বিশেষ প্রতিনিধি ::
কুলমান হারানোসহ ঝেঁটিয়ে বিদায় হবার আতঙ্কে আছেন বিএনপি-জামায়াতের দলছুট নেতাকর্মীরা। যারা সুবিধা লাভের জন্য ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগে ঢুকে নানাভাবে আখের গুচাচ্ছে তাদের মধ্যে অস্থিরতা বিরাজ করছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের মূল সহযোগী সংগঠন ও অন্যান্য নাম সর্বস্ব সহযোগী সংগঠনে অনুপ্রবেশ করে আওয়ামী লীগের পুরনো মানুষদেরও সরিয়ে দিয়েছে অনুপ্রবেশকারীরা। সম্প্রতি আওয়ামী লীগ গত ১০ বছরে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনে অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা করে তাদের ঝেঁটিয়ে বিদায় করে দেওয়ার নির্দেশনা প্রদান করায় আতঙ্কে আছে তারা।
আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকার বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে গত ১০ বছরে বিএনপি-জামায়াত থেকে যারা আওয়ামী লীগে প্রবেশ করেছে তৃণমূল পর্যায় থেকে তাদের তালিকা করা হচ্ছে। গত ১ অক্টোবর সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দিতে এসে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ তাদেরকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করার নির্দেশনা দেন। তিনি ওইদিন তার বক্তব্যে বলেছেন, গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা করা হচ্ছে। তাই আগেভাগেই তাদের বিদায় করে দেওয়ার পরামর্শ দেন স্থানীয় রাজনীতিতে অনুপ্রবেশ করানো নেতাদের।
তৃণমূল নেতাকর্মীদের অভিযোগ জামায়াত-বিএনপির অনুপ্রবেশকারীরা সুবিধা লাভের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের আদর্শকে কলঙ্কিত করতে একটি বিশেষ মিশন নিয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দিচ্ছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্বকে কাজে লাগিয়ে কিছু নেতা তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানাচ্ছেন। এই অনুপ্রবেশকারীরা এখন ওই নেতাদের স্তাবকে পরিণত হয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তারা সাম্প্রদায়িক ও উস্কানিমূলক কাজেও জড়িত। স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নকাজে তারা যুক্ত হয়ে তৃণমূল আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাকর্মীদের দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। কোন কোন এলাকায় তারা বেপরোয়া হয়ে পড়েছে।
জানা গেছে, গত দশ বছরে জামালগঞ্জ, তাহিরপুর, ধর্মপাশা, বিশ্বম্ভরপুর, ছাতক, দোয়ারা, দিরাই-শাল্লাসহ বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগে ব্যাপক অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে। আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাকর্মীদের সরিয়ে তারা কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ পদবিসহ স্থানীয় সরকারের উন্নয়ন কর্মযজ্ঞেও ঢুকে পড়েছে। তবে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতার ‘ঝেঁটিয়ে বিদায়’ করার ঘোষণায় তাদের মধ্যে অস্থিরতা বিরাজ করছে। জানা গেছে গত ১০ বছরে বিএনপি-জামায়াতের অনেক দায়িত্বশীল নেতার অনুপ্রবেশ ঘটেছে।
সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জুবের আহমদ অপু বলেন, আমাদের নেতা মাহবুব উল আলম হানিফের বক্তব্যে আমরা উজ্জীবিত হয়েছি। আমরা দেখছি কিভাবে অনুপ্রবেশকারীরা আমাদের হটিয়ে নিজেরা ভাগ বাটোয়ারায় মিশে দলকে কলঙ্কিত করছে। তিনি বলেন, আওয়ামী আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে নয়, এরা আখের গুচিয়ে দলের আদর্শ প্রশ্নবিদ্ধ ও দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করতেই এসেছে। এরা আওয়ামী লীগের অসাম্প্রদায়িক চরিত্রকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে সাম্প্রদায়িক ও উস্কানিমূলক কাজে জড়িত।
জেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকী উজ্জ্বল বলেন, আমাদের নেতা মাহবুব উল আলম হানিফ প্রতিনিধিসভায় স্পষ্ট বলে গিয়েছেন। অনুপ্রবেশকারীদের ঝেঁটিয়ে বিদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।