বিশেষ প্রতিনিধি ::
সুনামগঞ্জে আলোচিত ছাত্রলীগ নেতা ওয়াহিদ্দুজামান শিপলু হত্যা মামলার রায়ে তাহিরপুর থানার সাবেক ওসি শরিফ উদ্দিনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া তাকে দুই হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো তিন বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রণয় কুমার দাশ এ রায় দেন।
আলোচিত এ মামলা থেকে বেকসুর খালাস পেয়েছেন সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক ও তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. কামরুজ্জামান কামরুল, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান উজ্জ্বল, উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক জুনাব আলী, বিএনপি কর্মী শাহীন মিয়া, শাহজান মিয়া, তাহিরপুর থানার সাবেক উপ-পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০২ সালের ২০ মার্চ তাহিরপুর উপজেলার ভাটি তাহিরপুর গ্রামের বাসিন্দা ও বাদাঘাট কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি ওয়াহিদ্দুজামান শিপলু নিজ বাড়িতে গুলিবিদ্ধ হয়ে খুন হন। এর তিন দিন পর ২৩মার্চ শিপলুর মা আমিরুন নেছা বাদি হয়ে সুনামগঞ্জ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৭জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, রাজনৈতিক বিরোধের জের ধরে তাহিরপুর থানার ওসি শরিফ উদ্দিন ও থানার উপ-পরিদর্শক রফিকুল ইসলামের সহযোগিতায় সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক ও তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. কামরুজ্জামান কামরুল, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান উজ্জ্বল, উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক জুনাব আলী, বিএনপি কর্মী শাহীন মিয়া, শাহজান মিয়া ছাত্রলীগ নেতা ওয়াহিদুজ্জামান শিপলুকে গুলি করে হত্যা করে। আদালত মামলটি আমলে নিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। বিচার বিভাগীয় তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয়া হয়। আদালতে চার্জশিট দেয়ার পর ওসি শরিফ উদ্দিন ও উপ-পরিদর্শক রফিকুল ইসলামকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। দীর্ঘদিন যুক্তিতর্ক শেষে আদালত বৃহস্পতিবার এ মামলার রায় দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী, সুনামগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর খায়রুল কবির রুমেন বলেন, ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় তাহিরপুর থানার ওসিকে আদালত ১০ বছরের কারাদ- দিয়েছেন। কিন্তু অন্য আসামিদের খালাস দেয়ায় আমরা সংক্ষুব্ধ। এর রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে যাব। তিনি জানান, কারাদণ্ড পাওয়া সাবেক ওসি শরিফ উদ্দিন বর্তমানে কারাগারে আছেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল হক বলেন, আমরা মামলার রায়ে খুশি, রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করার জন্য মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল। আদালত ৭ আসামির মধ্যে ৬ জনকেই খালাস দিয়েছেন।