পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায় যে, দেশের বিভিন্ন জেলায় দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে দুদকের অভিযান শুরু হয়েছে। পত্রিকায় লেখা হয়েছে, সুনামগঞ্জ বিআরটিএ অফিসের অনিয়ম খতিয়ে দেখতে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসককে দুদকের এনফোর্সমেন্ট ইউনিট অনুরোধ করেছেন। অন্যান্য কয়েকটি জেলায়ও এমন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে এবং অভিযোগসমূহ সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুদকের এমন তৎপরতা অতীতে পরিলক্ষিত হয়নি। অতীতের কোনও সরকারের আমলে দুদকের অবস্থা ছিল দন্তনখহীন বাঘের মতো। যাকে বলে ব্যর্থতার গ্লানি নিয়ে কোনও রকমে অস্তিত্ব রক্ষার যুদ্ধে টিকে থাকা। একটি দেশের সুস্থ আর্থসামাজিক ব্যবস্থা দুদকের মতো দুর্নীতিবিরোধী রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের সক্রিয় কর্মকা-ের উপর বলতে গেলে সিংহভাগ নির্ভর করে। কিন্তু কোনও সময়ই বর্তমান সময়ের মতো সংবাদুক্ত অভিযান পরিচালনা করতে এই প্রতিষ্ঠানটিকে দেখা যায়নি। এই প্রতিষ্ঠানটিকে বরাবর সামাজিক স্বার্থে ব্যবহার না করে বরং ব্যবহার করা হয়েছে রাজনীতিক স্বার্থে। ফলে অতীতে এই প্রতিষ্ঠান জনকল্যাণে ব্যবহৃত না হয়ে ব্যবহৃত হয়েছে কোনও না কোনও রাজনীতিক শ্রেণি গোষ্ঠীর স্বার্থে। ফলকথা দুদককে কখনওই তার স্বমূর্তিতে আবির্ভূত হতে দেওয়া হয়নি। তাকে দুর্বল করে রাখা হয়েছে ক্ষমতাসীন রাজনীতির পক্ষ থেকে। শেখ হাসিনার সরকার দুর্নীতি, মাদক ও সন্ত্রাসের বিষয়ে শূন্যসহনশীল একটি সরকার। বলতে দ্বিধা নেই যে, এই প্রেক্ষিতে দুদককে প্রাণিত করা হয়েছে।
দেশজুড়ে দুদকের অভিযানের মতো তাৎপর্যপূর্ণ কর্মসূচি, অতীতে কোনও সময়ে হয়েছে বলে মনে হয় না। যদি হতো তবে বাংলাদেশ বিগত বিএনপি সরকারের সময় পাঁচ পাঁচ বার বিশ্বমানের নিরিখে দুর্নীতিতে শ্রেষ্ঠ স্থান অধিকার করতে পারতো না। দুদকের এমন অভিযানের পক্ষে আছেন দলমত নির্বিশেষে দেশবাসী। তাঁরা চান এই রকম অভিযান যেনো কখনও বন্ধ না হয়। কারণ দুর্নীতি এমন একটি মানবিক প্রপঞ্চ যা কখনও বন্ধ হবে না। তবে তখনই বন্ধ হবে যখন মানুষের পক্ষে দুর্নীতি করার কোনও প্রয়োজন পড়বে না এমন কোনও আর্থব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হবে।