গণমাধ্যমে (দৈনিক সুনামকণ্ঠ : ১ জানুয়ারি ২০২৪) প্রকাশিত একটি সংবাদের শিরোনাম, ‘১৯ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কোথাও মিলে না কাক্সিক্ষত সেবা’। বিশ্বের অন্য কোনও উন্নয়নশীল দেশেও এমন হয় কি না জানি না, যেখানে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো বানানো হয়েছে এবং স্বাস্থ্যসেবারহিত করে সে-গুলোকে অকেজো করে ফেলে রেখে প্রকারান্তরে জাতীয় সম্পদের একধরণের অপচয় প্রক্রিয়াকে আরও বিস্তৃত ও প্রসারিত করে তোলে দেশের অগ্রগতির পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হচ্ছে। তবে উন্নয়নের রাজপথের পথিক বাংলাদেশে এমন সংবাদ প্রকাশের সমাজসাংস্কৃতিক বাস্তবতা থাকতেই পারে, যেখানে স্বাস্থ্য উপকেন্দ্রগুলোকে সেবা প্রদানে অক্ষম করে রাখা হয়েছে। বলতে দ্বিধা নেই যে, এই দেশের উন্নয়ন কর্মক্রিয়ার পরিসরে অন্তর্ঘাতী অনুন্নয়ন লুকিয়ে থাকে। যেমন হাওরের ভেতর দিয়ে সড়ক তৈরি না করে হাওরের মাঝখানে একটি দর্শনীয় সেতু তৈরি করা হয় এবং সেতুটি অব্যবহৃত অবস্থায় দ-ায়মান থাকে তথাকথিত উন্নয়নের স্মারক হিসেবেÑ প্রকৃতপ্রস্তাবে যেটা উন্নয়নের নামে অনুন্নয়নের সুকৌশলী বিনির্মাণ।
বর্তমানে দেশে অচিরেই অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচন নিয়ে প্রচ- ব্যস্ততা ও উৎসাহী কার্যক্রম পরিলক্ষিত হচ্ছে। নির্বাচনের পক্ষে-বিপক্ষের পক্ষ থেকে প্রযুক্ত সৃজনশীল ইতিবাচক ও নেতিবাচক উভয়ধর্মী কর্মকা- মানুষকে অবাক করছে। ভালো করেই টের পাওয়া যাচ্ছে যে, এই দেশ মেধাবী ও সৃজনশীলদের দেশ, এই দেশের লোকেরা কাজ ও অকাজ দুটিই বেশি জানে। নির্বাচন করতে জানে আবার নির্বাচনের বিরোধিতাও করতে জানে, তা হোক উচিত অথবা অনুচিত। এখানে নির্বাচন ঠেকাতে অগ্নিসন্ত্রাসের বিবরণ পেশ করতে চাই না। বিদগ্ধ মহলের ধারণা, নির্বাচনের কাজেকর্মে প্রযুক্ত এইরূপ উচ্চমাত্রার ফলপ্রসূ মেধা, কর্মস্পৃহা, উৎসাহ ও দক্ষতা যদি স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে প্রয়োগ করা যেতো, অর্থাৎ যদি স্বাস্থ্যসেবাসংশ্লিষ্টরা আন্তরিকভাবে তৎপর হতেন, তবে দেশের তথা সুনামগঞ্জের ১৯টি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে অকেজো অবস্থা বিরাজ করতো না এবং যথাসম্ভব স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্ত হওয়া জনগণের তরফে অনায়াসে সম্ভব হতো।
১৯টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কাক্সিক্ষত স্বাস্থ্যসেবা না পাওয়ার অচলাবস্থা কারও কাম্য হতে পারে না। বিনাচিকিৎসায় একজনও নাগরিকের মৃত্যু হোক, এটা রাষ্ট্রের যেমন কাম্য নয়, তেমনি জনগণেরও। তাই সাধারণ মানুষ প্রত্যাশা করেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে অচিরেই কাক্সিক্ষত স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত করা হবে।