পবিত্র রমজান মাসে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। কিন্তু এরপরও যেন অসাধু ব্যবসায়ীদের থামানো যাচ্ছে না। নানা অজুহাতে তারা নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি অব্যাহত রেখেছে। এর ফলে সাধারণ মানুষ অস্বস্তির মধ্যে রয়েছে। এদিকে, পবিত্র রমজান মাসকে টার্গেট করে চিনি, খেজুর, আলু,
পেঁয়াজ, চাল ও ভোজ্যতেল আগের তুলনায় বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
রমজানের বাজার নিয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম জানিয়েছেন, নিত্যপণ্যের বাজারে যাতে কোনো ধরনের সরবরাহ ঘাটতি দেখা না দেয়, সেটি নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি। বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে দামও নিয়ন্ত্রণে থাকবে। রমজানে প্রয়োজনীয় চিনি, তেল, ডাল যথেষ্ট মজুত আছে। চাল মজুত আছে ১৭ লাখ টন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাজারে যে পরিমাণ পণ্য মজুত আছে তাতে রোজা সামনে রেখে জিনিসপত্রের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। তবে কারসাজি করে যদি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ানো হয়; তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। বলেন, যত বড় গ্রুপ ও কো¤পানি হোক, দামে কারসাজি হলে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বক্তব্য, রমজানে সব পণ্যেরই চাহিদা দ্বিগুণ বেড়ে যায়। এই সুযোগে মজুতদাররা সুবিধা ভোগ করে। ভোক্তা অধিকার মজুতদারদের বিরুদ্ধে এবার কঠোর ব্যবস্থা নেবে। ভোক্তা অধিকার গোডাউনগুলোতে অভিযান চালাচ্ছে।
আমরা মনে করি, জরিমানা করা বাদ দিয়ে যারা সিন্ডিকেট ও বাজার কারসাজি করছেন তাদের জেলে পাঠাতে হবে। না হলে বাজারে এ অরাজকতা থামানো যাবে না। বিগত কয়েক বছরের তথ্য ঘেঁটে দেখা গেছে, প্রতি বছর রমজান এলেই জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়। এমনকি কিছু পণ্যের দাম ক্রেতার নাগালের বাইরে চলে যায়। অসাধু ব্যবসায়ীরা যেন ওঁৎ পেতে থাকেন এ মাসের জন্য। প্রশাসনও নড়েচড়ে বসে। সরকারের পক্ষ থেকে নেয়া হয় নানা পদক্ষেপ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব পদক্ষেপ-প্রতিশ্রুতি থেকে যায় কাগজে-কলমে। বাস্তবে কার্যকর হয় না।
তবে বাজার নিয়ন্ত্রণে টিসিবির মাধ্যমে খোলাবাজারে পণ্য বিপণন, বাজার মনিটরিং ইত্যাদি যেসব পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে এগুলো যেন যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। এর বাইরে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বাজার পরিস্থিতি তদারকি অব্যাহত রাখতেই হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।