স্টাফ রিপোর্টার ::
দোয়ারাবাজারে এক কলেজ ছাত্রীকে (১৮) ধর্ষণের পর শ্বাসরুদ্ধ করে খুন করেছে লিটন আহমদ নামের বখাটে যুবক। সোমবার রাতে দোয়ারাবাজার উপজেলার
পান্ডারগাঁও ইউনিয়নের পান্ডারগাঁও গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর মঙ্গলবার সকালে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঘাতক ধর্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নিহত মেয়েটি দোয়ারাবাজার ডিগ্রী কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী ছিল। ধর্ষক লিটন আহমদ (২০) সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার বল্লভপুর গ্রামের খলিল আহমেদের ছেলে। তবে সে দীর্ঘদিন ধরে পান্ডারগাঁও গ্রামে বসবাস করছিল।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, সোমবার সন্ধ্যার পর বিদ্যুৎ ছিল না গ্রামটিতে। এসময় মেয়েটির মা-বাবা বাড়িতে ছিলেন না। তার বাবা ও তার ছোট ভাই বাজারে ছিলেন। তার মা ছিলেন বাড়ির বাইরে। এই সুযোগে বখাটে লিটন বাড়িতে ঢুকে মেয়েটিকে প্রথমে ধর্ষণ করে। পরে ওড়না দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখে। পালিয়ে যাওয়ার সময় মেয়েটির বাবার মোবাইল ফোনের সিম খোলে নিয়ে যায়। রাত সাড়ে ৮টায় মেয়েটির ছোটভাই বাড়িতে গিয়ে দরজা লাগানো দেখে ডাকাডাকি করে টিনের বেড়ার ছিদ্র দিয়ে তার বোনের লাশ দেখতে পায়। পরে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। মঙ্গলবার ভোরে একই এলাকার দশনলি মোকাম এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ লিটনকে গ্রেফতার করে।
এদিকে মঙ্গলবার বিকেলে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ এহসান শাহ জরুরি সংবাদ সম্মেলন বলেন, লিটন ও মেয়েটির মধ্যে পূর্ব পরিচয় ছিল। লিটন সোমবার রাতে মেয়েটির বসতঘর ফাঁকা পেয়ে ভেতর ঢুকে প্রথমে তাকে ধর্ষণ করে, পরে তাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখে। যাতে সবাই মনে করতো মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু প্রাথমিক তদন্তেই মনে হয়েছে তাকে ধর্ষণ করার পর হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
ঘটনার ৮ ঘণ্টার মধ্যেই আসামিকে গ্রেফতারের বিষয়ে পুলিশ সুপার মো. এহসান শাহ জানান, ঘটনার পর থেকেই আমাদের পুলিশের টিম অনুসন্ধানে নেমে যায়। অভিযোগে মেয়েটির বাবা তাদের বাসার সাধারণ মোবাইল সেটসহ সিম না পাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ্য করলে আমরা ডিজিটাল ডিভাইসের ব্যবহারের মাধ্যমে অনুসন্ধান চালিয়ে মঙ্গলবার ভোরে লিটনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। তার কাছ থেকে মেয়েটির বাবার মোবাইল ফোনের সিমটি উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে লিটন ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার কথা স্বীকার করেছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) রাজন কুমার দাস বলেন, মেয়েটির নাকে-মুখে রক্ত ছিল। মরদেহ খাটের খুঁটিতে এমনভাবে রশি দিয়ে ঝুলানো ছিল, যে এভাবে কেউ ফাঁস লাগতে পারে না। পুলিশের সন্দেহ হয় যে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। রাতেই মামলা নেওয়া হয়। প্রযুক্তির সহায়তায় মঙ্গলবার ভোরেই খুনি লিটনকে গ্রেপ্তার করা হয়।