ধে যে সাহসী মহামানব দীর্ঘদিন সংগ্রাম করে এসেছেন, যৌবনের একটা দীর্ঘ সময় জেলে কাটিয়েছেন, তাঁর নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব ছিল আপোষহীন, ২১ মার্চ ১৯৭১, জোসেফ ফারলান্ড আসলেন বঙ্গবন্ধুর সাথে সাক্ষাৎ করতে। তিনি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ- এর প্রাক্তন কর্মকর্তা ও তৎকালীন পাকিস্থানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত। বঙ্গবন্ধুর কাছে তিনি মার্কিন সরকারের প্রস্তাবটি পেশ করলেন। তিনি বললেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের স্বাধীনতার ব্যাপারে সবধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত, এমনকি বিনা রক্তপাতে তারা স্বাধীনতার ব্যবস্থা করে দিবে তবে এক শর্তে- শর্তটি হল চট্টগ্রাম থেকে ১৫০ মাইল দক্ষিণে বাংলাদেশের সমুদ্র সীমার মধ্যে অবস্থিত সেন্ট মার্টিন দ্বীপটি যুক্তরাষ্ট্রের কাছে দীর্ঘ মেয়াদে ইজারা দিতে হবে।
প্রস্তাবটি বঙ্গবন্ধু শোনামাত্র শুধু প্রত্যাখ্যান করেননি ফারলান্ডকে বলেছিলেন- “মিস্টার ফারলান্ড আমি আপনাকে ভাল করেই চিনি। ইন্দোনেশিয়া ও আর্জেন্টিনার সামরিক অভ্যুত্থানের পিছনে ছিলেন তাও আমি জানি। কিন্তু মনে রাখবেন, আমি আমার দেশকে পাকিস্তানি শেয়ালের হাত থেকে মুক্ত করে আমেরিকান বাঘদের হাতে তুলে দিতে পারিনা। আপনাদের এ ধরনের শর্ত আমার কাছে কখনোই গ্রহণযোগ্য হবেনা, হতেও পারেনা”।
এই হচ্ছেন আমাদের বঙ্গবন্ধু, হিমালয়ের মত উচ্চ আর ই¯পাতের মত কঠিন ছিল তাঁর নেতৃত্ব। সাহসী সিদ্ধান্তের জন্য জন্ম দিতে পেরেছিলেন একটি স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশ। আমাদের দিয়ে গেছেন লাল সবুজের পতাকা, একটি জাতীয় সংগীত। বাঙালি জাতীয়তাবাদ এক মহাকাব্য আর সেই মহাকাব্যের নায়ক ছিলেন বঙ্গবন্ধু। পাকিস্তানি রাষ্ট্রকাঠামোর অধীনে বাঙালি জাতীয়তাবাদের অভ্যুত্থান ঘটান বঙ্গবন্ধু। এর পরিণতিতে নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা। বাঙালি জাতীয়তাবাদের অভ্যুত্থান ও স্বাধীনতার ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর মতো সাহস আর কারোর মধ্যে দেখা যায়নি। ফাঁসির মঞ্চ থেকে তিনি একাধিকবার ফিরে এসেছেন, আপোষ করেননি। ১৮টি বুলেটে বিদ্ধ হয়েছিলেন আমার জাতির জনক তারপরও একটি বারের মত মাথানত করেননি। জয়বাংলা বলে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছেন। তাই জীবিত বঙ্গবন্ধুর চেয়ে মৃত বঙ্গবন্ধু অনেক শক্তিশালী।
[লেখক: স্কুল ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কেন্দ্রীয় সংসদ]

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com