শামস শামীম ::
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়াইয়ে নেমেছেন আওয়ামী লীগ ও যুব মহিলা লীগের ৫ জন আলোচিত নেত্রী। রাজনীতির মাঠে সক্রিয় এই নেত্রীরা প্রতীক পেয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। কারো কারো চিত্তাকর্ষক বক্তব্যে মুগ্ধ হচ্ছেন ভোটাররা। সবাই ভোটের মাঠে সমান প্রচারণা ও আলোচনায় না থাকলেও ৫ জনই বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে চষে বেড়াচ্ছেন ভোটের মাঠ।
সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক নিগার সুলতানা কেয়া। ৪র্থ উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি নেত্রীকে পরাজিত করে বিপুল ভোটে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। মেয়াদের শেষ দিকে এসে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এই মেধাবী ছাত্রী সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের অভিভাবকতুল্য নেতা ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ অ্যাডভোকেট আফতাব উদ্দিন আহমদের জ্যেষ্ঠ কন্যা। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে একসময় শিক্ষকতাও করেছেন। বর্তমানে সুনামগঞ্জ জেলা মহিলা পরিষদের দায়িত্বশীল নেত্রীও তিনি। রাজনীতির পাশাপাশি সামাজিক নানা সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত। স্থানীয় নারী আন্দোলন ও নারী জাগরণের সক্রিয় কর্মী হিসেবে তিনি বিশেষভাবে পরিচিত। গত উপজেলা নির্বাচনে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে গত ৫ বছর ধরে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে ঘুরে নানা উন্নয়ন কাজে যুক্ত ছিলেন। এবারও তিনি বৈদ্যুতিক পাখা প্রতীকের প্রার্থী। প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি, ঘুরছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। তার সভায় ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে।
প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা শামছুল হকের কন্যা ফেরদৌসী সিদ্দিকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য। ৩য় উপজেলা নির্বাচনে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছিলেন তিনি। এবার তিনি পদ্মফুল প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ফেরদৌসী সিদ্দিকা নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় সোচ্চার কণ্ঠ। মুক্তিযুদ্ধ ও প্রগতির পক্ষে নানা কার্যক্রমে যুক্ত তিনি। গ্রামকে শহরে পরিণত করার আওয়ামী লীগের ভিশনকে সামনে রেখে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান বখতের স্ত্রী মিনারা বেগম ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন কলসি প্রতীকে। তিনি সদর উপজেলা আওয়ামী যুব মহিলা লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। তিনিও সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বিশেষ করে উত্তরপাড়ের বিশেষ একটি শ্রেণির সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন। তাই দুটি ইউনিয়নে তাকে বিশেষভাবে প্রচারণা চালাতে দেখা যাচ্ছে। বিজয়ের ব্যাপারে তিনিও আশাবাদী।
জেলা আওয়ামী যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক সানজিদা নাসনির দীনা ডায়নাও ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। হাঁস প্রতীক নিয়ে তিনি প্রচারণা চালাচ্ছেন। তার সঙ্গে আওয়ামী যুব মহিলা লীগের নেতৃবৃন্দকেও প্রচারণায় দেখা যাচ্ছে। তিনি জানান, জনগণ এবার তাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবে।
মুক্তিযোদ্ধা কন্যা সাদিয়া বখত সুরভী জেলা আওয়ামী যুব মহিলা লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। তিনি মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সাধারণ সম্পাদক। গত কয়েক বছর ধরে রাজনীতির মাঠেও সক্রিয় হিসেবে দেখা যাচ্ছে তাকে। গত জেলা পরিষদ নির্বাচনে মাত্র চার ভোটে পরাজিত হয়েছিলেন তিনি। এবার ফুটবল প্রতীক পেয়ে তিনি ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। প্রতিদিনই তাকে প্রচারণা চালাতে দেখা যাচ্ছে।
ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ফেরদৌসী সিদ্দিকা বলেন, আমি এর আগেও উপজেলা পরিষদে ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়ে সাধ্যমতো জনগণের পাশে থেকেছি। মানুষের সুখ-দুঃখ ও চাওয়া-পাওয়ার সঙ্গে আমি পরিচিত। আমার বাবা জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছিলেন। তার সন্তান হিসেবে আমি জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তার ক্ষুদ্র রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে দেশের উন্নয়নে কাজ করতে চাই। আশা করি জনগণ আমাকে এবারও রায় দিবেন।
বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান নিগার সুলতানা কেয়া বলেন, আমি গত ৫ বছরে প্রতিটি গ্রামে কাজ করেছি। মানুষ যখন যে কাজে আমাকে ডেকেছে সাধ্যমত সহযোগিতা করেছি। আশা করি জনগণ এবার আমাকে আরো বিপুল ভোটে নির্বাচিত করবেন।