1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০২:২৩ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

হাওরাঞ্চলে কৃষির যান্ত্রিকীকরণ : প্রতিকূল আবহাওয়ায় উদ্ভূত সমস্যার অবিকল্প সমাধান

  • আপডেট সময় সোমবার, ৬ মে, ২০১৯

হাওরাঞ্চলে বোরো ধান কাটার পর কৃষকেরা সে-ধানের মুইঠ (আঁটি বাঁধা ধানের ছড়া) পাড়া দিয়ে (বিশেষ বিন্যাসে স্তূপাকারে একত্র করে রাখার পদ্ধতি) রাখেন। এই পাড়া থেকে ধানের মুইঠ নিয়ে মাড়াই করে হিজা (ছড়া) থেকে ধানকে আলাদা করা হয়। আলাদা করা বা ধানের ছড়া থেকে বিযুক্ত এই ধানকেই কৃষকরা বলেন গুলি ধান। এই গুলি ধানকে উত্তমরূপে শুকিয়ে প্রথমে উড়ানো হয়। পরে এই শুকনো ধানকে কুলায় করে উপর থেকে ধীরে ধীরে কীছু কীছু পরিমাণে নীচের দিকে ছেড়ে দেওয়া হয় এবং প্রবহমান বাতাস সেই ধান থেকে ধানের চেয়ে অপেক্ষাকৃত হালকা পাতা কিংবা পাতার ছিন্নাংশ ও চুছা (চিটা ধান) উড়িয়ে নিয়ে গিয়ে যায়। নীচে কেবল সাকেরা ধান পড়ে থাকে। পরিষ্কার অর্থাৎ ধানের পাতা ও চিটাধানমুক্ত এই ধানকেই সাধারণত গোলায় তোলার উপযুক্ত বলে বিবেচনা করা হয়।
এই পুরো প্রক্রিয়াটির সঙ্গে আরও অনেক কাজকর্ম সমাধার বিষয় জড়িয়ে আছে। কৃষককে পাকা ধান কাটতে গিয়ে শ্রমিক নিয়োগ করতে হয়। ক্ষেত থেকে সে-ধান মাড়াই করার স্থানে নিয়ে আসার আগে খলা প্রস্তুত করতে হয়। রাতে পাহারার ব্যবস্থা রাখতে হয়। তারপর ধান মাড়াই করা, শুকানো, উড়ানো ও গোলায় তোলা পর্যন্ত অনেক অনেক কাজ। ধান কাটা সম্পন্নের পর এই দীর্ঘ প্রক্রিয়ার ভেতরে চাই নিরবচ্ছিন্ন প্রাকৃতিক আনুকূল্য। প্রকৃতি অনুকূল না থাকলে প্রতিটি পর্বে কাজ বিলম্বিত হয় এবং বিলম্ব হলেই সমস্যা একটার পর একটা বাড়তে থাকে। সবচেয়ে ক্ষতিকর সমস্যাটি দেখা দেয় ধান গেড়া দিয়ে দিলে। ধানের গেড়া দেওয়ার মানে হলো ধানের অঙ্কুরোদ্গমের প্রবণতা। অঙ্কুরিত ধানে সাধারণত চাল হয় না। অঙ্কুরিত ধানের চাল স্বাভাবিকভাইে তার প্রকৃতিগত বৈশিষ্ট্য হারিয়ে নষ্ট হয়ে যায়। এবার ঘূর্ণিঝড় ফণি’র কারণে আবহাওয়ার প্রতিকূলতার মুখে পড়েন হাওরের কৃষকরা। প্রথমত শ্রমিকের অভাবে সময় মতো ধান কাটা হয়নি। তদুপরি ঝড়বাদলের কারণে রৌদ্র না থাকায় ধান শুকানো সম্ভব হয়নি এবং স্বাভাবিকভাবেই ধান ভিজে গিয়ে গেড়া দেওয়ার (অঙ্কুরিত হওয়া) প্রবণতা দেখা দিয়েছে। বলতে গেলে প্রতি বছরই হাওরাঞ্চলে বোরো ধান কাটার মৌসুমে এইসব সমস্যার পুনরাবৃত্তি ঘটে চলেছে। ভুক্তভোগী কৃষকরা এমতাবস্থায় যে-করেই হোক এর একটি স্থায়ী সমাধান কামনা করছেন।
আমরা মনে করি, হাওরাঞ্চলে কৃষিকে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সম্পূর্ণ যান্ত্রিকীকরণ করার মাধ্যমে এইসব সমস্যার সামগ্রিক সমাধান হতে পারে। প্রথমেই ধানকাটার শ্রমিক সমস্যা নিরসনের জন্য হাওরাঞ্চলের জলজ আবহাওয়ায় উপযুক্ত ধানকাটার কলের প্রচলন করতে হবে। এতে করে পাকা ধান জমিতে পড়ে থেকে শিলাবৃষ্টিতে নষ্ট হওয়ার অপেক্ষায় থাকবে না। দ্বিতীয়ত প্রতিটি হাওরে ধান ক্ষেত থেকে বাড়ির গোলা পর্যন্ত ধানের মুইঠ ও গোলা ধান বহনের যোগাযোগ সড়ক তৈরি করতে হবে। বৃষ্টিতে না-শুকানো ধান যাতে ভিজে গিয়ে গেড়া না দেয় তার ব্যবস্থা করতে হবে। তৃতীয়ত কৃষক যাতে বৃষ্টিবাদলের দিনেও প্রয়োজনে খোলা আকাশের নীচে কাজ করতে পারেন, সে-জন্য বজ্রনিরোধক দ- স্থাপনের ব্যবস্থা করতে হবে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com