1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৪০ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

হাওরে ধান কাটা নিয়ে দুশ্চিন্তা

  • আপডেট সময় শনিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২০

স্টাফ রিপোর্টার ::
করোনা আতঙ্ক, শ্রমিক সংকট, ভারী বর্ষণ, বন্যার আশঙ্কা এবং বজ্রপাতের কারণে হাওরের বোরো ধান কাটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক। তবে এমন প্রতিকূল পরিস্থিতি উপেক্ষা করে হাওরে ধানকাটা শুরু হয়েছে। এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ মাসের মধ্যে অবশ্যই হাওরের সব ধান কেটে ফেলতে হবে। নয়তো সর্বনাশ হয়ে যাবে। তারা সরকারকে সর্বোচ্চ শক্তি ও ক্ষমতা দিয়ে দ্রুত হাওরের সব ধান কেটে ফেলার পরামর্শ দিয়েছেন।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, হাওরের উজানে ভারতের মেঘালয় ও আসাম রাজ্য আর বরাক উপত্যকা। সেখানেও শুরু হয়েছে তুমুল বৃষ্টি। উজান আর ভাটির বৃষ্টি মিলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে হাওরে আকস্মিক বন্যা শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশবিষয়ক সংস্থার দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে এই পূর্বাভাস দিচ্ছে তারা। এ পরিস্থিতিতে ঢল নামার আগেই হাওরের সব ধান কেটে ফেলতে হবে।
এবার হাওরের পানি দেরিতে নামায়, ধানও রোপণ হয়েছে দেরিতে। ফলে এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ও অনেক হাওরে ধান পুরোপুরি পাকেনি। তবে অনেক স্থানে ধান কাটা শুরু হয়েছে। এই সময়টাতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ধান কাটার শ্রমিকেরা হাওরে যান। এবার করোনা আতঙ্কের কারণে শ্রমিক এসেছেন বেশ কম। ফলে স্থানীয় বালুশ্রমিকসহ অন্য খাত থেকে শ্রমিকদের দিয়ে ধান কাটানোর কাজ শুরু হয়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া জানান, ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত ভারতের মেঘালয়, আসাম ও বরাক উপত্যকায় টানা বৃষ্টির আশঙ্কা আছে। সেই সঙ্গে দেশের ভেতরেও হাওর এলাকায় বৃষ্টি হতে পারে। ফলে এ মাসের শেষে হঠাৎ বন্যার আশঙ্কা আছে।
অন্যদিকে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলছে, সাত হাওর জেলায় এবার ৪ লাখ ৪৫ হাজার হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ হয়েছে। বছরে সেখানে ওই একটা ফসলই হয়। সেখানকার এই ধান কাটতে প্রয়োজন হবে ৮৪ হাজার কৃষিশ্রমিক। হাওরের সাতটি জেলায় সর্বসাকল্যে এর ১৮ শতাংশ শ্রমিক পাওয়া যাবে। বাকি ৬৭ হাজার শ্রমিককে বাইরে থেকে আনতে হবে। এসব শ্রমিক মিলে কাজ করলেও সেখানকার সব ধান কাটতে লাগবে অন্তত ২৫ দিন।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মো. শাহজাহান কবীর জানান, হাওরের ধান রক্ষা করতে না পারলে অনেক মূল্য দিতে হবে। তাই দ্রুত ধান কাটার যন্ত্র ও শ্রমিক পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
তবে কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এর মধ্যেও অনেক শ্রমিক নানাভাবে হাওরে পৌঁছেছেন। ধান কাটা শুরুও হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের বিশেষ উদ্যোগে ধান কাটার জন্য সেখানে জরুরি ভিত্তিতে নতুন ১৮০টি কম্বাইন হারভেস্টার ও ১৩৭টি রিপার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। হাওরে যেতে ইচ্ছুক শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, সাবান, স্যানিটাইজার, মাস্ক প্রভৃতি উপকরণ দেওয়া, নিরাপদ যাতায়াতের জন্য আলাদা গাড়ি এবং ধান কাটার স্থানে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে থাকার ব্যবস্থা করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, এক সপ্তাহের মধ্যে বাকি ধান কেটে ফেলা যাবে। কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে ধান কাটা শ্রমিকদের যেসব সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে, তা প্রয়োজনে আরও বাড়ানো হবে। প্রয়োজনে আরও কৃষিযন্ত্র পাঠানো হবে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, আজ সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের অনেক স্থানে বৃষ্টি হতে পারে। গতকাল শুক্রবার সিলেটে ৩৪ ও মৌলভীবাজারে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক আইনুন নিশাত বলেন, এ মাসের মধ্যে অবশ্যই হাওরের সব ধান কেটে ফেলতে হবে। নয়তো সর্বনাশ হয়ে যাবে। ২০১৭ সালের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ওই সময় হাওরে ৮-১০ লাখ টন ধানের ক্ষতি হওয়ার পর চালের দাম দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছিল। তাই সরকারের উচিত হবে, সর্বোচ্চ শক্তি ও ক্ষমতা দিয়ে দ্রুত হাওরের সব ধান কেটে ফেলা।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com