1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৫:৪৮ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

আ.লীগের বিরুদ্ধে আ.লীগ

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪

জয়ন্ত সেন ::
শাল্লা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে রাজনীতির মারপ্যাঁচে পড়েছেন আওয়ামী লীগের ত্যাগী প্রার্থীরা। যদিও এবছর হলফনামায় আ.লীগ-বিএনপি সব প্রার্থীরা স্বতন্ত্র হিসেবেই পরিচিত।
শাল্লা উপজেলা আ.লীগের কোন্দলের সুযোগ নিতেই উপজেলা বিএনপির সভাপতি গনেন্দ্র চন্দ্র সরকার স্বতন্ত্রপ্রার্থী হয়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অমান্য করে। অন্যদিকে উপজেলা আ.লীগের গ্রুপিং দ্বন্দ্বে দলীয় আদর্শ, শৃঙ্খলার বাইরে গিয়ে ভোটের মাঠে বিএনপির বহিষ্কৃত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন আ.লীগের অনেক নেতাকর্মীরা। এমনই স্পষ্ট কথা বললেন উপজেলা কৃষকলীগের আহ্বায়ক রণজিৎ কুমার দাস। তিনি নিজেও কাজ করছেন সদ্য উপজেলা বিএনপির সভাপতি থেকে বহিষ্কৃত নেতা গনেন্দ্র চন্দ্র সরকারের আনারস প্রতীকের পক্ষে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের বেশিরভাগ নেতাকর্মীই আনারসের পক্ষে। আ.লীগের সভাপতি, সাধারণ স¤পাদকও আনারসের পক্ষে। তিনি আরও বলেন, গনেন্দ্র চন্দ্র সরকার স্বতন্ত্র প্রার্থী। এখানে ‘আ.লীগ-বিএনপি নাই’ বলে যুক্তি তার।
সরেজমিনে দেখা যায়, এবছর উপজেলা নির্বাচনে উপজেলা আ.লীগের নেতাকর্মীরা দু’টি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ছেন। একটি এমপি ড. জয়া সেনগুপ্তের পক্ষে অন্যটি জাতীয় নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ (আল আমিনের) পক্ষে কাজ করছেন।
না প্রকাশ না করার শর্তে একজন সচেতন ভোটার বলেন, উপজেলায় আওয়ামী লীগের ভোটার অনেক বেশি। কিন্তু শাল্লার রাজনীতি এখন বড়ই বিচিত্ররূপ ধারণ করছে। তলেতলে অ্যাডভোকেট অবনী মোহন দাসকে পরাজিত করতে মাঠে সক্রিয় রয়েছে আওয়ামী লীগেরই লোকজন। কৃষকলীগের আহ্বায়ক রণজিৎ কুমার দাসের কথাটা একেবারে উড়িয়ে দেয়া যায় না। যদি আ.লীগ আনারসের পক্ষে কাজ না করে তাহলে তিনি একথা কেনো বলবেন। এখানে আওয়ামী লীগই আওয়ামী লীগের শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে। দিনের বেলায় বলা হয়, দিপু দাশের মোটরসাইকেলে ভোট দিতে আর রাতে বলা হয় গনেন্দ্র চন্দ্র সরকারের আনারস প্রতীকে ভোট দিতে। এতে ভোটাররা বিভ্রান্ত হচ্ছে। তবে শেষ পর্যন্ত ভোটাররা যোগ্য একজন প্রার্থী বেঁচে নিবেন বলে বিশ্বাস করেন তিনি।
দলের সিদ্ধান্তকে অমান্য করে শাল্লা উপজেলা বিএনপির সভাপতি গনেন্দ্র চন্দ্র সরকার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় গত ২৬ এপ্রিল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি’র) সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে গনেন্দ্র চন্দ্র দাস ওরফে সরকারকে শাল্লা উপজেলা বিএনপি’র সভাপতির পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। তবুও নির্বাচনী মাঠে আনারস প্রতীকে লড়াই করতে মরিয়া বিএনপির বহিষ্কৃত সভাপতি গনেন্দ্র চন্দ্র সরকার। তার বিপরীতে সুনামগঞ্জ জেলা আ.লীগের সাবেক সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট অবনী মোহন দাস ঘোড়া প্রতীক নিয়ে রয়েছেন নির্বাচনী লড়াইয়ের মাঠে। কিন্তু আ.লীগের এই সাবেক সহ-সভাপতি অবনী মোহন দাসের ঘোড়া প্রতীকের পক্ষে উপজেলা আ.লীগের সভাপতি-সাধারণ স¤পাদককে দেখা যায়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষকলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক বিকাশ রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, বিএনপির বহিষ্কৃত সভাপতি গনেন্দ্র চন্দ্র সরকারের পক্ষে কৃষকলীগ কেনো কাজ করবে – বিষয়টি নিয়ে আমরা শীঘ্রই বসবো। কেউ দলীয় আদর্শ, শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজ করলে উপজেলা কমিটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবে।
উপজেলা আ.লীগের দপ্তর স¤পাদক অরিন্দম চৌধুরী বলেন, শুনেছি শাসখাই বাজারে বিএনপির বহিষ্কৃত সভাপতি গনেন্দ্র চন্দ্র সরকারের আনারস প্রতীকের পক্ষে একটি চায়ের দোকান উদ্বোধন করেছেন কৃষকলীগের আহ্বায়ক রণজিৎ কুমার দাস। বিষয়টি আমাদের জন্য লজ্জার। আর আ.লীগের বেশিরভাগ নেতাকর্মী বিএনপির প্রার্থী গনেন্দ্র চন্দ্র সরকারের পক্ষে এই কথা বলার সাহস কোথা থেকে পেলেন তিনি। এটা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের শামিল।
আ.লীগের যুগ্ম স¤পাদক এমদাদুল হক বলেন, যারা আগুনসন্ত্রাস নিয়ে খেলে সেই দলের একজন প্রার্থীর পক্ষে উপজেলা আ.লীগ কখনও কাজ করতে পারে না। যদি কেউ বলে তাহলে বুঝতে হবে তিনি আ.লীগের কেউ নয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা আ.লীগের সাধারণ স¤পাদক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ (আল আমিন) বলেন, এটি সঠিক নয়। আমরা দিপু রঞ্জন দাশের সাথে। কৃষকলীগের দায়িত্বশীল কেউ একথা বলতে পারেন না। বিএনপি জাতীয় নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় আমি ফেলই করলাম।
আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুস ছাত্তার মিয়া বলেন, আওয়ামী লীগের কেউ তার সভায় বক্তব্য দিতে দেখেছেন? এটি রণজিৎ কুমার দাসের ব্যক্তিগত মতামত বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ জেলা কৃষকলীগের আহ্বায়ক আব্দুল কাদির মিয়া বলেন, এখানে তো দলীয় কোনো পোস্ট নাই। নৌকার কোনো প্রার্থী নাই আর বিএনপি তো নির্বাচনেই আসে নাই। এনিয়ে আর মাতামাতি করতে চান না বলে জানান তিনি।
সুনামগঞ্জ জেলা আ.লীগের সাধারণ স¤পাদক নোমান বখত পলিন বলেন, শাল্লা উপজেলা কৃষকলীগের আহ্বায়ক স¤পর্কে আমি বলতে পারব না। কৃষকলীগ বলতে পারবেন। উপজেলা নির্বাচনে এবার দলীয় কোনো প্রতীক নেই। তবে আমাদের মূল লক্ষ্য স্বাধীনতাবিরোধীদের পক্ষ নেয়া যাবে না। তাদের ক্ষমতায়ও আসতে দিবেন না বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ জেলা আ.লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নূরুল হুদা মুকুট বলেন, উপজেলা কৃষকলীগের আহ্বায়ক অবশ্যই একথা বলতে পারেন না। তার উচিত ছিলো উপজেলা আ.লীগের সভাপতির সাথে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া। কিন্তু তাকে ইগনোর করে এমন কথা বলতে পারেন না বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন ৪জন। তাদের মধ্যে সুনামগঞ্জ জেলা আ.লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট অবনী মোহন দাস ঘোড়া প্রতীক, উপজেলা বিএনপির সদ্য বহিষ্কৃত সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গনেন্দ্র চন্দ্র সরকার আনারস, অ্যাডভোকেট দিপু রঞ্জন দাশ মোটরসাইকেল ও এস.এম শামীম দোয়াত-কলম প্রতীকে ভোটের মাঠে প্রচারণা রয়েছেন।
উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে ভোটার রয়েছে ৯১,৩২৭জন। এরমধ্যে ৪৬,৯৭৯ জন পুরুষ ভোটার, নারী ভোটার রয়েছে ৪৬, ১৪৮জন। ৮ মে প্রথমধাপে উপজেলার ৩৭টি কেন্দ্রে ভোট অনুষ্ঠিত হবে।

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com