গতকালের দৈনিক সুনামকণ্ঠের একটি সংবাদশিরোনাম ছিল, “ট্রাম্প আসায় ‘ইউনূসযাতনা’ থেকে মুক্তি মুহিতের”। আমাদের প্রিয় অর্থমন্ত্রী ‘পরিত্রাণ’ পেয়েছেন, ভালো কথা, কিন্তু বাংলাদেশ কি পরিত্রাণ পেয়েছে ইউনূস কিংবা ইউনূসের মতো কোনও কোনও উচ্চসুদ গ্রহিতা মহাজনের হাত থেকে? প্রশ্নটি থেকেই যায়। তারা এমন শক্তিধর যে, এমনকি এমন মহাজনকে নোবেল শান্তি পুরস্কার পর্যন্ত প্রদান করা হয়ে থাকে। বর্তমান সামগ্রিক অবস্থা বিবেচনায় বাংলাদেশে এইরকম প্রশ্ন করার বাস্তবিকতা বাস্তবিক অর্থেই এখনও বিদ্যমান আছে বলেই মনে হয়। অর্থাৎ তারা কেউ কেউ এখনও সা¤্রাজ্যবাদের কোনও না কোনও সুবিধা লাভ করে দেশের অনিষ্টসাধনে ব্যাপৃত আছেন।
উপনিবেশিক শাসকের দালালি করার ইতিহাস চাটুকারদের নতুন নয়। ব্রিটিশ আমল থেকে তারা সেটা করে আসছে দারুণ দক্ষতার সঙ্গে। সে-দালালির বদৌলতে আমরা বাঙালিরা অর্জন করেছিলাম পাকিস্তানের গোলামি। বাঙালিকে সে-দালালির দাম পরিশোধ করতে গিয়ে ত্রিশ লক্ষ তাজা প্রাণ উৎসর্গ করতে হয়েছে এবং সাড়ে চার লক্ষ নারীকে দিতে হয়েছে ইজ্জত এবং ঘাড়ে নিতে হয়েছে বিশাল পশ্চাদপদতার পাহাড় সমান ভার। সে-ভার ঘাড় থেকে নামাতে বঙ্গবন্ধুকে প্রাণ দিতে হয়েছে, তাঁর কন্যাকে এখন প্রাণান্ত লড়াই করতে হচ্ছে শত প্রতিকূলতার মোকাবেলায়। তারপরও, স্বাধীনোত্তর কালেও বিদেশি প্রভুর দালালির উত্তরাধিকারের চাপ সহ্য করতে হয় কিংবা হচ্ছে বাংলাদেশকে এবং আমাদের অর্থমন্ত্রীকে আমেরিকায় গিয়ে প্রশ্নের সম্মুখিন হতে হয়েছে, প্রত্যোত্তরে বলতে হয়েছে, “গ্রামীণ ব্যাংকের সঙ্গে এখন আর মুহাম্মদ ইউনূসের কোনো সম্পর্ক নেই।” অথবা হিলারি ক্লিনটন ও বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রেসিডেন্ট ঢাকায় এলে শুনতে হয়েছে ইউনূসকে সরানোর সিদ্ধান্ত তাদের মনোমতো হয়নি ইত্যাদি ইত্যাদি সা¤্রাজ্যবাদী খবরদারিত্বের নিপীড়নজ্বালা। এই জ্বালার উপজ্বালাগুলো হলো ইউনূসের মতো দালাল ব্যক্তি বিশেষরা।
সময় বদলে গেছে। বাংলাদেশের উচিত এই দালালদের খোঁজে বের করা এবং তাঁদের বিষদাঁত ভেঙে দিয়ে অবমুক্ত করা। আর কেউ যেনো খুঁটির জোরে বকরি নাচের নাচন দেখাতে না পারে।