দেশের দুই তৃতীয়াংশের বেশি সড়ক দুর্ঘটনার জন্য ‘বাস ও ট্রাকের মূল আকৃতি পরিবর্তন’কে কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। দেশের ট্রাক এবং যাত্রীবাহী বাস-মিনিবাসের একটা অংশ মূল আকৃতি বা কাঠামো পরিবর্তন করে যোগাযোগ সড়কে চলাচল করছে। যা মোটরযান আইনের পরিপন্থী। মালিকরা মনগড়াভাবে এসব যানবাহন তৈরি করার ফলে দিন দিন সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েই চলছে। এ ধরনের যানবাহন বেপরোয়াভাবে সড়কে চলাচল করা ঝুঁকিপূর্ণ। সরকার এসব যানবাহন মূল আকৃতিতে ফিরিয়ে আনতে পারছে না। আবার অবৈধভাবে কাঠামোগত (আকৃতি) পরিবর্তন করা হয়েছে। এ জন্য এসব যানবাহন দুর্ঘটনার শিকারও হয় সবচেয়ে বেশি। কাঠামো পরিবর্তনের কারণে দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঝুঁকি বেশি। বিআরটি-এর হিসাবে সারাদেশে ট্রাক কাভার্ডভ্যান এবং এ ধরনের যানবাহনের সংখ্যা ১ লাখ ৬৮ হাজার ২৩০ দাঁড়িয়েছে। এসব গাড়ির সামনে পেছনে লাগানো হয়েছে অতিরিক্ত কাঠামো (বাম্পার)। আবার বডির দুই পাশে লাগানো হয় তিন কোণা বড় আকৃতির লোহার পাতের অ্যাঙ্গেল ও লোহার হুক। তাছাড়া একই সঙ্গে অতিরিক্ত মাল বোঝাই করার জন্য ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানের সামনে ও পেছনে মিলিয়ে মূল কাঠামোর (বডি) চেয়ে সাত ফুট পর্যন্ত লম্বা করা হয়েছে। আর চওড়ায় দুই ফুটের বেশি বাড়ানো হয়েছে। বিশেষ করে ট্রাক কাভার্ড ভ্যানের চালকের কেবিনের চেয়ে মালামাল বহনের অংশ চওড়া করা হয়েছে। এর মাধ্যমে তিনগুণ পর্যন্ত বেশি মালামাল বহন করা হচ্ছে।
দেশে বাস মিনিবাস আছে প্রায় ৬৮ হাজার। অধিকাংশ বাস মিনিবাস লম্বা করে আসন বাড়ানো হয়েছে এবং বাম্পার লাগানো হয়েছে। মোটরযান আইন অনুসারে মূল কাঠামো বা আকৃতি পরিবর্তন ও পরিবর্ধন অবৈধ। সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি বেড়ে যাওয়ায় এসব বিষয়ে আলোচনায় এসেছে বাস, ট্রাক মূল কাঠামোয় ফিরিয়ে আনতে সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেও বাস্তবায়নে ব্যর্থ হচ্ছে বার বার।
যে হারে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়ে চলেছে তা প্রতিরোধের জন্য জরুরিভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে সরকারকে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।