বিশেষ প্রতিনিধি ::
আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের সমর্থন পেলেন জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন। শুক্রবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বোর্ডের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেন দলটির সাধারণ স¤পাদক ওবায়দুল কাদের। তালিকায় ব্যারিস্টার ইমনের নাম উঠে আসার মধ্য দিয়েই সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটলো জেলা আ.লীগ নেতাকর্মীদের।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দলীয় সমর্থন দৌড়ে ব্যারিস্টার ইমনের সাথে এগিয়ে ছিলেন জেলা আ.লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক নূরুল হুদা মুকুট। এছাড়া আ.লীগের আরও কয়েকজন নেতা আ.লীগের সমর্থন পাওয়ার আশায় কেন্দ্রে জীবনবৃত্তান্তসহ আবেদনপত্র জমা দেন। আবেদনপত্র জমা দেয়ার পর থেকেই ইমন ও মুকুট কে পাবেন জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় সমর্থন এ নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা, জল্পনা-কল্পনার কমতি ছিল না। এই দুই প্রার্থীকে ঘিরে জেলা আওয়ামী লীগও দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। ব্যারিস্টার ইমনের পক্ষে জেলার বেশ কয়েকজন এমপি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অবস্থান নিয়েছেন। অন্যদিকে নুরুল হুদা মুকুটের পক্ষে আছেন কয়েকজন পৌর মেয়র ও কয়েকজন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। এই দুই হেভিওয়েট প্রার্থী দলীয় সমর্থন আদায়ে ছিলেন কেন্দ্রে দৌড়ঝাপ করেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে চূড়ান্ত সমর্থন পান ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন। তিনি আ.লীগের সমর্থন পাওয়ায় তার অনুসারী এবং সমর্থকদের মাঝে আনন্দ – উচ্ছ্বাস বিরাজ করছে। অনেকে মিষ্টি বিতরণ করে উল্লাস প্রকাশ করেছেন।
অপরদিকে মুকুট সমর্থক ও অনুসারীদের মধ্যে বিরাজ করছে হতাশা। তারা আশা করেছিলেন এবার নুরুল হুদা মুকুটকেই জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দল থেকে সমর্থন দেয়া হবে। কিন্তু সে আশা নিরাশায় পর্যবশিত হলেও নূরুল হুদা মুকুট জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে লড়াই করবেন বলে জানিয়েছেন তার ঘনিষ্ঠ সূত্র।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন বলেন, জেলা পরিষদের প্রশাসকের দায়িত্ব পালনকালে নান্দনিক সুনামগঞ্জ গড়ে তোলার চেষ্টা করেছি। জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে কাজ করছি। এই এলাকায় অনেক শহীদ মিনার, বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল, স্থানীয় নেতাদের নামে ভাস্কর্য, যাত্রী ছাউনি নির্মাণ, খেয়াঘাট আধুনিকায়ন, মঞ্চ নির্মাণসহ উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন কাজ করেছি। নেতাদের কর্মীদের সুখ-দুঃখে কাছে থেকেছি। সার্বিক দিক বিবেচনায় দল আমাকে মূল্যায়ন করেছে। এ জন্য দলের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনে জনপ্রতিনিধিদের ভোট ও সকলের দোয়া প্রত্যাশা করি।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ২২ ডিসেম্বর ব্যারিস্টার ইমন প্রথমবার জেলা পরিষদ প্রশাসক মনোনীত হন। ৩০ অক্টোবর ২০১৩ সালে সাধারণ নির্বাচনে সংসদ সদস্য পদে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেলে প্রশাসকের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। পরবর্তীতে ২২ জুন ২০১৪ সালে আবার তিনি এই পদে বহাল হন।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের (জেলা নির্বাচন অফিসার) নিকট ছাড়াও অনলাইনে প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র দাখিল করতে পারবেন। তফসিল অনুযায়ী আগামী পহেলা ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ। ৩রা ও ৪ঠা ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের তারিখ। এছাড়া প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১১ই ডিসেম্বর এবং ২৮ শে ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ।