স্টাফ রিপোর্টার ::
২০১৭ সালে ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অবহেলার কারণে হাওরের শতভাগ বোরো ধান পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও জেলা আইনজীবী সমিতি কর্তৃক দায়ের করা মামলা দুটি একীভূত করে অধিকতর তদন্তের দাবি জানিয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছে। জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও মামলার বাদী অ্যাড. আব্দুল হক বুধবার সুনামগঞ্জের সিনিয়র স্পেশাল জজ আদলতে এই আবেদন করেন। আদালতের বিচারক মো. ওয়াহিদুজ্জামান শিকদার আবেদনটি গ্রহণ করে শুনানির জন্য রেখেছেন।
দুদকের দায়ের করা মামলায় আদালতে দাখিল করা অভিযুক্তপত্র (চার্জশিট) গ্রহণ না করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অধিকতর তদন্তের দাবি জানানো হয় আবেদনে।
উল্লেখ্য, আব্দুল হক জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক থাকা অবস্থায় হাওরডুবির ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে নালিশকারী হিসেবে ১৪১ জনের বিরুদ্ধে সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে (১২/২০১৭) মামলা দায়ের করেছিলেন। ওই সময় আদালত ১৪০ নম্বর আসামি তৎকালীন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সচিব শাহ কামালকে বাদ দিয়ে অন্যান্য আসামিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দুদককে নির্দেশ দেন।
জানা যায়, ২০১৭ সালে ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণে সীমাহীন অনিয়ম, দুর্নীতি ও অবহেলার কারণে সুনামগঞ্জের ১৫৪টি হাওরের সম্পূর্ণ ফসল পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় লাখো কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হন। এই ঘটনায় স্থানীয় কৃষক, জনতা ও সুধীজন পাউবো’র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ঠিকাদারদের দায়ি করেন। তারা কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের বিচারের দাবি জানান। এই ঘটনায় ২০১৬ সালের ২ জুলাই ৬১ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন দুদকের সহকারী পরিচালক ফারুক আহমদ। দুদক ২০১৯ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি ৩৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। দুদকের তদন্তে ৩ প্রকৌশলী, ৩ সেকশন কর্মকর্তা ও ২৮জন ঠিকাদারকে বাদ দেওয়া হয়। ফসলডুবির ঘটনায় ফসলহারা কৃষকদের পাশে দাঁড়ায় জেলা আইনজীবী সমিতি। সমিতির সদস্যগণ সর্বসম্মত হয়ে হাওরডুবির কুশীলবদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত নেন।
জেলা আইনজীবী সমিতির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হক বাদী হয়ে ১৪১ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।
অ্যাডভোকেট আব্দুল হক বলেন, আমরা জনস্বার্থে আদালতে নালিশ করেছিলাম। কিন্তু দুদকের অভিযোগপত্র থেকে ৩৪ জন আসামির নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। আমরা দুদক ও আইনজীবী সমিতির মামলা দুটি একীভূত করে আদালতের কাছে অধিকতর তদন্তের দাবি জানিয়েছি।