1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৯:২১ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

সেতু নির্মাণে কালক্ষেপণ : ৪ বছরেও নকশা চূড়ান্ত হয়নি!

  • আপডেট সময় সোমবার, ১৩ জুন, ২০২২

বিশেষ প্রতিনিধি ::
জগন্নাথপুর উপজেলার ইটাখোলা নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণে গত ১০ বছর ধরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে চিঠি চালাচালি করলেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় পড়ে সেতুটি নির্মাণে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ফলে উপজেলার ২০ গ্রামের মানুষ সেতুর অভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। সেতুটি বাস্তবায়ন নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য, পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান ৪ বার ডিও লেটার দিলেও প্রকল্পটি বাস্তবায়নে অগ্রগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে না।
জানা গেছে, ‘সিলেট বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটি জাতীয় নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় পাস হয় ২০১৭ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর। গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে গ্রামীণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন। কিন্তু প্রস্তাবিত সেতু নির্মাণে এলজিইডির বিভিন্ন দপ্তর গত ১০ বছর ধরে চিঠি চালাচালি করলেও খোদ এলজিইডির নকশা শাখার কর্মকর্তারা এতে ‘বাধা’ হয়ে দাঁড়িয়েছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্পে থাকলেও জগন্নাথপুর উপজেলার ইটাখোলা নদীর উপর প্রস্তাবিত ঐ সেতুর নকশা করতেই পার হয়েছে ৪ বছরেরও বেশি সময়। এরপরও চূড়ান্ত হয়নি নকশা। যার কারণে ভোগান্তিতে আছেন সেতুর দুই পাড়ের ২০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। এই সেতুটি নির্মাণে এরই মধ্যে ৪ বার ডিও লেটার দিয়েছেন খোদ পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। প্রকল্পের শুরুতে সিলেট এলজিইডি ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি করলেও নকশা দিতে ব্যর্থ হয়েছে এলজিইডির আগারগাঁওয়ের নকশা শাখা।
স্থানীয়দের দাবি, ইটাখোলা একটি ‘মরা নদী’। এ নদী দিয়ে তেমন কোনো বড় ধরনের নৌকা চলাচল করে না। তবে, ব্রিজটি হলে ইটখোলা নদীর উপর দিয়ে দুই এলাকার মানুষ সহসা চলাচল করতে পারবেন। সুবিধা পাবে সেতু পাড়ের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। বর্তমানে কয়েক’শ শিক্ষার্থী সেতুর অভাবে ঝুঁকি নিয়ে খেয়া নৌকায় পাড়ি দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করতে হয়।
স্থানীয়রা জানান, ব্রিজের দু’পাশের ৪ দশমিক ৭ কিলোমিটার বাইপাস রোডের ৯৫ ভাগ মাটি ভরাটের কাজও স¤পন্ন হয়েছে। এখন ব্রিজের কাজ শেষ হলেই এ রাস্তা দিয়ে সরাসরি যানবাহনে চড়ে দু’পাশের লোকজন চলাচল করতে পারবেন।
এদিকে, উপজেলার পাইলগাঁও ইউনিয়নের ইটাখোলা নদীর উপর সেতু নির্মাণে পাইলগাঁও ও সৈয়দপুর শাহারপাড়া ইউনিয়নের ২০ গ্রামের মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে ২০১২ সালে সংসদ সদস্য হিসেবে বর্তমান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ইটাখোলা নদীতে একটি সেতু নির্মাণের জন্য উদ্যোগ নিতে অনুরোধ জানান। ফলে এলজিইডি’র উপজেলা কার্যালয় সেতুটির দৈর্ঘ্য ৭০ মিটার ধরে প্রস্তাব পাঠায়। কিন্তু একনেকে সেতুর দৈর্ঘ্য ৯৬ মিটার পাস হয়। পরবর্তীতে সেতুর দৈর্ঘ্য ১০০ মিটারের ওপরে বলে প্রস্তাব দেয়া হয়।
এলজিইডি সূত্র বলছে, ১০ বছর আগে এই সেতুটির দৈর্ঘ্য ধরা হয়েছিলো ৭০ মিটার। ১০০ মিটারের নিচে কোনো ব্রিজ নির্মাণ হলে সেই ব্রিজ নির্মাণের দায়িত্ব পড়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপর। সূত্র বলছে, ১০০ মিটারের উপর সেতুটির দৈর্ঘ্য নিতে পারলে ‘প্রকল্পের ব্যয় বাড়বে, নিজেদের পকেট ভারি হবে’ এমন ভাবনা থেকে গত কয়েক বছর থেকে সেতুটির প্রস্তাবিত দৈর্ঘ্য বাড়িয়ে যাচ্ছে এলজিইডি। এদিকে, প্রস্তাবিত ব্রিজটি খোদ পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের নির্বাচনী এলাকায় হওয়ায় তিনি এ নদীকে ‘মরা নদী’ অভিহিত করে এলজিইডিকে একটি চিঠি দিয়ে খুব দ্রুত কাজ শুরুর তাগিদ দিয়েছিলেন। তবে, তাতেও কোনো কাজ হয়নি।
পাইলগাঁও ইউনিয়নের কিশোরপুর গ্রামের সন্তান, যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাংবাদিক আব্দুল করিম গণি বলেন, সেতুটি বাস্তবায়ন হলে উপজেলা সদরের সাথে আশপাশের গ্রামগুলোর হাজার হাজার মানুষের যোগাযোগ স্থাপিত হবে। ঝুঁকিমুক্ত ও উপকৃত হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে ঢাকাস্থ এলজিইডি কার্যালয়ের নকশা শাখার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শাহ আলমগীরের সঙ্গে দেখা করে ব্রিজের ডিজাইন তৈরির অনুরোধ করি এবং এলাকার সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কল্যাণে ব্রিজের কাছে বঙ্গবন্ধু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বঙ্গবন্ধু কিন্ডারগার্টেন স্কুল স্থাপনের কথা বলি। মাননীয় পরিকল্পনামন্ত্রী ও এলজিইডি সচিব মহোদয়ের এ বিষয়ে আন্তরিকতাও রয়েছে। কিন্তু প্রকৌশলী শাহ আলমগীর অদৃশ্য কারণে নানা ধরনের অজুহাত দেখিয়ে প্রকৃত ডিজাইন দিতে কালক্ষেপণ করছেন।
নদী এলাকার বাসিন্দা পাইলগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য শাহান মিয়া বলেন, সেতুটি বাস্তবায়ন হলে দুই ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ উপজেলা সদরের সাথে সড়ক যোগাযোগের আওতায় আসবে। এছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি কমবে। এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসলেও অজ্ঞাত কারণে বিলম্বিত হচ্ছে।
পাইলগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মখলুছ মিয়া দ্রুত সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে বলেন, ব্রিজটি নির্মিত হলে সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থার পাশাপাশি এলাকার জীবনযাত্রার মানও বাড়বে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলী সোহরাব হোসেন বলেন, আমি এ উপজেলায় নতুন এসেছি। তাই ইটাখোলা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের বিষয় বিস্তারিত জানা নেই। খোঁজ নিয়ে জানতে হবে।

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com