স্টাফ রিপোর্টার ::
শাল্লায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বদলি নিয়ে বাণিজ্য থামছে না। শিক্ষক বদলি নিয়ে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির একের পর এক অভিযোগ উঠছে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফেরদৌসের বিরুদ্ধে। সোমবার তার বিরুদ্ধে আরো দু’টি অভিযোগ জেলা প্রশাসক ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে দেয়া হয়েছে। এর আগেও ওই শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষকরা।
সোমবার জেলা প্রশাসক ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবরে শাল্লা উপজেলার হরিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক লিপি রাণী তালুকদার এবং মনুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক কৃপেন্দ্র কুমার চৌধুরী শিক্ষক বদলির ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘনের পৃথক অভিযোগ করেন।
লিপি রাণী তালুকদার তার লিখিত অভিযোগে বলেন, আমি বিগত ১ জানুয়ারি ঘুঙ্গিয়ারগাঁও মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চলতি দায়িত্বের শূন্য পদের বিপরীতে উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবরে বদলির জন্য আবেদন করি। উক্ত শূন্য পদের বিপরীতে যতগুলো আবেদন পড়ে তন্মধ্যে আমি সবার চেয়ে জ্যেষ্ঠ। কিন্তু গত ১২ মার্চ উপজেলা শিক্ষা অফিসার তড়িঘড়ি করে আবেদনকারীর মধ্যে জ্যেষ্ঠতার ক্রমে সবার নিচে অবস্থানকারী রূপসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক সঞ্চিতা রাণী চৌধুরীকে সম্পূর্ণ পরিপত্র পরিপন্থী জ্যেষ্ঠতার ক্রম লঙ্ঘন করে উপজেলা শিক্ষা অফিসের ১৫৯নং স্মারকে জেলা প্রাথমিক অফিসারের বরাবরে বদলির প্রস্তাব প্রেরণ করেন। তিনি অভিযোগে আরো উল্লেখ করেন তার যোগদান ১০ জুন ২০০৩ খ্রি. আর সঞ্চিতা রাণী চৌধুরীর যোগদান হলো ৫ জুন ২০১২ খ্রিস্টাব্দে।
উপজেলার মনুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক কৃপেন্দ্র কুমার চৌধুরী অভিযোগে উল্লেখ করেন, তিনি গত ২৪ জানুয়ারি মেঘনাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শূন্য পদের বিপরীতে বদলি হওয়ার জন্য আবেদন করেন। কিন্তু একই উপজেলার সহকারি শিক্ষক বাবুল চন্দ্র চৌধুরীকে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ ফেরদৌস উৎকোচ নিয়ে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে আমার পরিবর্তে বাবুল চন্দ্র চৌধুরীর বদলির প্রস্তাব জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর প্রেরণ করেন। কৃপেন্দ্র চন্দ্র চৌধুরী আরো উল্লেখ করেন, তিনি যোগদান করেন ১ জানুয়ারি ১৯৯০খ্রি. আর বাবুল চন্দ্র চৌধুরী যোগদান করেন ১৬ জানুয়ারি ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দে।
এ ব্যাপারে শাল্লা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফেরদৌস-এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এইডা থার্ডপার্টি তারা করাইছে। এমপির একটি ডিও লেটার আছে। এমপি মহোদয় ব্যক্তিগতভাবে আমারে ফোন দিছেন। এইটাতো আলোচনা কইরাই দেওয়া হইছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জিল্লুর রহমান বলেন, জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘনের অভিযোগ পেয়েছি। তিনি কি করে এটি দিলেন-আমরা তা যাচাই-বাছাই করবো। এখন শাল্লার বদলির বিষয়গুলো আমরা আপাতত স্থগিত রেখেছি।
উল্লেখ্য, শাল্লা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফেরদৌস এর পূর্বে তাহিরপুর উপজেলায় শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে তিনি শাল্লায় বদলি হন। শাল্লায় দায়িত্ব পালনকালে আবারো তিনি নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। পরে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কার্যালয় থেকে শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফেরদৌসের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানো হয়।