গত রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪) দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে কাবিটা স্কীম প্রণয়ন, বাস্তবায়ন ও মনিটরিং জেলা কমিটির সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী জানিয়েছেন, সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলার হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ চলমান আছে, যে-গুলি আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ হওয়ার কথা। অনেক জায়গাতেই মাটি ভরাট কাজ চলছে। তবে কমপেকশন ঠিকমতো হচ্ছে না, স্লোভও ঠিক নেই। তিনি বিভিন্ন ক্লোজারগুলো পরিদর্শন করার জন্য আলাদাভাবে এডিসিদের সমন্বয়ে বিশেষ কমিটি করে দিয়েছেন। আগে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে পরে সমাধান করতে হবে, যেগুলোর কাজ বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেগুলো আগে করারও নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, হাওরের জীববৈচিত্র্য বজায় রেখেই বাঁধের কাজ স¤পন্ন করতে হবে এবং সেইসঙ্গে ভবিষ্যতে কিভাবে স্থায়ী সমাধান করা যায় সেটি চিন্তা করতে হবে এখনই। পিআইসির দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পরিশোধ করলে কাজের গতি আরও বৃদ্ধি পাবে। তাই বিল পরিশোধ করে দেওয়ার কথাও বলেছেন।
আমরা তাঁকে তাঁর গৃহীত কার্যক্রমের জন্য সাধুবাদ জানাই এবং আশা করি তিনি ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হাওররক্ষা বাঁধের সকল কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন।
তিনি স্থায়ী সমাধানের কথা বলেছেন, আমরা তাঁর এই প্রস্তাবনাকে সমর্থন করি। অকাল বন্যায় ফসলহানির আক্রমণ থেকে হাওরের মানুষ রক্ষা পেতে চান। কিন্তু আমরা মনে করি যে, হাওরের ফসল রক্ষার খাতিরে বর্তমানে প্রচলিত বা প্রতিষ্ঠিত নীতিপদ্ধতির অধীনে পরিব্যাপ্ত কাঠামোগত সহিংসতার অধিপত্যধর্মী ব্যবস্থাপনার ভিত্তিতে প্রত্যাশিত সমাধান কীছুতেই সম্ভব নয়। ‘হাওরের জীববৈচিত্র্য বজায় রেখেই বাঁধের কাজ স¤পন্ন’ এবং সেইসঙ্গে হাওরসমস্যার ‘ভবিষ্যৎ স্থায়ী সমাধান’ করতে হলে ‘পাউবো’সহ পিআইসি ও অন্যান্য সমাজ-স্বীকৃত রাজনীতিক মড়লদের প্রভাব থেকে হাওররক্ষা প্রকল্পকে মুক্ত করতে হবে। কারণ ইতোমধ্যে এই প্রকল্পটিকে লাভজনক বাণিজ্যিক প্রকল্পে পর্যবসিত করে তোলা হয়েছে, এবং প্রকারান্তরে আমরা আমাদের ভাটি অঞ্চলের নদী-নালা-খাল-বিল ভরাট করে তোলে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে দিয়ে তথাকথিত অকাল বন্যাকে নিমন্ত্রণ করে আনছি, স্থায়ীভাবে প্রতিরোধ করতে পারছি না। এর বিপরীতে আমাদের উচিত হাওররক্ষাবাঁধের প্রকল্প অব্যাহত রেখে বিল-বাঁদাড়, নদী-নলা ভরাটকরণের প্রক্রিয়া বাদ দিয়ে সে-গুলিকে (বিল-বাঁদাড়-নদী-নলাগুলোকে) যথাসম্ভব খনন করে উজান থেকে নেমে আসা পানি সহজে ও দ্রুত দক্ষিণের সমুদ্রে চলে যাওয়ার পথ করে দেওয়া। এর কোনও বিকল্প নেই। পরিশেষে একটাই কথা, উজান থেকে নেমে আসা পানির বন্ধ হওয়া পথ খোলে দিন।