স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জের মেয়ে ডা. প্রিয়াংকা তালুকদার শান্তা (২৯) না ফেরার দেশে চলে গেছেন। তাঁর এই মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্বামীর পরিবার তাঁর মৃত্যুকে আত্মহত্যা বললেও, শান্তার বাবা-মায়ের দাবি তার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় শান্তার বাবা ঋষীকেশ তালুকদার সিলেটের জালালাবাদ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ শান্তার স্বামী দিবাকর দেব কল্লোল, শ্বশুর সুভাষ চন্দ্র দেব ও শাশুড়ি রতœা রানী দেবকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায়। আদালত তাদের কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সিলেট নগরের পশ্চিম পাঠানটুলার স্বামীর বাসা থেকে ডা. প্রিয়াংকা তালুকদার শান্তার (২৯) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এদিকে ডা. শান্তার মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হওয়ায় এটি হত্যা না আত্মহত্যা এর নিরপেক্ষ ও সঠিক তদন্ত দাবি করে অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
শিক্ষক অণীশ তালুকদার বাপ্পু লিখেছেন, আমাদের নতুনপাড়ার বাসিন্দা ব্যাংকার ঋষিকেশ তালুকদার মহাশয়ের কন্যা ডা. প্রিয়াংকা তালুকদার শান্তাকে নির্মম নির্যাতন ও হত্যা করে তার স্বামী লাশ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যার নাটক সাজানোর চেষ্টা করেছেন বলে শান্তার বাবা-মা অভিযোগ করেছেন। শান্তা সিলেট পার্কভিউ মেডিকেল কলেজের লেকচারার হিসেবে চাকরি করতো। শান্তার লাশ নতুনপাড়ার বাসায় আনলে শোকের ছায়া নেমে আসে। ৩ বছরের অবুঝ সন্তান কাব্য তার মায়ের লাশের পাশে পুতুল নিয়ে খেলা করছে। কী হৃদয় বিদারক দৃশ্য। শান্তার পরিবারের অভিযোগ তাদের মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। যতটুকু জানা যায় শান্তার স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়িকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ঘটনার সত্যতা যাচাই করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করার দাবি করছি।
কৃষক লীগ নেতা কল্লোল তালুকদার লিখেছেন, অনেকেই ধারণা করছেন যে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এখন একটাই অনুরোধ কয়েকটা পার্টির কাছে। প্রথমত বড় রাজনীতিক, দ্বিতীয়ত পুলিশ মহাশয়, তৃতীয়ত ফরেনসিক ডা. মহাশয় আপনারা একটু ত্যাগী মনোভাব দেখালে তদন্তে মূল বিষয় বেরিয়ে আসবে।
তুলনা আনাস তাঁর ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, শান্তা দি-কে ছোট থেকে চিনি। সেই কেজি স্কুলে যখন আমার ভাইয়ের সাথে পড়তো তখন থেকে। দিদি আমার গানের ক্লাসের সঙ্গীও ছিল। আমরা ¯পন্দনে কাটিয়েছি জীবনের অনেক ভাল সময়। সময় পার হল… একজন একেকদিকে চলে গেলাম। তবে দিদিকে এই কয়বছরে এতো মনমরা দেখে আমার কেন জানি লাগতোÑ ও সুখিনা। তখনও বলা হয়নি কি হয়েছে দিদি? এতো শুকিয়ে গেছিস কেন…? লাস্ট দেখা গার্লসের রিইউনিয়নে। সকালে যখন শুনলাম তুমি মারা গেছো… তখন থেকেই কান্না থামাতে পারছিনা…। তুমি ভেঙে পড়ার মেয়ে নও…। সবার কথা শুনে বলতে পারি যে মেয়ে এতো বাধা পেরিয়ে নিজেকে দাঁড় করিয়েছো। যে মেয়ে বাচ্চা হবার পরও তার ক্যারিয়ার এতো কষ্ট করে সাজিয়েছে… যে মেয়ে প্রেগনেন্ট… সে মেয়ে আত্মহত্যা করার মেয়ে নয়…। আর তার লাশ নিজ রুমে না, ড্রইংরুমে ঝুলানো অবস্থায় পাওয়া গেছে। যদি আত্মহত্যা হত সে নিজেকে তার রুমে আটকে নিত। আমাদের লোকদেখানো সমাজে আছে কিছু মুখোশধারী নরপশু। যারা অন্যের মেয়েদের বিয়ে করে এনে অমানুষিক অত্যাচার করে হয় মেরে ফেলে, না হয় মরার জন্য বাধ্য করে..। দিদিভাই অনেক কষ্ট তো করলি, এবার তুই শান্তিতে থাক… তর ছেলে তার জন্য ওপার থেকে দোয়া কর।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক আরিফ উল আলম লিখেছেন, শান্তা আত্মহত্যা করেছে না তাকে হত্যা করা হয়েছে? প্রশাসনের নিকট সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।