1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৪০ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

সঞ্চয়পত্রে বাধ্যতামূলক হচ্ছে ‘টিআইএন’ ও ‘এনআইডি’

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০১৯

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
জাতীয় সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগকারীদের জন্য আয়কর সনদ (টিআইএন) ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। সঞ্চয়পত্র খাতে অপ্রদর্শিত অর্থ (কালো টাকা) বন্ধে এই উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সরকার। শিগগিরই নির্বাচন কমিশন ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে এ বিষয়ে চুক্তি করবে জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতর। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতরের মহাপরিচালক শামসুন্নাহার বেগম গণমাধ্যমকে বলেন, সঞ্চয়পত্র খাতে টিআইএন অন্তর্ভুক্ত করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে ইতোমধ্যে যোগাযোগ হয়েছে। শিগগিরই এনবিআরের সঙ্গে এ বিষয়ে একটি চুক্তি করা হবে।
শামসুন্নাহার বেগম আরও বলেন, কোন শ্রেণির ব্যক্তিরা সঞ্চয়পত্র কিনছেন, সে ব্যাপারে এখন পর্যন্ত সঞ্চয় অধিদফতর কোনও গবেষণা করেনি। ফলে সমাজের কারা বা কোন শ্রেণির ব্যক্তিরা সঞ্চয়পত্র বেশি কিনছেন, তারও হিসাব নেই।
তবে ১৮ বছরের বেশি বয়সী বাংলাদেশের যেকোনও সুস্থ নাগরিক সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন বলেও জানিয়েছেন সঞ্চয় অধিদফতরের মহাপরিচালক শামসুন্নাহার বেগম।
এদিকে সম্প্রতি সরকারের ঋণ ব্যবস্থাপনা কমিটির এক বৈঠকে সঞ্চয়পত্র খাতে টিআইএন সনদ ও এনআইডি বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।
এ প্রসঙ্গে এনবিআরের এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, যেহেতু সঞ্চয়পত্রের ডাটাবেজ তৈরি হচ্ছে, সেহেতু এর সঙ্গে টিআইএন লিংক যুক্ত করার সুযোগও থাকবে।
তিনি আরও বলেন, টিআইএন সনদ বাধ্যতামূলক করলে বিনিয়োগকারীদের কিছুটা বিড়ম্বনা হলেও সরকারের রাজস্ব বাড়বে। আবার সরকারের ঋণ ব্যবস্থাপনায় যে চাপ সৃষ্টি হচ্ছে তাও কমে আসবে।
ধারণা করা হচ্ছে, কালো টাকার একটা বড় অংশ সঞ্চয়পত্র খাতে বিনিয়োগ হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, সরকারের লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি পরিমাণে বিক্রি হচ্ছে সঞ্চয়পত্র। এতে সরকারের ঋণ ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। পাশাপাশি ব্যাংক খাতের ঋণ ব্যবস্থাপনায়ও বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। মূলত, ব্যাংকের আমানতের সুদের চেয়ে দ্বিগুণ মুনাফা মিলছে সঞ্চয়পত্রে। এ কারণেই সঞ্চয়পত্র বিক্রি বাড়ছে।
এদিকে প্রতিবছর সঞ্চয়পত্রের পেছনে বিপুল পরিমাণ সুদ গুনতে হচ্ছে সরকারকে, যা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে আদায় করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। আবার সরকারের বিপুল পরিমাণ সুদ গুনতে গিয়ে ঋণ ব্যবস্থাপনায় তৈরি হচ্ছে বড় ধরনের ঝুঁকি। অন্যদিকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর তহবিলেও টান পড়ছে।
এ প্রসঙ্গে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, কালো টাকার একটা বড় অংশ সঞ্চয়পত্র খাতে বিনিয়োগ হচ্ছে। আর এই পণ্যটি, মানে সঞ্চয়পত্র কিনছে ধনীরাই।
তিনি আরও বলেন, সাধারণ বা স্বল্প আয়ের মানুষ ও পেনশনভোগীদের কথা বলা হলেও বাস্তবে ৯০ শতাংশ সঞ্চয়পত্র কিনছেন বড় পদের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, রাজনীতিবিদ ও ধনাঢ্য ব্যক্তিরা। ৮৫ শতাংশ সঞ্চয়পত্র মাত্র ১২ শতাংশ লোকের কাছে বিক্রি হচ্ছে। আর মাত্র ১৫ শতাংশ সঞ্চয়পত্র বিক্রি হচ্ছে বাকি ৮৮ শতাংশ লোকের কাছে।
এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য থেকে জানা যায়, দেশে বিনিয়োগ পরিস্থিতির উন্নতি না হলেও অব্যাহতভাবে বাড়ছে সঞ্চয়পত্র বিক্রি। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের (জুলাই-নভেম্বর) প্রথম পাঁচ মাসে ২১ হাজার ৬৬২ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে, যা এই অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রির মোট লক্ষ্যমাত্রার ৮২ দশমিক ৬৯ শতাংশ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২৬ হাজার ১৯৭ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার।
প্রসঙ্গত, মূলত সামাজিক ও আর্থিক সুরক্ষা দেওয়ার জন্য সরকার নিম্ন-মধ্যবিত্ত, সীমিত আয়ের মানুষ, বয়স্ক, অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য জাতীয় সঞ্চয় প্রকল্পগুলো চালু করে।
জানা গেছে, মূলত দুটি কারণে সবাই সঞ্চয়পত্রের দিকে ঝুঁকছে। প্রথমত, গ্রাহকদের কাছে অর্থের উৎস জানতে চাওয়া হয় না। দ্বিতীয়ত, সঞ্চয়পত্রের সুদের হার যেকোনও আমানতের সুদের হারের চেয়ে অনেক বেশি। তবে সঞ্চয় অধিদফতরের মহাপরিচালক শামসুন্নাহার বেগম মনে করেন, সঞ্চয়পত্র যারা কেনেন তারা সুদের হার ছাড়াও এখানে টাকা রাখাকে নিরাপদ ভাবেন।
এদিকে, বেসরকারি ব্যাংকগুলো গত বছরের ১ জুলাই থেকে তিন মাস মেয়াদি আমানতের সর্বোচ্চ সুদের হার ৬ শতাংশ নির্ধারণ করার পর সঞ্চয়পত্রের প্রতি মানুষের আগ্রহ আরও বেড়েছে। অনেকেই ব্যাংক থেকে টাকা তুলে সঞ্চয়পত্র কিনে রাখছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, বর্তমানে দেশে বিভিন্ন সঞ্চয় প্রকল্পের গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ২ কোটি।
উল্লেখ্য, বর্তমানে জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতরের চালু করা চার ধরনের সঞ্চয়পত্র রয়েছে। এগুলো হলো- পাঁচ বছর মেয়াদি পরিবার সঞ্চয়পত্র, পাঁচ বছর মেয়াদি পেনশনার সঞ্চয়পত্র, পাঁচ বছর মেয়াদি মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র এবং তিন বছর মেয়াদি ও তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র। এগুলোর গড় সুদের হার ১১ শতাংশের বেশি।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com