রাজন চন্দ ::
হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের কাজে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে তাহিরপুর উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও বাঁধ নির্মাণ কাজের সদস্য সচিব মনির হোসেনের বিরুদ্ধে।
অভিযোগকারী দাবি করছেন, চলতি মৌসুমে হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের কাজে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওই কর্মকর্তা নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়েছেন। এর প্রতিকার চেয়ে ও দুর্নীতির বিষয়গুলো অধিকতর তদন্ত করে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশন সিলেটে একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। দুদকে এ অভিযোগটি করেছেন তাহিরপুর উপজেলার রতনশ্রী গ্রামের বাসিন্দা তানজিম হাসান সোহাগ। তিনি মাটিয়ান হাওরের ৩৯ নম্বর ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজের (পিআইসি) সভাপতি। এ বছর ৩৯ নম্বর পিআইসিতে বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ২১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।
অভিযোগে তানজিম হাসান বলেছেন, প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী প্রথম দিকের বরাদ্দের ৪ লাখ ৮২ হাজার টাকা পেয়ে বাঁধে মাটি ভরাটের কাজ শুরু করি। পরে দ্বিতীয় ধাপে বরাদ্দের টাকা আনতে গেলে উপ-সহকারী মনির হোসেন কাজের অগ্রগতি ভালো না বলে ভয়ভীতি দেখান এবং ঘুষ দাবি করেন। একপর্যায়ে প্রকল্পের বরাদ্দের অর্থ ছাড়াতে বাধ্য হয়ে তাকে ঘুষ দিতে হয়েছে। মোট বরাদ্দের ২১ লাখ টাকার মধ্যে দুই ধাপে ১২ লাখ টাকা পাওয়া গেছে। এখন বাঁধের কাজ স¤পূর্ণ করা হলেও প্রকল্পের বকেয়া টাকা ছাড় দিতে গড়িমসি করছেন তিনি। তাছাড়া প্রকল্পের কাজ ঠিকমতো হয়নি বলে হুমকি দিচ্ছেন এবং বরাদ্দের বকেয়া টাকা পাবো না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।
এ নিয়ে উপ-সহকারী প্রকৌশলী মনির হোসেন বলেন, আমার বিরুদ্ধে পিআইসি সভাপতিদের অভিযোগের শেষ নাই। এসব অভিযোগ শুনতে শুনতে আমি অভ্যস্ত হয়ে গেছি। হাওরে বাঁধ নির্মাণে মূলত মাটি ভরাটের কাজটা আমি তদারকি করি। এস্টিমেট অনুযায়ী যেটুকু কাজ হয় তা সার্ভেয়ার প্রতিবেদনে দেয়, সে অনুযায়ী আমি বরাদ্দের অর্থ ছাড় দেই। তিনি আরও বলেন, অভিযোগকারীরা প্রকল্পের স¤পূর্ণ কাজ না করেই পুরো বিল চাচ্ছেন। তাদের কথামতো টাকা দিচ্ছি না বলেই আমার বিরুদ্ধে এমন মিথ্যা অভিযোগে আনা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার বলেন, অভিযোগ যেহেতু দুদকে করা হয়েছে তারা তাদের মতো করে বিষয়টি দেখবেন। আমাদের কাছে কেউ এমন অভিযোগ করলে বিষয়টিতে সে অনুযায়ী তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক জাবেদ হাবিব বলেন, অভিযোগ হাতে পেলে এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।