স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জ জেলা তথ্য অফিসের উদ্যোগে শিশুমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে মাইজবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এই মেলার আয়োজন করা হয়।
শিশু ও নারী উন্নয়নে সচেতনতামূলক যোগাযোগের কার্যক্রম (৫ম পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় জিওবি খাতে শিশুমেলার আলোচনা সভা, সংগীতানুষ্ঠান/চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
শিশুমেলা উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা তথ্য অফিসার মো. আনোয়ার হোসেন। প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও বিরোধী দলীয় হুইপ অ্যাডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ। এর আগে তিনি ফিতা কেটে শিশুমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন এবং মেলার ২০টি স্টল ঘুরে ঘুরে দেখে শিশুদের সাথে কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. জিল্লুর রহমান, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার এনামুর রহিম বাবর ও কুরবাননগর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবুল বরকত।
তথ্য অফিসের ইপিই অপারেটর শরীফ হোসেনের পরিচালনায় আলোচনা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা তথ্য অফিসার মো. আনোয়ার হোসেন। আরো বক্তব্য রাখেন মাইজবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. গিয়াস উদ্দিন। অনুষ্ঠানের শুরুতে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। আলোচনা সভা শেষে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় নৃত্য ও অতিথি শিল্পীরা লোকসঙ্গীত পরিবেশন করেন। এসময় শিশু শিক্ষার্থীসহ তাদের অভিভাবক ও এলাকার গণ্যমান্য লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
তথ্য অফিস জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্র্যান্ডিং বিষয়ক প্রচার কার্যক্রম বাস্তবায়নের আওতায় ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সোনারবাংলা গড়ার প্রত্যয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। তন্মধ্যে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প, আশ্রায়ন প্রকল্প, ডিজিটাল বাংলাদেশ, শিক্ষা সহায়তা কার্যক্রম, নারীর ক্ষমতায়ন কার্যক্রম, সবার জন্য বিদ্যুৎ, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিসমূহ, কমিউনিটি ক্লিনিক, শিশু বিকাশ, বিনিয়োগ বিকাশ ও পরিবেশ সুরক্ষা। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়নের বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। যার সুফল লাভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এই কর্মসূচির ফলে দেশে শিক্ষার হার গত ৬ বছরে ৪৪ শতাংশ থেকে ৭০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এ বছর পহেলা জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে ৬২ কোটি ৬৪ লক্ষ বই বিতরণ করা হয়েছে। ১ম শ্রেণি থেকে ডিগ্রী পর্যন্ত ১ কোটি ২২ লাখ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি ও উপবৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে। ২৬ হাজার ১৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করা হয়েছে। এর ফলে স্কুলগামী শতভাগ শিশুকে বিদ্যালয়ে আনয়ন মাধ্যমিক পর্যায়ে বিনামূল্যে পাঠ্যবই সরবরাহ, মেয়েদের বিনাবেতনে অধ্যয়নের সুযোগ প্রদান, মেয়েদের শিক্ষা সহায়তা, উপবৃত্তি প্রদান এবং আইটি নির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তনসহ শ্রেণিকক্ষ সমূহে মাল্টিমিডিয়া ও ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করা হয়েছে। সুনামগঞ্জ জেলায় শিক্ষার হার ৩৫%। এর মধ্যে নারী শিক্ষার হার বেশি। সরকারের শিক্ষার প্রতি আন্তরিকতা এবং ব্যাপক পৃষ্ঠপোষকতার ফলে শিক্ষাক্ষেত্রে বিপ্লব সাধিত হয়েছে। বিদ্যালয়কে সরকারিকরণ, নির্দিষ্ট সময়ে সারাদেশে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা অনুষ্ঠান, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ, নিয়মিত শিক্ষক নিয়োগ ইত্যাদির ফলে বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষায় অংশগ্রহণের হার যেমন বেড়েছে তেমনি ঝরেপড়ার হার কমেছে। ২০০৯ সালে প্রাথমিকে ভর্তির হার ছিল ১ কোটি ৬৪ লক্ষ এবং ২০১৯ সালে হয়েছে ২ কোটি ১৩লক্ষ। বর্তমানে মাধ্যমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত তথ্য প্রযুক্তি বিষয়টি বাধ্যতামূলক এবং ২০ হাজার ৫০০টি অধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক প্রশিক্ষণসহ মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ করে দেয়া হয়েছে। সৃজনশীলতার পাশাপাশি প্রযুক্তির প্রতি সকলকে আরো বেশি আকৃষ্ট করছে সরকার। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে সারাদেশে প্রায় ২৩ লক্ষাধিক শিক্ষার্থীকে ট্যাব দেয়া হবে ফলে ঐসকল শিক্ষার্থীদের আর ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত ছাপানো বই দিতে হবে না। বর্তমান সরকারের আন্তরিকতার কারণে শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৯ সাল থেকে পিএসসি এবং ২০১০ সাল থেকে জিএসসি পরীক্ষা বাংলাদেশে পাবলিক পরীক্ষা ক্ষেত্রে নিয়ে এসেছে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন। ২০১৯ সালে নিরক্ষরতা সম্পূর্ণ দূর করে শিক্ষার মান উন্নয়ন বৃদ্ধি করা হবে।