1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:০৮ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

সিন্ডিকেটমুক্ত সীমান্ত হাট চাই

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৮

সীমান্ত হাটে কোনও মাল খুচরা বিক্রি হয় না। পত্রিকার বর্ণনা মতে সেখানে, ‘বাংলাদেশ-ভারতের ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে খুচরো পণ্য বিক্রি না করে পাইকারি বিক্রি করছে।’ সিন্ডিকেট করে পণ্য বিক্রি করার একটা বিশেষ তাৎপর্য আছে। পুঁজিবাদী অর্থনীতি পরিচালিত হয়ে থাকে সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জনের স্বার্থে। বলা বাহুল্য, সীমান্ত হাট অর্থনীতির সে-নীতির বাইরের কোনও বাজার নয়। এখানেও দুই দেশের ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে তাদের সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জনের ব্যবস্থাটি ঠিকই করে নিয়েছে, তাতে কোনও অন্যথা হয়নি। দুই দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতেই এই পাইকারি বিক্রির ঘটনাটি ঘটছে, তাঁরা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন। পাইকারি বিক্রির কারণে বাংলাদেশের সাধারণ ক্রেতারা দ্বিগুণ দামে পণ্য ক্রয় করতে বাধ্য হচ্ছেন এবং মাঝপথে দ্বিগুণাধিক মুনাফা লাভ করছেন মধ্যস্বত্তভোগী একশ্রেণির ব্যবসায়ীরা। এমনকি ঢাকার ব্যবসায়ীরা পর্যন্ত দালাল নিয়োগ করে এখান থেকে মাল ক্রয় করে নিয়ে গিয়ে চুটিয়ে ব্যবসা করছেন, বিপুল পরিমাণ লাভ তাঁরা পকেটস্থ করছেন। সীমান্ত হাট খোলার উদ্দেশ্য ছিল, সীমান্তের সাধারণ মানুষজনের কম দামে পণ্য পাওয়াকে নিশ্চিত করা। কিন্তু বাস্তবে মোটেও সেটা হচ্ছে না, বরং সীমান্ত হাটে সাধারণ মানুষ দ্বিগণ দামে পণ্য ক্রয় করছেন, ১ টাকার জিনিসটা কিনছেন ২ টাকায়। এর নিহিতার্থ একটাই, সিন্ডিকেট করে পাইকারি বিক্রির ব্যবস্থা কার্যকর রেখে অর্থাৎ খুচরা বিক্রির ব্যবস্থাকে বন্ধ করে দিয়ে ক্রেতার কাছে দ্বিগুণ দামে পণ্য বিক্রির ব্যবস্থাটিকে নিশ্চিত করে নিয়ে প্রকৃতপ্রস্তাবে অন্যায়ভাবে লুট করা হচ্ছে, ক্রেতার যে-দামটা কম দেওয়ার কথা ছিল সে দামটা। মুক্তবাজার অর্থনীতির নীতিতে মুনাফা বললেও, এটাকে যেমন এক অর্থে লুট বলা যায়, তেমনি বলা যায় দিনে দুপুরে চুরি কিংবা ডাকাতি। এই ডাকাতি বন্ধ করা উচিত। অর্থাৎ সীমান্ত হাটকে সীমান্তের মানুষকে শোষণের উত্তম হাতিয়ারে পরিণত করা হয়েছে। এই হাট সীমান্তের মানুষের কোনও মঙ্গল না করে বরং অমঙ্গলই করছে। সাধারণ মানুষের পকেটের টাকা লুট করার সুবিধা কয়েকজন ব্যবসায়ীকে দেওয়ার স্বার্থে সীমান্ত হাট খোলে রাখার কী সার্থকতা থাকতে হতে পারে, সেটা বোধগম্য নয়। সীমান্ত হাট যদি পাইকারি ক্রেতাদের হাট হয়ে থাকে তবে সরকারের উচিৎ এই হাটকে ব্যবসায়ীদের জন্য একচেটিয়া হাট করে দিয়ে সাধারণের জন্য নিষিদ্ধ করে দেওয়া। সীমান্ত হাটের অবস্থা এমন যে, দুই দেশের চুক্তি মোতাবেক সীমান্ত হাটের আইন কিংবা নিয়ম কেউ মানছে না এবং সে আইন না মানার কোনও প্রতিকারও হচ্ছে না, উভয় দেশের কোনও কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে। ভারতীয়রা পাইকারি নিয়মে নয়, খুচরা নিয়মে বাংলাদেশের মানুষের কাছে মাল বিক্রি করার কথা । কিন্তু বাংলাদেশীরা মাল চুরি করে নিয়ে যায়, এই রকম একটি অনির্ধারিত অজুহাত তোলে তাঁরা খুচরা বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন এবং এই অনিয়ম বন্ধের জন্য ভারতীয়দেরকেও কোনও চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে না বাংলাদেশের পক্ষ থেকে। সীমান্ত হাট খোলার সুবিধাটা যা সাধারণ মানুষের প্রাপ্য ছিল তা প্রকারান্তরে ব্যবসায়ী ও তাঁদের সঙ্গে আঁতাততে লিপ্ত কীছু স্বার্থান্বেষী মানুষ ছিনিয়ে নিয়েছেন। প্রশাসন তা দেখেও দেখছে না। শোনেও শুনছে না। সীমান্ত হাট ব্যবস্থাপনা কমিটি ও সংশ্লিষ্ট থানা যথারীতি সীমান্ত হাটে খুচরো বিক্রি বন্ধের বিষয়টি স্বাভাবিকভাবেই অনবগত। এমনকি খুচরো বিক্রির পক্ষে যুক্তি দেখাতে, সীমান্ত হাটের সার্বিক অবস্থা পরিদর্শনে নিরত পরিদর্শক সীমান্ত হাটের ক্রেতার কাছে অধিক পরিমাণের পণ্য দেখতে পেলে সেটা একজন ক্রেতা কয়েকজনের পণ্য বহন করার মতো একটা কীছু হিসেবে ধারণা করছেন। যা প্রমাণ করে সিন্ডিকেটের বিস্তৃতি অনেক গভীর ও শক্তপোক্ত। সীমান্ত হাটকে জনকল্যাণমুখী করতে হলে এই হাটকে সিন্ডিকেট মুক্ত করে মাল পাইকারি বিক্রি করার অবৈধ নিয়ম বন্ধ করতে হবে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com