1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৮:১৫ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

জেলা পরিষদ নির্বাচন : আওয়ামী লীগে প্রতিযোগিতা, বিএনপি-জাপার ‘না’

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৬

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
নির্দলীয় হলেও দলীয় সমর্থন খুব গুরুত্ব পাচ্ছে দেশের প্রথম জেলা পরিষদ নির্বাচনে। এই নির্বাচন সামনে রেখে চাঙা হয়ে উঠেছে জেলা রাজনীতি। এক্ষেত্রে একই জেলা থেকে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা চেয়ারম্যান পদে দলের সমর্থন দাবি করছেন। নির্বাচনের পদ্ধতির কারণে সরকারি দলের সমর্থন পেলেই বিজয় সুনিশ্চিত, এই প্রবণতা তাদের অনেকের মধ্যেই।
জয়ের সম্ভাবনা কম থাকায় সরকারে ও সংসদে থাকা জাতীয় পার্টি এই নির্বাচনে প্রার্থী সমর্থন দিচ্ছে না। এতে অংশ নিচ্ছে না রাজপথের বিরোধী দল বিএনপি। প্রত্যক্ষ ভোট না হওয়ার বিষয়টি সামনে এনে একে অসাংবিধানিক বলেও দাবি করছে তারা। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বলয়ের বাইরে থাকা দলগুলোও এ নির্বাচন নিয়ে কোনো আগ্রহ দেখাচ্ছে না।
৬১ জেলায় চেয়ারম্যান পদে দলের সমর্থন পেতে আবেদন করেছেন ৭০১ জন। কেন্দ্রের সমর্থনের আশায় জেলার নেতারা কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে বেশি বেশি আসছেন। চেষ্টা-তদবির নিয়ে তারা এখন ব্যস্ত। তারা মনে করছে, জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটাররা বেশিরভাগই আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। দলের সমর্থন পেলে বিজয় অনেকটা নিশ্চিত।
সরকারি দলের সমর্থন পেতে চাইছেন জেলা পরিষদের বর্তমান প্রশাসকরা। এ জন্যে তারা প্রশাসক পদ ছাড়তেও প্রস্তুত। এছাড়া উপজেলা ও পৌরসভায় মনোনয়ন না পাওয়া অনেক নেতা চেয়ারম্যান পদ দলের সমর্থন চাইছেন। কেউ কেউ আবার সদস্যপদ পেতে মরিয়া। অনেক ক্ষেত্রেই একই আসনে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা সমর্থন প্রত্যাশা করছেন। ফলে এ নিয়ে জেলা পর্যায়ে ক্ষমতাসীন দলের গৃহদাহ বাড়ছে।
এরইমধ্যে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী হতে ইচ্ছুক নেতাদের আবেদনপত্র ও জীবনবৃত্তান্ত জমা নিয়েছে আওয়ামী লীগ।
একই জেলায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের একাধিক সমর্থন প্রত্যাশীর বিষয়ে জানতে চাইলে, দলটির উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন বলেন, প্রত্যাশী অনেক থাকতে পারে। বড়ো দলের ভেতরে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকেই। কিন্তু দলে যার অবদান বেশি, ত্যাগ বেশি, তিনিই সমর্থন পাবেন। এক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা, তৃণমূলের জনপ্রিয়তা- এ ধরনের বিষয়ও যাচাই করা হবে।
পদের প্রতিযোগিতা প্রতিহিংসার রূপ নিতে পারে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, যারা দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাবে, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জেলা পরিষদ নির্বাচনে যাচ্ছে না বিএনপি- ১৭ নভেম্বর রাতে গণমাধ্যমে এই ঘোষণা দিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করলেও পরের প্রায় সব স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে বেশ আগ্রহ নিয়ে অংশ নিয়েছে বিএনপি। কিন্তু জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে তাদের তেমন আগ্রহ নেই। বিএনপির নেতারা বলছেন, যে পদ্ধতিতে সরকার জেলা পরিষদ নির্বাচন করতে যাচ্ছে তা সংবিধানের মৌলিক অধিকার পরিপন্থী। কারণ জেলা পরিষদ নির্বাচন সরাসরি জনগণের ভোটের মাধ্যমে হচ্ছে না। স্থানীয় সরকারের প্রতিটি স্তরের নির্বাচন জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে অনুষ্ঠিত হওয়ার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা আছে বলে তারা মনে করছেন।
জেলা পরিষদের ইলেক্টোরাল কলেজ বা নির্বাচকমন্ডলীকে বৈধতা দিতেও নারাজ বিএনপি। এ প্রসঙ্গে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন স্তরে যারা এখন জনপ্রতিনিধি তাদের বেশিরভাগই গণরায়ের বদলে জবরদস্তি করে নির্বাচিত হয়েছেন। যারা জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটার, তারা নিজেরাই জনগণের সমর্থনের ধার ধারেননি। তাই এই নির্বাচনে অংশ নেয়া অর্থহীন।’
বিএনপি নির্বাচনে প্রার্থী সমর্থনে আগ্রহী হলে ভালো হতো বলে মনে করছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক- সুজনের স¤পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, তৃণমূলে সরকারি দলের জনপ্রতিনিধি বেশি থাকার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে হয়তো বিএনপি দূরে আছে। এ নির্বাচনে সরকারি দলের প্রভাব-প্রতিপত্তি বেশি থাকবে।
জেলা পরিষদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি অংশ নেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন দলটির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে দলের লক্ষ্য জাতীয় নির্বাচন। কোনো জেলার নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে কোনো চিন্তাভাবনা নেই। ২০ নভেম্বর রোববার সকালে রাজধানীতে জাতীয় পার্টির এক যোগদান অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন এরশাদ।
এরশাদ বলেন, নির্বাচনের ফলাফল কী হবে সেটা আগে থেকেই অনুমান করতে পারছি আমরা। এ কারণে, জেলার কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না জাতীয় পার্টি। আমরা জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ভাবছি। এ লক্ষ্যে ইতিমধ্যে জেলায় জেলায় কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
জাপার একাধিক সূত্র জানায়, হিসেব-নিকেষ করেই এই নির্বাচনে যচ্ছে না জাপা। কারণ স্থানীয় স্তরগুলোয় তাদের দল করেন এমন জনপ্রতিনিধির সংখ্যা কম। নির্বাচনে জয়ের সম্ভাবনা নেই বলে তারা নির্বাচন থেকে দূরে আছেন।
সরাসরি ভোট হলে নির্বাচনে যেতেন কি না, জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, এই নির্বাচন সরাসরি হওয়া সম্ভব না। কারণ পুরো জেলার জনগণ ভোট দিলে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও এমপি-মন্ত্রীদের মর্যাদা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হবে। সেক্ষেত্রে বর্তমান পদ্ধতিই গ্রহণযোগ্য।
এদিকে জেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। ২৮ ডিসেম্বর হবে এ নির্বাচন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ ২০ নভেম্বর রোববার নির্বাচন কমিশনের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এ তফসিল ঘোষণা করেন। ২৮ ডিসেম্বর সকাল ৯টা থেকে বিকাল ২টা পর্যন্ত ভোট হবে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানান, এ নির্বাচন হবে নির্দলীয়। ৬১ জেলায় চেয়ারম্যান, সাধারণ ও সংরক্ষিত সদস্যপদে যারা প্রার্থী হতে আগ্রহী, তারা ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন। আর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ৩ ও ৪ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহার করার শেষ সময় ১১ ডিসেম্বর।
সিইসি জানান, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা এ নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার এবং উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন। এবারই প্রথমবারের মতো অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ারও সুযোগ রাখা হয়েছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com