1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১২:২৩ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

হাওরপ্রকৃতিবান্ধব উন্নয়নকর্ম বাস্তবায়ন করুন

  • আপডেট সময় বুধবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০২৪

প্রসঙ্গ প্রায়শ একটি নির্দিষ্ট বৃত্তে পর্যায়ক্রমে কেবল আবর্তিত হতেই থাকে। কোনও না কোনওভাবে একটা আর একটার সঙ্গে জড়িয়ে যায়, ওতপ্রোত হয়ে পড়ে। একটাকে ছেড়ে অন্যটা আলোচনা করা যায় না। গত রোববার দিরাই উপজেলার জগদল ইউনিয়নের নগদিপুর বাজার সংলগ্ন মাঠে এক সংবর্ধনা সভায় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা, ঢাকা-১ আসনের সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমান যখন বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করেছে। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। দেশের সব এলাকায় রাস্তাঘাটের অনেক উন্নতি হয়েছে। সারাদেশে এতো উন্নয়ন হলেও এখানে এসে শুনলাম এ এলাকায় সড়ক ও রাস্তার তেমন উন্নয়ন হয়নি। আমরা যেখানে যাই সে এলাকার জনগণ স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটিসহ বড় বড় কাজের দাবি করে।” তখন হাওরাঞ্চলের অপরিহার্য উন্নয়নের প্রসঙ্গটি আসে এবং এছাড়া যখন তিনি বলেন, “এই এলাকায় সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মতো শক্তিশালী এমপি ছিলেন। বর্তমানে যিনি এমপি হয়েছেন তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ, এ জন্য আমার মনে হয় এলাকার উন্নয়ন হচ্ছে না। আমি ডিসি সাহেবের সাথে কথা বলেছি, আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলাপ করে আপনাদের হাওর এলাকার উন্নয়নে মেগা প্রকল্প নিয়ে আসবো।” তখনও উন্নয়নে একধরনের জায়মান প্রতিবন্ধকতার প্রসঙ্গ উত্থাপিত হয়।
এইসব মিলে সালমান এফ রহমান কথিত “হাওর এলাকার উন্নয়নে মেগা প্রকল্প”-এর বিষয়টি স্বাভাবিকভাবেই হাওরাঞ্চলের উন্নয়নের অভিযাত্রায় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে প্রতিপন্ন হয় এবং আমাদের পক্ষ থেকে “হাওর এলাকার উন্নয়নে মেগা প্রকল্প”- নিয়ে প্রকৃতিবান্ধব নিদের্শনা উপস্থাপনের প্রয়োজনীয়তা যুক্তিসঙ্গতভাবেই অপরিহার্যতা লাভ করে।
হাওরাঞ্চলের ভূপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের প্রধান দিক হলো জলবেষ্টিত প্রাকৃতিক প্রতিবেশ। এখানে হাওর-বাঁওড়, খাল-বিল, নদী-নালা ও ডোবা-পাগাড় ইত্যাদির সমাবেশে বিশ্ববিরল এক অন্যরকমের প্রাকৃতিক প্রতিবেশ তৈরি হয়েছে। ভুলে গেলে চলবে না, এখানে জনপদগুলোকে ঘিরে টাঙ্গুয়ার হাওরের মতো জলজপ্রাকৃতিক ছোটবড়ো অনেক হাওরের সমাবেশ ঘটেছে। এখানে এই বিশেষভাবে বিশিষ্ট জলবেষ্টিত প্রাকৃতিক প্রতিবেশের ক্ষতিসাধনে সক্ষম প্রকৃতিবিরোধী কোনও রকম উন্নয়নকর্ম বাস্তবায়িত করা সঙ্গত নয়। অর্থাৎ এখানে “হাওর এলাকার উন্নয়নে মেগা প্রকল্প” বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে রাস্তাঘাট ও বাঁধ নির্মাণের চূড়ান্ত পরিণতি একটাই, আর সেটা হলো : কালক্রমে হাওর-বাঁওড়, খাল-বিল, নদী-নালা ও ডোবা-পাগাড় ইত্যাদি প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের বিনষ্টি সাধনের নামান্তর। ফলে বিস্তৃত হাওরাঞ্চলে একটি আত্মঘাতী প্রাকৃতিক পরিবর্তন সাধিত হবে, যা হাওরাঞ্চলকে একটি জলের মরুভূমিতে পর্যবসিত করবে। ইতোমধ্যে প্রকৃতিবিরোধী বাঁধ-রাস্তা নির্মাণের কারণে এই জনপদে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ আবির্ভূত হতে শুরু করেছে। এর প্রকৃষ্ট প্রমাণ হলো বাইশের (২০২২ সালের) প্রলয়ঙ্করী বন্যা। যেটি ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম সড়কসহ অন্যান্য সড়কসঞ্জাত হাওরপ্রকৃতি ও হারওপ্রতিবেশবিরোধী প্রতিক্রিয়ার প্রত্যক্ষ ফসল।
সুতরাং সমগ্র হাওরাঞ্চলজুড়ে উদ্ভূত এবংবিধ প্রাকৃতিক বিরূপ পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের দাবি হলো : গতানুগতিকতার বাইরে গিয়ে এতোদিন চলে আসা প্রকৃতিবিরোধী উন্নয়নকর্মকা- পরিহার করে হাওরপ্রকৃতিবান্ধব উন্নয়নকর্ম বাস্তবায়নের দিকে মনোনিবেশ করতে হবে। সে-জন্য প্রথমেই প্রয়োজন নদী-নালা, খালবিল খনন করে যথাসম্ভব পূর্বাবস্থায় অর্থাৎ শত বছর আগে যেরূপ প্রাকৃতিক অবস্থায় ছিল তেমন অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে হবে, এর কোনও বিকল্প নেই। তৎসঙ্গে জলপ্রবাহপ্রতিরোধক বা স্বাভাবিক জলপ্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী রাস্তা-বাঁধ ইত্যাদি পরিহার করে জলপথে সময়োপযোগী দ্রুতগতির জলযান নির্মাণ ও প্রচলন করাই যুক্তিযুক্ত হবে বলে বিদগ্ধমহলের অভিমত। তাছাড়া বিদগ্ধমহলের কেউ কেউ মনে করেন যে, দ্রুতগতির জলযান পরিবহন প্রচলনের সঙ্গে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে এই উন্নয়ন অভিযাত্রায় সম্পৃক্ত করা সম্ভব এবং হাওরপ্রকৃতিবান্ধব উন্নয়নকর্ম বাস্তবায়নের ভেতর দিয়ে আর্থনীতিক সমৃদ্ধি নিশ্চিতকরণের উপায় হিসেবে সমগ্র হাওরাঞ্চলকে সমন্বিত করে একটি বিশাল-বিচিত্র পর্যটনবৃত্তে পর্যবসিত করা সম্ভব।

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com