সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন না বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আল্লাহ ছাড়া আর কারও কাছে ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই আসে না।’
শুক্রবার গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে নিজামীর সঙ্গে পরিবারের সদস্যরা সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ কথা বলেন বলে জামায়াতের এক বিবৃতিতে দাবি করা হয়।
মৃত্যুদন্ডের বিরুদ্ধে করা রিভিউ আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ার পর নিজামীর সামনে অপরাধ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়ার সুযোগ অবশিষ্ট আছে। তিনি প্রাণভিক্ষা না চাইলে বা চাওয়ার পরও তা প্রত্যাখ্যাত হলে তার ফাঁসির রায় কার্যকরে আর কোনো বাধা থাকবে না।
নিজামী প্রাণভিক্ষার আবেদনের বিষয়ে কাশিমপুর কারাগার পার্ট-২ এর জেলার মো. নাশির আহমেদ বলেন, রায়ের চূড়ান্ত কপি কারাগারে এলে তার মতামত জানতে চাওয়া হবে।
ফাঁসি কার্যকরের ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, কবে নাগাদ ফাঁসি হবে, এটা আমি তো বলতে পারব না। সব আইনি প্রক্রিয়া স¤পন্ন হওয়ার পর নিজামীর ফাঁসি কার্যকর করা হবে।
এদিকে বৃহ¯পতিবার রিভিউ খারিজের রায় ঘোষণার পরদিন নিজামীর সঙ্গে স্ত্রী-সন্তানসহ ১০ স্বজনরা দেখা করতে গেলে প্রাণভিক্ষা চাওয়ার বিষয়টি নাকচ করে দেন তিনি।
জামায়াতের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘নিজামী বলেছেন- আমি ¯পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করছি প্রাণের মালিক আল্লাহ। সুতরাং আল্লাহ ছাড়া আর কারও কাছে ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই আসে না। আমি দেশবাসীকে আমার সালাম জানাচ্ছি ও দোয়া চাচ্ছি, যাতে আমি জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ঈমানের ওপর দৃঢ় ও অবিচল থাকতে পারি। আমি আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টির জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত। আল্লাহ আমার জন্মভূমি এই প্রিয় বাংলাদেশকে ইসলামের জন্য কবুল করুন। আমীন।’
পরিবারের বরাতে বিবৃতিতে বলা হয়, নিজামী মানসিকভাবে অত্যন্ত মজবুত এবং দৃঢ় আছেন। মৃত্যুদন্ডের আদেশে তিনি মোটেই বিচলিত নন। ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন’ উল্লেখ করে পরিবার, জামায়াতের সর্বস্তরের নেতাকর্মী ও দেশবাসীকে ধৈর্য ধারণ করার আহ্বান জানান।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এর সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক জানান, শুক্রবার বেলা সোয়া ১১টায় কারাগারে পৌঁছান নিজামীর স্ত্রী ও জামায়াতের মহিলা বিভাগের প্রধান বেগম সামসুন্নাহার নিজামী, ছেলে ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন ও নাইমুর রহমান, মেয়ে খাদিজা মোহসীনা, পুত্রবধূ সালেহা ও রাইয়ান, জামাতা রওশন আলী ও নাতি ঈমন এবং দুই ভাগিনা শাহাদাৎ হোসেন, বাকীবিল্লাহ। বেলা ১১টা ২৫মিনিটে তাদের কারাগারে ঢুকতে দেয়া হয়। কারাগারের একটি কক্ষে তারা নিজামীর সাথে কথা বলেন। তারা বেলা ১২টা ১০ মিনিটে কারাগার থেকে বের হয়ে যান।
প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা সাক্ষাৎ শেষে কারাগার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে কোনও কথা বলেননি নিজামীর স্বজনরা। এ সময় তারা অশ্রুসজল ও বিরস বদনে ছিলেন।