1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১০:২৪ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

সৃজনশীল মানুষ চাইলে উপযুক্ত শিক্ষক চাই

  • আপডেট সময় শনিবার, ১৯ মে, ২০১৮

‘শিক্ষায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি শীর্ষক সভা’। এটি একটি সংবাদ শিরোনাম। গতকালের দৈনিক সুনাকণ্ঠে ছাপা হয়েছে। বেশ দীর্ঘ সংবাদ। পত্রিকার দুই কলাম ব্যাপী বিস্তৃত বর্ণনা। সংবাদ পরিবেশন করতে গিয়ে পত্রিকা সাধারণত মূল বিষয়বস্তুর এতোটা গভীরে প্রবেশ করে না প্রায়ই। শেষপর্যন্ত সংবাদটা দায়সারামতো হয়ে পড়ে। কিন্তু এই সংবাদটা একটু বিস্তৃত আকারে পরিবেশিত হয়েছে। সুদীর্ঘ সংবাদবিবরণীর সারার্থ হলো : ১. প্রধান শিক্ষক ও এসএমসি’র সভাপতিগণ স্থানীয় পর্যায়ে বিদ্যালয়ের অভিভাবক। ২. বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত সমস্যা সরকারি বরাদ্দ প্রাপ্তির মাধ্যমে ধীরে ধীরে সমাধান হবে অর্থাৎ উন্নয়ন সম্পন্ন হবে। ৩. এসএমসি’র দায়িত্বানুসারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সঙ্গে বিদ্যালয়ের নিজস্ব ও সরকারি সম্পদ ব্যবহার করে শিক্ষাসেবার মানোন্নয়ন সম্ভব। অর্থাৎ এককথায় সভাটি ‘স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সাথে গুণগত শিক্ষার মান নিশ্চিতকরণে এসএমসি’র দায়িত্ব ও কর্তব্য’ বিষয়ক উপস্থাপনা।
যে-কারও স্বাভাবিকভাবেই মনে হতে পারে যে, সত্যিকার অর্থে এই রকম একটি সুপরিকল্পিত কর্মসূচি যখন কোনও একটি দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় চলে বা চলতে থাকবে তখন সে-দেশের শিক্ষাব্যবস্থা অবশ্যই উন্নয়নের পূর্ণতা পেতে বাধ্য। কিন্তু প্রকৃতপ্রস্তাবে আমাদের দেশের বাস্তব শিক্ষা পরিস্থিতি কিন্তু সম্ভাবনার সে-স্বর্ণতোরণ খোলে দিচ্ছে না। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, এমসিকিউ প্রশ্ন পদ্ধতি আনা হয়েছিল শিক্ষাকে আধুনিক করে শিক্ষার্থীকে অধিকতর মেধাবী করার জন্য। কিন্তু এখন বিশেষজ্ঞরা বলছেন : পরীক্ষা সৃজনশীল না হয়ে প্রশ্ন হয়ে পড়েছে সৃজনশীল এবং পরীক্ষার্থীর মেধা বিকাশ বিঘিœত হয়ে পড়েছে, সৃজনশীল মানুষ তৈরি হচ্ছে না, তৈরি হচ্ছে নকলবাজ। অর্থাৎ হিতে হয়েছে বিপরীত।
একদিকে দেশে ‘স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সাথে গুণগত শিক্ষার মান নিশ্চিতকরণে এসএমসি’র দায়িত্ব ও কর্তব্য’ বিষয়ক উপস্থাপনা করা হচ্ছে। অন্যদিকে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কিংবা বলা ভালো দেশের সর্বত্র অর্থাৎ সমগ্র দেশ মানহীন শিক্ষায় সয়লাব হয়ে যাওয়া বন্ধ হচ্ছে না। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নয়, এসএমসিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে শিক্ষার মানোন্নয়নের। সেখানে উন্নয়নের নামে সরকারি বরাদ্দ পকেটস্থ করার মওকা তৈরি করা হয়েছে এবং বলা হচ্ছে, ‘বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত সমস্যা সরকারি বরাদ্দ প্রাপ্তির মাধ্যমে ধীরে ধীরে সমাধান হবে’। হাওররক্ষাবাঁধ নির্মাণের ক্ষেত্রে ঠিকাদার ও পিআইসি’র বরাদ্দ লুটের ভূমিকা দেশ প্রত্যক্ষ করেছে। আর শিক্ষার মানোন্নয়নে শিক্ষক ও এসএমসি’র ভূমিকা প্রত্যক্ষ করছে শিক্ষার অধঃপতনকে প্রত্যক্ষ করে।
এই মুহূর্তে দেশের সার্বিক অবস্থা এমন যে, কোথাও ‘স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা’র চর্চা হচ্ছে কিংবা হবে, এমন বাস্তবতায় কেউই আস্থা প্রকাশ করবে না কিংবা এমনটা কেউই মানতে চাইবে না। কারণ দেশের বাস্তব আর্থসামাজিক বিন্যাসের সঙ্গে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার নীতি বস্তুগতভাবে খাপ খায় না, সেখানে বরং দুর্নীতিই খাপ খায়। টাঙ্গুয়ার হাওর রক্ষণাবেক্ষণে এনজিও যেমন শেষ পর্যন্ত নিজেদের ব্যর্থ প্রমাণিত করেছে তেমনি শিক্ষা প্রশাসনও নিজেদেরকে শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ প্রতিপন্ন করবেন, যদি কর্তৃপক্ষ শিক্ষার উন্নয়নে ‘বিদ্যালয়ের নিজস্ব সম্পদ ও সরকারি সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এসএমসি তাঁদের দায়িত্ব-কর্তব্য অনুযায়ী স্বচ্ছতার সাথে ভূমিকা রাখা’র নীতিনির্ভরতা থেকে সরে আসতে না পারেন। শিক্ষার মানোন্নয়নে প্রশাসনকে যা করতে হবে, সোজা কথায় সেটা বলতে গেলে বলতে হয়, আগে এমন শিক্ষক নিয়োগ করুন যে-শিক্ষক শিক্ষার মানোন্নয়ন নিশ্চিত করতে পারবেন। শিক্ষকের মানকে অনুন্নত রেখে শিক্ষাকে উন্নত করা যাবে না। টাকা বরাদ্দ, কাঠামো উন্নয়ন, উপবৃত্তি দেওয়া, শিক্ষার্থীকে পেট পুরে খাওয়ানো, শিক্ষা উপকরণের উন্নতি, সবকীছুই হবে কিন্তু উন্নত শিক্ষা পাওয়া যাবে না, মেধাবী ও সৃজনশীল মানুষ সৃষ্টি সম্ভব হবে না। সৃজনশীল মানুষ চাইলে উপযুক্ত শিক্ষক চাই।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com