স্টাফ রিপোর্টার ::
দৈনিক সুনামকণ্ঠে ‘অবাধে বালু উত্তোলন, ঝুঁকিতে রাণীগঞ্জ সেতু’ শীর্ষক সংবাদটি আমলে নিয়ে এ বিষয়ে স্বপ্রণোদিত হয়ে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও আমলগ্রহণকারী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (জগন্নাথপুর থানা) মোহাম্মদ আলমগীর ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ১৯০ (১) (সি) ধারার বিধান মতে বিষয়টিকে আমলে নেন এবং পুলিশ সুপার, নৌ-পুলিশ, সিলেট অঞ্চলকে এ বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন। একইসাথে আগামী ২৫ জুন প্রতিবেদন প্রাপ্তির জন্য দিন ধার্য্য করেন। গত ৭ মে এ বিষয়ে আদালত আদেশ জারি করেন।
আদালতের আদেশনামায় বলা হয়, উক্ত প্রতিবেদনে বর্ণিত ঘটনা পর্যালোচনাক্রমে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর ৪ ও ৫ ধারায় অপরাধ সংঘটিত হয়ে থাকতে পারে মর্মে সন্দেহের কারণ রয়েছে যা তদন্ত হওয়া একান্ত প্রয়োজন। কিন্তু উপর্যুক্ত অপরাধসমূহ সুনির্দিষ্টভাবে আর কার কার দ্বারা সংঘটিত হচ্ছে তাদের বিস্তারিত নাম, ঠিকানা দৈনিক সুনামকণ্ঠ পত্রিকার প্রতিবেদনে সুস্পষ্ট নয়। সাক্ষীদের নাম-ঠিকানা প্রতিবেদনে নেই। সুতরাং অপরাধটি কাদের দ্বারা সংঘটিত হচ্ছে তা প্রাথমিক অনুসন্ধানের মাধ্যমে নিরূপণ করা প্রয়োজন এবং তদন্তের মাধ্যমে আসামিদের শনাক্ত করা প্রয়োজন।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার, নৌ-পুলিশ, সিলেট অঞ্চলকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়। এছাড়া ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণসহ তদন্তকারী কর্মকর্তাকে সার্বিক সহায়তা প্রদান করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জগন্নাথপুর, সুনামগঞ্জকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৯ এপ্রিল দৈনিক সুনামকণ্ঠে ‘অবাধে বালু উত্তোলন, ঝুঁকিতে রাণীগঞ্জ সেতু’ শীর্ষক সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদে বলা হয়, নীতিমালা অনুযায়ী কোনো নদীর উপর নির্মিত সেতুর ১ কিলোমিটারের মধ্যে খনন কাজ না করতে বাধ্যবাধকতা থাকলেও এর বিপরীত ঘটছে জগন্নাথপুর উপজেলার কুশিয়ারা নদীতে। সরকারের মেগা প্রকল্প রাণীগঞ্জ সেতুর আশপাশের কয়েকশ ফুটের মধ্যেই ড্রেজারের সাহায্যে বালু ও বালুমিশ্রিত মাটি উত্তোলন করছে মেসার্স একতা এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। নদী খনন নীতিমালা লঙ্ঘন করে বিগত কয়েক মাস ধরে দেদারসে বালুমিশ্রিত মাটি উত্তোলন করায় হুমকির মুখে পড়েছে ১৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রাণীগঞ্জ সেতু ও নদী তীরবর্তী গ্রাম। জগন্নাথপুর উপজেলার নারিকেলতলা গ্রামের পাশে কৃষি ইনস্টিটিউটের মাঠ ভরাটে জন্য কুশিয়ারা নদীর জেগে উঠা চর থেকে বালু উত্তোলনের জন্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে একটি স্মারকে ৫০ লক্ষ ঘনফুট বালু ও বালুমিশ্রিত মাটি উত্তোলনের অনুমোদন পান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স একতা এন্টারপ্রাইজের মালিক শফিক মো. জাবেদ। এই কাগজের উপর ভিত্তি করে কৃষি ইনস্টিটিউটে মাটি দেওয়ার নামে নদীতে গণহারে চলে বালু উত্তোলনের মহোৎসব। এতে নদীর উভয় তীরের মানুষের ফসলি জমিসহ ১০টি গ্রামের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এছাড়া হুমকির মুখে পড়েছে রাণীগঞ্জ সেতু বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।