সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
দেশে হাওরের বৃহত্তর উন্নয়নে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে হাওর তথ্য সংগ্রহশালা আয়োজিত বৈচিত্র্যময় হাওর প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বৈচিত্র্যময় হাওর স¤পাদনা করেছেন কারার মাহমুদুল হাসান।
মন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে দেশে হাওরের আয়তন ও আকার অনেক কমেছে। তবে এটিকে সংরক্ষণের দায়িত্ব আমাদের। তাছাড়া হাওর নিয়ে সরকারের অনেক পরিকল্পনা ও বিভিন্ন উদ্যোগ রয়েছে। এসব বাস্তবায়নে সরকারের দৃঢ় মনোভাব রয়েছে।
তবে সমন্বয়হীনতার অভিযোগ তুলে মুহিত বলেন, হাওর নিয়ে সরকারের যেমন অনেক পরিকল্পনা রয়েছে তেমনি সেগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে রয়েছে সমন্বয়ের অভাব। এসব সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নজর দিতে হবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বৃহত্তর ময়মনসিংহ ও বৃহত্তর সিলেট অঞ্চল হাওর প্রবণ। দেশের উন্নয়নের জন্য আমাদের উচিত ছিল হাওরের দিকে নজর দেওয়া। হাওরের উন্নয়নে ২০ বছর মেয়াদী মহাপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যা গত দুই বছর ধরে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। তবে সমন্বিতভাবে কাজ করতে না পারায় কাক্সিক্ষত উন্নয়ন হয়নি।
যেসব ক্ষেত্রে হাওরে কাজ হয়েছে তার উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, মোবাইল হেলথ কার্যক্রম হাতে নেওয়া হলেও সেভাবে কোনো অগ্রগতি হয়নি। তবে ব্র্যাকের সহযোগিতায় শিক্ষাক্ষেত্রে বেশকিছু কাজ হয়েছে। তাছাড়া আগে হাওরে যে পরিমাণ অপমৃত্যু হতো সেটা এখন বলা যায় শূন্যে নেমে এসেছে।
অনুষ্ঠানে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের নেতা ও চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের অন্যতম কারণ ভারতের সঙ্গে অভিন্ন নদীর পানি প্রবাহ। সরকারের সঙ্গে যেহেতু ভারতের ভালো স¤পর্ক, তাই তারা বিষয়টি নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা করবে বলে আমি আশা প্রকাশ করছি। এছাড়া হাওর অঞ্চলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের ওপর জোর দেন চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন।
নেত্রকোনা ৪ আসনের সংসদ সদস্য রেবেকা মোমেন বলেন, আমার সংসদীয় আসনের ৭০ শতাংশই হাওর এলাকা। এই এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এর মধ্যে হাওর এক্সপ্রেস ও মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেন চালু হয়েছে। যা হাওর এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থাকে যথেষ্ট সহজ করেছে। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এই অঞ্চলের মানুষের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে আমরা কাজ করছি।
অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক সাংবাদিক জাহেদুজ্জামান ফারুক বলেন, হাওর অঞ্চলে দুই কোটি মানুষ বাস করে। বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য হাওর অঞ্চলের উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই। দুই কোটি মানুষকে আওতার বাইরে রেখে দেশের কাক্সিক্ষত উন্নয়ন সম্ভব নয়।
বিশিষ্ট গবেষক ড. মিজানুর রহমান শেলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন নেত্রকোনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ছবি বিশ্বাস, কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য আফজাল হোসেন, হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদফতরের মহাপরিচালক মুজিবুর রহমান ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি শাহজাহান মিয়া।