গণমাধ্যমে ইতিবাচক সংবাদপ্রতিবেদনের সঙ্গে নেতিবাচক সংবাদপ্রতিবেদন প্রকাশিত হচ্ছে। যে-কোনও গণমাধ্যম তার প্রমাণ হাজির করছে প্রতিনিয়ত। যেমন ২০৪১ সালের আগেই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হচ্ছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার এই ইতিবাচক সংবাদপ্রতিবেদনের পাশেই ছাপা হচ্ছে ‘শান্তিগঞ্জে বালুমাটি দিয়ে ফসলরক্ষাবাঁধ’, ‘রক্ষণাবেক্ষণের অভাব : সৌন্দর্য্য হারাচ্ছে তাহিরপুরের পর্যটন স্পটগুলো’ অথবা ‘কমমূল্যে বাজার ইজারা কার স্বার্থে?’ ইত্যাদি সংবাদপ্রতিবেদন এবং প্রকারান্তরে ব্যঙ্গ করছে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন ও প্রচারিত ধারণাকে। অন্যদিকে সরকার উৎখাতের রাজনীতি চলছে পুরোদমে, দুর্নীতি না কমে দিনে দিনে বাড়ছে উন্নয়নের সঙ্গে তাল রেখে এবং উন্নয়নকে টেকসই হতে দিচ্ছে না, প্রকারান্তরে কাঠামোগত সহিংসতা তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে দেশের প্রতি ইঞ্চিতে।
কেন্দ্র থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিশাল ও অধিক তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনাগুলো বাদ দিয়ে ছোট ছোট ঘটনাগুলো মানুষকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন সম্পর্কে শঙ্কিত করে তোলছে। প্রত্যন্ত কোন গ্রামের কোনও প্রসূতি যখন কম ওজনের অপুষ্ট বাচ্চা প্রসব করেন কিংবা কোনও সবজির দোকানে রাসায়নিকমিশ্রিত সবজি বিক্রি হয়, কিংবা ভেজাল মিশ্রিত খাদ্য ও ঔষধ বিক্রি হয় দেশের সর্বত্র এবং প্রশাসন সেটা ঠেকাতে পারে না, তখন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন সাধারণ মানুষের চেতনায় দিবাস্বপ্নে পর্যবসিত হয়ে ব্যর্থতার এই আশঙ্কা কেবল বাড়াতে থাকে।
বিদগ্ধমহলের ধারণা, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে এই মুহূর্তে সরকারকে প্রশাসন ও প্রশাসনের বাইরে প্রতিটি ক্ষেত্রে নির্ধারিত ও নির্দিষ্ট দায়িত্ব-কর্তব্যগুলো যথাযথভাবে নিষ্পন্ন করার নিশ্চয়তা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। ভুলে গেলে চলবে না, বাংলাভাষায় ‘যেমন কর্ম তেমন ফল’ বলে একটি কথা আছে। আমরা কেবল বলতে চাই, সরকারকে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্যসহনশীলতা দেখাতে হবে, যা ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছেন। অন্যথায় জাতিকে ব্যর্থতাকে বরণ করে নেওয়ার জন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে এবং কী হবে সে-সম্পর্কে আপাতত নীরব রইলাম, অনুমান করে নিন।