বিশেষ প্রতিনিধি ::
মিন্টু চৌধুরী। সাবেক ছাত্রনেতা। ৪নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রতীক বরাদ্দের পর প্রায় প্রতিদিনই এই বিনয়ী উদীয়মান সমাজসেবক সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার বিরামহীন প্রচারণায় সঙ্গী হয়েছেন বন্ধুবান্ধব ও স্বজনরা। নিজ ওয়ার্ডের বিভিন্ন বাসাবাড়িতে ইতোমধ্যে একাধিকবার গিয়ে ভোটপ্রার্থনা করে এসেছেন তিনি। একই ওয়ার্ডের আরেক পরিচিতমুখ নাট্যকর্মী সাদিকুর রহমান খান রুবেল। সুনামগঞ্জের মঞ্চ কাঁপানো এই তরুণ ভোটযুদ্ধে নেমেছেন। নাট্যকর্মীদের নিয়ে তিনি তার ওয়ার্ডের বিভিন্ন পাড়ার ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করে আলোচিত। তিনিও বিরামহীন প্রচারণা চালাচ্ছেন। ৪, ৫, ৬ নং ওয়োর্ডের সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী সামিনা চৌধুরীও নিজে সাংস্কৃতিক সংগঠক। তিনিও প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই বিরামহীন উদয়াস্ত প্রচারণায় ব্যস্ত রয়েছেন। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। তাকে সঙ্গ দিয়ে প্রচারণায় রঙ ছড়াচ্ছে স্বজন ও বন্ধুবান্ধবেরা।
৭নং ওয়ার্ডে আলোচিত প্রার্থী সংস্কৃতিকর্মী ও গায়েন আহসান জামিল আনাস। এই ওয়ার্ডের আলোচিত প্রার্থী তিনি। তার সঙ্গে স্বজনসহ বন্ধুবান্ধবরাও নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে উন্নয়ন ও জনসেবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অঙ্গীকার আদায় করছেন। শুধু এই চার প্রার্থীই নয় পৌরসভার কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী কাউন্সিলর ও নারী কাউন্সিলর প্রার্থীরা চষে বেড়াচ্ছেন পাড়া-মহল্লা। ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে মাইকিং, পোস্টার ও বিলবোর্ডে প্রচারণা চালাচ্ছেন তারা। যে দিকেই চোখ যায় তাদের পোস্টার আর বিলবোর্ডের ছড়াছড়ি দেখতে পাওয়া যায়।
এভাবে কাউন্সিলররা প্রচার জমিয়ে রাখলেও মেয়র পদের নির্বাচনে তেমন আবেদন নেই। নেই আলোচনা ও প্রচারণা। কারণ সচেতন নাগরিকরা ধরেই নিয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নাদের বখতের সামনে অন্য দুই প্রার্থীর চরম ইমেজ সংকট রয়েছে। তিনি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবেন এমন ঘোষণা প্রতিদিনই পাড়া-মহল্লায় দল নিরপেক্ষ মানুষজনও বড় গলায় বলছেন। তাই মেয়র পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মোরশেদ আলম ও ইসলামিক আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী রহমত উল্লাহকে নিয়ে তেমন আগ্রহ নেই অনেকের। প্রচারণায়ও তাদের তেমন দেখা যাচ্ছে না। নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এমনটা বলছেন অনেকে।
আওয়ামী লীগ প্রার্থী নাদের বখত ও তার সমর্থকরাও অন্যান্য সময়ের মতো তৎপর নন। বরং দলীয় নেতাকর্মীরা বিজয় ধরে নিয়েই বিভিন্ন স্থানে ‘রুটিন ওয়ার্ক’ হিসেবে মতবিনিময় করছেন। ‘বিজয় নিশ্চিত’ জেনে তার নিজ দলের বিরোধী বলয়ের লোকজনকেও সেসব মতবিনিময়ে যুক্ত হতে দেখা যাচ্ছে। ক্ষমতাসীন দলের মেয়র মনোনীত প্রার্থী সজ্জন নাদের বখতও সেসব মতবিনিময় সভায় উপস্থিত হচ্ছেন। তবে তিনি বরাবরের মতো একা একা আগের মতই নীরবে নিভৃতে প্রচারণায় যুক্ত হচ্ছেন তিনি।
নির্বাচনী বিশ্লেষকদের ধারণা জনপ্রিয়তা, ব্যক্তিগত ও পারিবারিক ইমেজ ও নাগরিক গ্রহণযোগ্যতায় এবারের মেয়র নির্বাচনে অপ্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নাদের বখত। বিজয় হাতছানি দিচ্ছে তাঁর সামনে। এবার হাসন পরিবারসহ অন্যান্য পরিবার থেকে শক্তিশালী প্রার্থী না থাকায় তিনিই সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য প্রার্থী। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় নির্বাচনী বৈতরণী পাড়ি দেওয়া আরও সহজ হয়েছে তাঁর। তাছাড়া করোনাকালে জেলা শহরে জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে আন্তরিকভাবে কাজ করেছেন তিনি। কোন ‘মেকি প্রচারণা’ চালাননি তখন। করোনাকালে জীবনবাজি রেখে নাগরিকদের পাশে থাকায় তার জনপ্রিয়তা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মনে করেন সুধীজন।
সুনামগঞ্জ পৌরসভায় ৯টি ওয়ার্ড ও তিনটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থীর সংখ্যা প্রায় অর্ধশত। তাদের মাঠ কাঁপানো প্রচারণা উপভোগ করছেন নাগরিকরাও। কাউন্সিলদের মধ্যেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে মনে করছেন সচেতন নাগরিকরা।
১নং ওয়ার্ডে একাধিকবার নির্বাচিত কাউন্সিলর হোসেন আহমদ রাসেল বলেন, আমি প্রতিদিনই সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রচারে ব্যস্ত রয়েছি। ওয়ার্ডের প্রতিটি বাসাবাড়িতে ঘুরছি আমি। এবারও সবাই আমাকে স্নেহ ও মমতায় জড়িয়ে রেখেছেন। অতীতে আমি যেভাবে মানুষের পাশে ছিলাম এবারও নির্বাচিত হয়ে ইনশাল্লাহ তাদের সুখ দুখের সঙ্গী হবো।
৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী বোরহান উদ্দিন লিটু বলেন, আমি গত দুটি নির্বাচন ধরেই মাঠে কাজ করছি। এবার প্রার্থী হয়েছি। পাড়ার মুরুব্বি ও সর্বস্তরের মানুষজন আমাকে দোয়া ও আশীর্বাদ দিয়েছেন। তাদের ভালোবাসা ও আশীর্বাদ বুকে নিয়ে আমি প্রতিটি ঘরেই যাচ্ছি। সবাই আমাকে যেভাবে গ্রহণ করেছেন আশা করি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ পাব।