1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:০১ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

সেচের অভাবে ব্যাহত বোরো আবাদ

  • আপডেট সময় রবিবার, ২০ জানুয়ারী, ২০১৯


মোসাইদ রাহাত ::

পর্যাপ্ত সেচের অভাবে ব্যাহত হচ্ছে হাওরের বোরো চাষাবাদ। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন স্থানীয় কৃষকেরা।
কৃষকরা জানিয়েছেন, হাওরে পর্যাপ্ত পানি নেই। তাছাড়া উন্মুক্ত জলাশয়গুলোও শুকিয়ে যাচ্ছে। অথচ আগে এ সময়টায় ধানক্ষেতের পাশেই নালা-ডোবা পানিতে থাকত টইটম্বুর। এ পানি দিয়েই বোরো ক্ষেতে সেচ দিতেন কৃষক।
হাওরবেষ্টিত সুনামগঞ্জের একমাত্র ফসল হলো বোরো ধান। ২০১৭ সালে বাঁধের কাজে অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে তলিয়ে যায় হাওরের সকল বোরো ফসল। কিন্তু বিগত সালে নিয়মমতো কাজ হওয়ায় ফসল তলিয়ে যায়নি। কিন্তু এবছর সেচের অভাবে ব্যাহত হচ্ছে বোরো আবাদ। সেচ পাম্পের দাম বেশি হওয়ায় ও হাওরের ডোবা-নালায় পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি না থাকায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, জেলার ১১টি উপজেলায় এবার বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লক্ষ ১৭ হাজার ৫৩৫ হেক্টর। এর মধ্যে হাইব্রিড ধান ৩০ হাজার ৫৫১ হেক্টর, উচ্চ ফলনশীল ধান ১ লক্ষ ৩০ হাজার ১৯০ হেক্টর ও স্থানীয় প্রজাতির ধান ৪৭ হাজার ৯৪ হেক্টর।
যার মধ্যে সদর উপজেলায় ১৫ হাজার ৮শত হেক্টর, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলায় ২২ হাজার ২শ হেক্টর, জগন্নাথপুর উপজেলায় ২০ হাজার ১৫০ হেক্টর, দিরাইয়ে ২৭ হাজার ৭১ হেক্টর, শাল্লায় ২১ হাজার ৫৩০ হেক্টর, জামালগঞ্জ উপজেলায় ২৪ হাজার ৪শ হেক্টর, তাহিরপুর উপজেলায় ১৭ হাজার ৪শ হেক্টর, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় ১০ হাজার ৩শ হেক্টর, ছাতক উপজেলায় ১৪ হাজার ৯শ হেক্টর, দোয়ারাবাজার উপজেলায় ১৩ হাজার ১৯০ হেক্টর, ধর্মপাশা উপজেলায় ৩১ হাজার ৩৯৪ হেক্টর জমি চাষাবাদের আওতায় আনা হয়েছে।
মোট উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে ইতোমধ্যে ৯৫ হাজার ৭০ হেক্টর আবাদ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
সরেজমিনে সদর উপজেলার খরচার হাওর, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার দেখার হাওরে গিয়ে দেখা যায়, বোরো ধানের চারা রোপণ শুরু করেছেন কৃষকরা। কিন্তু সেচের অভাবে বোরো চাষে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। কিছু কিছু জায়গায় ইঞ্জিন (পাম্প) বসিয়ে সেচ দেওয়া হলেও তা ব্যয়বহুল বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। আবার অনেক জায়গায় দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন ছোট ছোট ডোবা ও নদী থেকে পানি নিয়ে এসে সেচ দিচ্ছেন তারা। কিন্তু এই সেচ পর্যাপ্ত না বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
দেখার হাওরের হোসেন মিয়া বলেন, বোরো ধান লাগিয়েছি কিন্তু পানির সংকট খুব বেশি। ঠিকমতো পানি যদি না পাই তাহলে চারাগুলো বড় হবে না। এতে করে আমাদের না খেয়ে থাকতে হবে। মেশিন দিয়ে পানি দেওয়ার সামর্থ্য আমার নাই।
দেখার হাওরে ৬ কেয়ার জমিতে বোরো ধানের চাষাবাদ করেছেন নীলপুর রাবারবাড়ি এলাকার কৃষক আব্দুল জব্বার। তিনি বলেন, মেশিন দিয়ে এখন পানির সেচ দিচ্ছি। কিন্তু মেশিনের ক্ষেত্রে আমাদের যা খরচ হয় তা অনেক বেশি। যদি ধান ভালোমতো হয়ও তবুও লাভের মুখ দেখবো না। হাওরে পানি নাই। তাই আমাদের এখন সেচই একমাত্র ভরসা। কিন্তু এটাও কয় দিন দিতে পারব তার ঠিক নেই।
জলিলপুর এলাকার কৃষক মো. জালাল উদ্দিন বলেন, আমাদের এখানে কোনো টিউবওয়েল নাই। যদি সরকার থেকে আমাদের টিউবওয়েলের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয় তাহলে জমিতে পানির সেচ দিতে পারবো। কিন্তু পানির এই সংকট যদি অব্যাহত থাকে তাহলে আমাদের না খেয়ে মরা ছাড়া আর রাস্তা থাকবে না।
সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বশির আহমদ সরকার জানান, এবছর হাওরের পানি তাড়াতাড়ি নিষ্কাষিত হওয়ায় কৃষকদের বোরো ধান রোপণে একটু সমস্যা হচ্ছে। পানির অভাবে তারা আশামতো ফসল রোপণ করতে পারছেন না। তাই আমাদের যে গতিতে রোপণ কাজ হওয়ার কথা তা অনেকটা ধীরগতিতে হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আমি জেলা সমন্বয় সভায় সেচের জন্য পাম্প প্রস্তুত রাখতে বিএডিসি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলাম। বোরো আবাদের জন্য প্রকৃতির উপর আমাদের কিছুটা নির্ভর করতে হবে, প্রকৃতি যদি সদয় থাকে পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সকলের সহযোগিতায় এই সমস্যা থেকে কাটিয়ে উঠা সম্ভব।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com