স্টাফ রিপোর্টার ::
পারিবারিক কলহের জেরে স্বামী পরিকল্পিতভাবে স্ত্রীকে খুন করেছে। গত বুধবার (১ মে) রাতে সুনামগঞ্জ শহরতলির হালুয়ারঘাট এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। এই হত্যাকা-ে জড়িত স্বামী রহমত আলীকে (২৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সে সুনামগঞ্জ সদর থানার বেরীগাঁও গ্রামের মৃত আব্দুল মনাফের পুত্র। নিহত সুমা আক্তার (১৯) বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সলুকাবাদ ইউনিয়নের আদান (মথুরকান্দি) গ্রামের মৃত গোলাপ মিয়ার কন্যা ছিলেন। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন সুমা আক্তারের মা শাহেনা আক্তার।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজন কুমার দাস জানান, আসামি রহমত আলী (২৫) পেশায় একজন ব্যাটারিচালিত অটোরিকসা চালক। অনুমান এক বছর পূর্বে চট্টগ্রামে গার্মেন্টেসে চাকুরিরত অবস্থায় রহমত আলীর সাথে সুমা আক্তারের পরিচয় হয়। পরবর্তীতে তারা স্বেচ্ছায় বিয়ে করে। সুমা আক্তার আসামি রহমত আলীর দ্বিতীয় স্ত্রী ছিলেন। বিয়ের পর হতে তাদের মধ্যে পারিবারিক বিষয়াদি নিয়া মনোমালিন্য ও ঝগড়া বিবাদ চলতে থাকে। প্রায় ৩/৪ মাস পূর্বে সুমা আক্তার ও রহমত আলী চট্টগ্রাম থেকে সুনামগঞ্জে আসে এবং সুনামগঞ্জ শহরের নবীনগর এলাকায় মুকুল মাস্টারের কলোনীতে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করা শুরু করে। তাদের মধ্যে প্রতিনিয়ত ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকতো।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজন কুমার দাস আরও জানান, মামলার বাদী মেয়ের মা শাহেনা আক্তার তার মেয়ের সুখ শান্তির কথা বিবেচনা করে তাদের মধ্যে একাধিকবার আপোষ মীমাংসা করে দেন। তারপরও আসামি রহমত আলী স্ত্রীকে প্রায়ই মারধর করতো। গত ১ মে রাত অনুমান সাড়ে ১১টায় সে তার স্ত্রীকে খুন করে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রহমত আলী জানায়, গত ১ মে বুধবার রাত অনুমান সাড়ে ১১টায় সে তার স্ত্রী সুমা আক্তারকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে কুরবাননগর ইউনিয়নের অন্তর্গত নবীনগর এলাকায় সুরমা নদীর পূর্ব পাড় হালুয়ারঘাটে জালাল মিয়ার ক্রাশার মিল সংলগ্ন নবীনগরচর নামক নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে লোহার রড দিয়া সুমা আক্তারের মাথায় বারি দেয় ও ধারালো ছুরি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি আঘাত করে খুন করে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজন কুমার দাস বলেন, পরবর্তীতে এসআই মো. উজ্জ্বল মিয়া সঙ্গীয় নারী পুলিশসহ উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখ্যে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করেন এবং ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। মামলার আসামি রহমত আলীর দেখানো মতে ঘটনাস্থল হতে খুনের কাজে ব্যবহৃত লোহার রড ও ধারালো ছুরির ভাঙা অংশ জব্দ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ খালেদ চৌধুরী, ওসি অপারেশন ওয়ালি উল্লাহ।