আজ ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস। স্বাধীনতার ৪৬ বছর পর এবারই প্রথম জাতীয়ভাবে পালিত হচ্ছে দিবসটি। মহান মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক আমরা বেশ ক’টি জাতীয় দিবস পালন করলেও গণহত্যা দিবস পালিত হয়নি। অথচ স্বাধীনতার প্রাক্কালে আমাদের দেশে যেভাবে পাকবাহিনী গণহত্যা করছে তা বিশ্বের কোথাও এমন ঘটনা ঘটেনি। এবার ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস ঘোষণার জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। গণহত্যা দিবস জাতীয়ভাবে পালনের মাধ্যমে প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের মর্মান্তিক ঘটনার সঙ্গে পরিচিত করার একটা ইতিহাস রচিত হল।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ‘অপারেশন সার্চলাইটে’র নামে ইতিহাসের ঘৃণ্যতম হত্যাযজ্ঞ চালায়। বাঙালির জীবনে এমন নৃশংস কালরাত আর আসেনি। ঘুমিয়ে থাকা নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ট্যাংক, কামান, মেশিনগান নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। নিরীহ, নিরপরাধ মানুষ হত্যায় মেতে উঠেছিল। বাঙালি জাতির স্বাধীনতাকে প্রতিরোধ করতে, বাঙালি জাতিকে নিশ্চিহ্ন করতে শত কৌশলের মধ্যে এই গণহত্যা ছিল পাকবাহিনীর ঘৃণ্যতম কৌশল। তাদের এই পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নিয়ে বাঙালির ওপর লাগাতার হত্যাকা- চালায়। কিন্তু বাঙালি ভুলে যায়নি সেই গণহত্যার কথা। তাই স্বাধীনতার পরপরই গণহত্যার বিচারে আইন প্রণয়ন এবং বিচারে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছিল। আজ স্বাধীনতার ৪৬ বছর পরও সে সময় ঘটে যাওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের দৃষ্টান্তও তৈরি হয়েছে।
২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস জাতীয়ভাবে পালিত হওয়ায় এই স্মরণীয় আত্মদানের ইতিহাস বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়বে। তবে এ কথা ভুলে গেলে চলবে না স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি তাদের অপকৌশলগুলোকে আরো শক্তিশালী করে নতুন নতুন ফন্দি আঁটছে। এদের থেকে আমাদের আরো সাবধান থাকতে হবে, সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের স্বাধীনতা কেবলই রাষ্ট্রীয় ঘটনা নয়, এই ঘটনা ছিল বিশ্বমানবতার নিপীড়নবিরোধী সংগ্রামের একটি ইতিহাস।