সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
খালেদা জিয়ার বন্দিত্ব নিয়ে বিএনপি নেতাদের সমালোচনার জবাবে কারাগারকে ‘স্বস্তির’ বলেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেছেন, “(খালেদা জিয়া) বাইরে নানান ঝুটঝামেলায় থাকেন, কারাগারে তো একটু শান্তি ও স্বস্তিতে থাকার জায়গা। তিনি যেখানে আছেন, আমিও সেই জেলে ছিলাম, ওয়ান ইলেভেনের আগে এবং পরেও ছিলাম।”
শুক্রবার নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইলে দ্বিতীয় কাচপুর সেতুর সুপার স্ট্রাকচার উদ্বোধন শেষে বিএনপি চেয়ারপারসনের কারাবাস নিয়ে সাংবাদিকদের কথায় নিজের কারাবাসের কথা বলেন কাদের।
জিয়া এতিমখানা দুর্নীতি মামলায় সাজার রায়ের পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদাকে রাখা হয়েছে নাজিমউদ্দিন সড়কের পুরনো কারাগারে। পরিত্যক্ত কারাগারে তাকে রাখার মধ্য দিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন ঘটছে বলে বিএনপি নেতাদের অভিযোগ।
কাদের বলেন, খালেদা জিয়াকে তো নেলসন ম্যান্ডেলার মতো রোবেন দ্বীপে পাঠানো হয়নি। কারাগারে জনাকীর্ণ পরিবেশ তার জন্য কী করে রাখব? কারাগার তো নির্জন। একটা নিরিবিলি পরিবেশ আছে। বেগম জিয়া গান শুনতে পাবেন, বই পড়তে পারবেন, কারাগারে যা হয়। প্রচুর বই আছে ঢাকা জেলে। ভালো কিছুদিন তার আরামদায়ক বিশ্রামেরও সুযোগ তার জন্য হল।
বিশেষ বন্দির সব মর্যাদাই খালেদা জিয়া পাচ্ছেন জানিয়ে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী কাদের বলেন, এমনকি তার গৃহকর্মীকেও তিনি সঙ্গে নিয়ে আছেন, যেটা এদেশে নজিরবিহীন ঘটনা। এই সুযোগ বাংলাদেশের কেউ পায়নি। তিনি যে রুমে থাকেন, সেই রুমটায় গিয়ে দেখে আসেন। এটা জেল সুপারের রুম, অনেক সুন্দর রুম। এ রুম যদি পরিত্যক্ত হয়, সে হিসেবে তো ঢাকা জেলই তো পরিত্যক্ত।
দুর্নীতি মামলায় দ- নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন কারাগারে যাওয়ায় তার প্রতি সাধারণ মানুষের কোনো সহানুভূতি তৈরি হয়নি বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ স¤পাদক।
“বিএনপির ডাকে জনগণ সাড়া দিচ্ছে না, আন্দোলনে যেতে পারছে না। নিজেরাই দুই-একজন কান্নাকাটি করছে মিডিয়ার সামনে। পাবলিক কোথাও কেঁদেছে, এটা আমাদের জানা নেই।”
বিএনপির বর্তমান শান্তিপূর্ণ আন্দোলনও ‘বাধ্য হয়ে’ বলে মনে করেন কাদের।
“খালেদা জিয়ার দুর্নীতির মামলায় সাজা এবং কারাগারে যাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নামবে এমন অপেক্ষায় ছিল বিএনপি। কিন্তু জনগণের সাড়া না পেয়ে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের কৌশল অবলম্বন করেছে।”
বিএনপির কোনো কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা দিচ্ছে না বলেও দাবি করেন এই মন্ত্রী।
“তারা আদালতের বিরুদ্ধে কর্মসূচি পালন করছে। এই কর্মসূচি সরকারের বিরুদ্ধে নয়, এটা তাদের মনে রাখতে হবে। আদালতের বিরুদ্ধে কর্মসূচি, তারপরও পুলিশ কোনো বাধা বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেনি।”
আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে চাইলেও দলটি নিজ থেকেই সরে পড়ার অজুহাত খুঁজছে বলে দাবি করেন কাদের। তারা না এলেও তা নির্বাচন আয়োজনে বাধা হবে না বলেও মনে করিয়ে দেন তিনি।
“বিএনপি যদি নিজেরাই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ায় এবং সরে দাঁড়ানোর অজুহাত তারা যদি প্রদর্শন করতে চায়, তাহলে আমাদের তো কিছু বলার নেই। আমরা বার বার একটা কথা বলেছি, আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নিরামিষ নির্বাচনে যেতে চাই না।”
খালেদা জিয়া ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে না যেতে চাইলে সেক্ষেত্রেও সরকারের কিছু করার নেই বলে জানান তিনি।
“সেটা তো আদালতের বিষয়, সরকারের কোনো বিষয় নেই। বার বার মির্জা ফখরুল সরকারকে অভিযুক্ত করছেন, আদালতের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারছেন না, কারণ কনটেম্পট অব কোর্ট হবে। তাই তারা সরকারকে অভিযুক্ত করছেন।”
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, “আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করেছি, কোনো প্রকার শোন অ্যারেস্টের (অন্য মামলায় খালেদাকে গ্রেপ্তার দেখানো) কথা তিনি বলতে পারেননি। কিছু বিষয়ে বিএনপির অতীতের মতো অন্ধকারে ঢিল ছোড়া পুরনো অভ্যাস।”