1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৭:৩৪ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

পশ্চিম বাংলায় লোকসভা নির্বাচন উপলক্ষে নানা বদল বামফ্রন্টে : কামরুল হাসান

  • আপডেট সময় বুধবার, ৬ মার্চ, ২০২৪

২০১৬ আর ২০২১ এর মাঝে ছিল ২০১৯ সালের ভারতীয় লোকসভা নির্বাচন। সেই ভোটে পশ্চিমবঙ্গের ৪২ টি আসনের মধ্যে ২২টি জিতেছিল তৃণমূল। ১৮ টি আসন জেতে বিজেপি। যাকে বলে ‘কাঁটো কা টক্কর’! কংগ্রেস পায় মাত্র ২ টি আসন। পশ্চিমবাংলায় একসময়ের পরাক্রমশালী বামরা কোন আসনই পায়নি। সিপিআইএম মোট ভোটের মাত্র ৬.৩% পেয়েছিল। এখানে মনে রাখা দরকার, বাংলায় সেবার বিজেপি যে ১৮ টি সিট পেয়েছিল তার মধ্যে ১৩ টি আসনে গড়ে দেড় লক্ষ করে ভোট ছিল বামেদের।
তিন বছর আগের বিধানসভা ভোটে বামফ্রন্ট পেয়েছিল প্রায় ২৬% ভোট। বিজেপির ভোট তখন ছিল ১০.১৬%। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বামেদের যে ১৫% ভোট ক্ষয় হয়েছে, তার সবটাই ঘরে তুলেছিল বিজেপি। বিধানসভার পরে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনেও বাম ভোট কমে এসেছিল প্রায় ১৬%-এ। শুধু বাংলায় নয়, ত্রিপুরাতেও প্রাসঙ্গিকতা হারাতে থাকে বামেরা। এখনও একমাত্র ব্যাতিক্রম কেরলা।
এবার লোকসভা নির্বাচনে কীভাবে বামপন্থীদের সমর্থনে যাওয়া ভোট বিজেপির মতো সাম্প্রদায়িক শক্তির হাত শক্ত করল সেই সেই প্রশ্ন সামনে আসছে। রাজ্যে তৃণমূলের ‘অত্যাচার’ থেকে মুক্তির যে ধুয়ো তুলেছিল বিজেপি, সেই এজেন্ডা খানিক কাজ করেছিল। কংগ্রেসের সঙ্গে জোট শেষ মুহূর্তে ভেস্তে যাওয়াও একটা বড় ফ্যাক্টর ছিল। আর গোটা রাজ্যবাসীর মনেই বামেদের নিষ্ক্রিয়তা এক বড় প্রভাব ফেলেছিল। সাংগঠনিক শক্তি হিসেবে বাংলাকে ভরসা দিতে পারেননি বামেরা। গ্রহণযোগ্য কোনও বিকল্প না থাকায় সংখ্যালঘুদের ভোটের বড় অংশ বাম ছেড়ে তৃণমূলের দিকে চলে যায়। অবস্থা এমনই ছিল যে যাদবপুরে বিকাশ ভট্টাচার্য ছাড়া আর প্রায় কোনও বাম প্রার্থীই জামানত রক্ষা করার জায়গাতেও যেতে পারেননি।
২০১৯ সালের নির্বাচনে বামের ভোট রামে গিয়ে তৃণমূলের ভোট কমানোর খেলা হয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এবার বামের ভোট রামে যাওয়া ঠেকানোই সবচেয়ে বড় লক্ষ্য হিসাবে নিচ্ছেন বাম নেতারা। হারুক বা জিতুক নিজেদের ভোট নিজেদেরই পকেটে ধরে রাখাই এবার তাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এরই মধ্যে তারা দলীয় কর্মক-ে নানা পরিবর্তন এনেছে। বুড়োদের দল বলে পরিচিত বামফ্রন্টে এখন নতুন মুখের ভিড়। ২০২০ অর্থাৎ কোভিড পর্বে সারাবাংলা জুড়ে রেড ভলান্টিয়ার্স যেভাবে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছিল তাতে অনেকেই আশা করেছিলেন ছন্দে ফিরছে বামেরা।
অবশ্য ২০২১-এর লোকসভা ভোটে ‘দরকার’ এর সিপিএমকে শেষ পর্যন্ত সরকারে চায়নি মানুষ। কিন্তু এর পরেও বামদের রেড ভলান্টিয়ার্স, কমিউনিটি কিচেন এবং ভাতের লড়াইকে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে। কোভিড পরবর্তী সময়ে যতবার পথে নামার আন্দোলন হয়েছে, তাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন তরুণ বাম নেতারাই। বামফ্রন্টের সামনের সারিতে উঠে এসেছেন, মীনাক্ষি মুখোপাধ্যায়, প্রতীকূর রহমান, সৃজন ভট্টাচার্য্য, দীপ্সিতা ধর, কলতান ভট্টাচার্য, ময়ূখ বিশ্বাস, পৃথা তা-এর মতো তরুণ তুর্কিরা।
২০২১ সালের ভরাডুবির পরেই দলীয় নেতৃত্বের মুখ নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করে বামেরা। ২০২২ সালে সিপিএম-এর নতুন রাজ্য স¤পাদক ঘোষণা করা হয় মহম্মদ সেলিমকে। রাজ্য কমিটি থেকে একে একে সরে দাঁড়ান সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসু, রবীন দেব, মৃদুল দে, নেপালদেব ভট্টাচার্য, সুভাষ মুখোপাধ্যায়ও। তাঁদের জায়গায় নতুন রাজ্য কমিটিতে আসেন শতরূপ ঘোষ, মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, মধুজা সেন রায়, গার্গী চট্টোপাধ্যায়, অনাদি সাউ, দেবলীনা হেমব্রম, কনীনিকা ঘোষের মতো নেতৃত্ব।
এখন নির্বাচনের গোটা পশ্চিমবঙ্গে কোটি টাকার প্রশ্ন, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে কি তরুণ ব্রিগেড বামেদের প্রাসঙ্গিক করে তুলতে পারবেন? ইন্ডিয়া জোটের শরিক হিসেবে কংগ্রেসের সঙ্গে রইলেও রাজ্যের তৃণমূলের সঙ্গে তো সমঝোতা হয়নি। কিন্তু কংগ্রেস আইএসএফের সঙ্গে জোট হলে বড় অংশের ভোট এবার বিজেপির হাতছাড়া হয়ে বামেদের শিবিরে ঢুকতেও পারে। আর জোট না হলে মরণপণ লড়াই করতে কি পারবে সিপিএম?
লেখক: গবেষণা ও বিশ্লেষক।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com