স্টাফ রিপোর্টার ::
সরকারের বেধে দেয়া মূল্যে গরুর মাংস বিক্রিতে অপারগতা জানিয়ে মাংস বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। নির্ধারিত মূল্যে মাংস বিক্রি না করে সুনামগঞ্জ জেলা শহর ও শহরতলিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালন করছে মাংস বাজার সমবায় সমিতি। শনিবার সকাল থেকে এই কর্মবিরতি পালন করছেন তারা।
মাংস ব্যবসায়ীরা জানান, স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭০০ টাকা মূল্য নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। তবে ব্যবসায়ীরা জেলা প্রশাসকের সাথে দেখা করে কিছুটা বেশি মূল্যে বিক্রি করার অনুমতি প্রার্থনা করেন। পবিত্র রমজান মাসে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতা সহজ করতে সরকারের যৌক্তিক এই মূল্যে মাংস বিক্রি করতে ব্যবসায়ীদের নির্দেশনা প্রদান করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী।
তবে সরকারের বেধে দেয়া মূল্যে মাংস বিক্রিতে অপারগতা প্রকাশ করে শনিবার সকাল থেকে গরুর মাংস বিক্রি বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, বাজারে গরুর দাম বেশি হওয়ায় নির্ধারিত মূল্য মাংস বিক্রি করে শ্রমিক ব্যয়, দোকান খরচ, পরিবহনসহ যাবতীয় খরচ মিটিয়ে মুনাফা পাচ্ছেননা তারা। তাই নির্ধারিত মূল্য বৃদ্ধি না করা হলে অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত মাংস বিক্রি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
মাংস বাজার সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক লুৎফুর রহমান বলেন, সরকার প্রতিকেজি মাংস ৭০০ টাকায় বিক্রি করার জন্য মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন। বাজারে গরুর দাম বেশি। এই দামে মাংস বিক্রি করলে আমাদের মুনাফা থাকেনা। গরু প্রতি ৫-১০ হাজার ঘাটতি পড়ে। এভাবে ব্যবসা করা যায় না। কেজি প্রতি ৫০ টাকা বাড়ানো না হলে আমরা কেউই মাংস বিক্রি করবো না।
এদিকে মাংস ব্যবসায়ীদের এমন কর্মবিরতি পালনে বিপাকে পড়েছে সাধারণ ক্রেতারা। অনেকে মাংস বাজারে এসে মাংস না পেয়ে খালি হাতে ফিরেছেন। ব্যবসায়ীদের এমন আকস্মিক সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ ক্রেতারা।
শহরের আরপিননগরের বাসিন্দা বেণু মিয়া বলেন, আমি বাজারে মাংস কেনার জন্যে আসছিলাম। এসে দেখি হঠাৎ মাংস বিক্রি বন্ধ। বাসায় মেহমান আসবে। এখন কি করবো বুঝতে পারছিনা। এখন পোল্ট্রি মোরগ কেনা ছাড়া উপায় নাই।
সুহেল মিয়া নামের আরেক ক্রেতা বলেন, সরকার মাংসের মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন। তারা এই মূল্য মানতে চায় না। ব্যবসায়ীদের এমন সিদ্ধান্ত একধরনের সিন্ডিকেটের অংশ। তারা মানুষকে বিপাকে ফেলে স্বার্থ উদ্ধার করতে চায়।
অপরদিকে মাংস ব্যবসায়ীদের দাবির বিষয়টি যৌক্তিক নয় বলে জানিয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, সরকার যে মূল্য নির্ধারণ করেছে সেই দামে মাংস বিক্রি করতে হবে। ব্যবসায়ীরা কোনো আলোচনা না করেই কর্মবিরতি পালন করেছেন। তবে ব্যবসায়ীরা যদি তাদের দাবি নিয়ে আমার কাছে আসে তাহলে বিষয়টি নিয়ে কথা হতে পারে।