1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:২৯ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

বর্ণবৈষম্যের চর্চা প্রকারান্তরে গণতন্ত্রের বিকাশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করছে

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১০ জুলাই, ২০১৮

এক সংবাদ প্রতিবেদনে প্রকাশ- শাল্লা উপজেলার নারকিলা নামক গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়তে গিয়ে গ্রামের একাংশের ছাত্ররা বর্ণবৈষম্যের শিকার হচ্ছে। ভুক্তভোগী ছাত্রদের অভিযোগ, তাদের পূর্বসূরিদের চুরি পেশার উল্লেখ করে অপর সহপাঠীরা তাদেরকে প্রতিনিয়ত হেয় প্রতিপন্ন ও লাঞ্ছিত করতে কসুর করে না।
বর্ণবৈষম্যের অনেক অনেক কা-কারখানার ঐতিহাসিক উদাহরণ ও ঘটনা বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্নভাবে বিস্তৃত হয়েছে ও এখনও রয়েছে। সে-সম্পর্কে মানুষের জানাশোনা কিংবা সম্যক ধারণা নতুন কীছু নয়। কিন্তু চৌর্যবৃত্তিকে অবলম্বন করে উদ্ভূত বর্ণবৈষম্যের সামাজিক বিস্তার দিরাই শাল্লার একটি আলাদা বৈশিষ্ট্য, সেটা বোধ করি কারো কারো কাছে বর্ণবৈষম্যের একটি নতুন ধরণ বলে মনে হতে পারে।
প্রশ্ন হলো কে চোর নয়? কোনও কোনও দুর্মুখ দার্শনিক নির্দ্বিধায় বলে দিয়েছেন, বর্তমানের সমাজটা চুরি করার মূল কর্মকা- থেকেই সৃষ্ট। শুরুতে এক শ্রেণির মানুষ সামাজিক সম্পদ চুরি করে ধনী হলো, অপরদিকে এই চুরির অনিবার্য ফল হিসেবে সম্পদবঞ্চনার শিকার হয়ে অন্যশ্রেণির মানুষ সম্পদহীন হয়ে গরিব হয়ে পড়লো। সমাজের প্রকৃত ইতিহাস এটাই। ইতিহাসের একটি কালপর্বে ধনীর (যে ইতোপূর্বে চুরি করেই ধনী হয়েছে) বাড়িতে গরিব (যে চুরি করে ধনী হয়নি) বাঁচার তাগিদে চুরি করতে গেল। এই চলছে সর্বত্র। চুরি আর বন্ধ হচ্ছে না, বরং চুরি করার পদ্ধতির সংস্করণ তৈরি করা হয়েছে, মুনাফা তার চূড়ান্ত বিকশিত রূপ, তৈরি হয়েছে ব্যাংক। আর এর নিরিখেই গড়ে উঠছে বর্তমানের ন্যায়-অন্যায়, আইন-কানুন, নীতি-দুর্নীতি, চুরি-অচুরির বোধবুদ্ধির যাবতীয় ধারণা, কিংবা নারকিলা গ্রামের বর্ণবৈষম্য। চূড়ান্ত বিবেচনায় নারকিলার দুটি পক্ষই চোর। একজনের চুরি করার ঘটনাটি সমাজবাস্তবতার মুখোশ দিয়ে ঢাকা ও অন্যজনের কোনও মুখোশ নেই। বরং এক বিবেচনায় বর্ণষৈম্যের শিকার ছাত্ররা চোর নয়, তারা চুরির ঘটনা থেকে বর্তমানে বিচ্ছিন্ন আছে, যেহেতু তারা গরিব, ঐতিহাসিক বাস্তবতার নিরিখে গরিব কখনও চোর নয়। জেনে রাখা ভালো যে, গরিব যখন চুরি করে এবং আইন তাকে আর চোর বলে না, তখনই গরিব আর গরিব থাকে না, ধনী হয়ে যায়। ধনীরা এজন্যই চোর নয় যে, ধনীদেরকে আর চোর বলা হয় না।
নারকিলার ছাত্রদের একাংশের বর্ণবৈষম্যের শিকার করার কোনও কার্যক্রম সরকার নারকিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চালু করেননি। সেখানে আলোচিত বর্ণবৈষম্যকে সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্যই কঠোর হস্তে দমন করা উচিত। ভুলে গেলে চলবে না যে, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দেশে গণতন্ত্রের বিকাশে প্রাণপাত চেষ্টায় ব্রত আছেন। তাঁর সরকারের পতাকা তলে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বর্ণবৈষম্যের চর্চা প্রকারান্তরে গণতন্ত্রের বিকাশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করছে। যে-সব শিক্ষক বিদ্যালয়টিতে কাজ করছেন, আপতত তাঁরা এই অপরাধের প্রতিকারে কোনও ভূমিকা রাখতে যদি ব্যর্থ হন তবে তাদেরকে উক্ত বিদ্যালয় থেকে প্রত্যাহার করা হোক এবং অন্তত বিদ্যালয়ের ভেতরে বর্ণবৈষম্য প্রতিরোধে সক্ষম শিক্ষককে সেখানে নিয়োগ দেওয়া হোক।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com