গত ২১ এপ্রিল রোববার শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোসহ তিনটি শহরে আটটি সন্ত্রাসী হামলায় প্রায় ৩২১ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু এবং প্রায় ৫০০ জনের আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার তিনদিন পর হামলার দায় স্বীকার করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)।
২১ এপ্রিল ছিল খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের গুরুত্বপূর্ণ উৎসব ইস্টার সানডে। ওইদিনে হামলা চালানো হয়েছিল তিনটি পাঁচ তারকা হোটেলে এবং তিনটি ক্যাথলিক গির্জায়। আপাতদৃষ্টিতে ওই হামলার টার্গেট খ্রিস্টধর্মাবলম্বী হলেও চূড়ান্তভাবে বলা যায় জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিশ্বমানবতার ওপর ন্যাক্কারজনক আক্রমণ চালানো হয়েছে। এই হামলায় যারা নিহত হয়েছে তারা শুধু খ্রিস্টধর্মাবলম্বী ছিলেন না, বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীর মানুষও রয়েছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশিও একজন আছে। আমরা এই সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা ও হামলাকারীদের ধিক্কার জানাই। আমরা মনে করি এই হামলা শুধু শ্রীলঙ্কার ওপর হয়নি, বিশ্ব মানবতার ওপর হামলা করেছে সন্ত্রাসীরা।
একটি গোয়েন্দা সংস্থার স্মারকে বলা হয়েছে, হামলার আগে সন্ত্রাসী দলের একজন সদস্য তার সামাজিক যোগাযোগের অ্যাকাউন্টে চরমপন্থী বিষয়ক বিভিন্ন লেখা পোস্ট করতে শুরু করেছিলেন। সন্ত্রাসবাদ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বলছেন, এ ধরনের গভীর ও জটিল হামলা চালাতে যে সরঞ্জাম লাগে, এর প্রস্তুতিতে কয়েক মাস সময় দরকার। এর মধ্যে আত্মঘাতী সদস্য জোগাড় করা ও বিস্ফোরকদ্রব্য পরীক্ষার মতো বিষয়ও রয়েছে। কাজেই বুঝা যাচ্ছে, এটি একটি সুপরিকল্পিত হামলা। যা বাস্তবায়ন হয়েছে ২১ এপ্রিল।
এই ধরনের হামলা আর যাতে না হয় সেজন্য বিশ্বসম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ হয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে সন্ত্রাসী ও জঙ্গিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। পাশাপাশি সন্ত্রাস মোকাবিলা করে জাতি-গোষ্ঠী-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানবতাকে জাগাতে হবে, জাগাতে হবে প্রতিটি মানুষের বিবেককে, প্রতিষ্ঠা করতে হবে সাম্য, অসাম্প্রদায়িক চেতনা। বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় এর বিকল্প হতে পারে না।