1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৩৮ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

ইতিহাসের নায়ক বঙ্গবন্ধু : মতিউর রহমান

  • আপডেট সময় সোমবার, ১৪ আগস্ট, ২০১৭

কবির কল্পনা, শিল্পীর তুলি, জ্ঞানী-গুণী মহাজনদের লেখনীতে ফুটে উঠে একটি নাম, একটি প্রত্যয়Ñ সোনার বাংলা। বিদেশিরা এই সোনার বাংলার রূপ-রস, নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য-সম্পদে আকৃষ্ট হয়ে বারবার আক্রমণ করেছে। কখনোবা ধর্মের নামে, কখনোবা বাণিজ্যের দোহাই দিয়ে এদেশকে পদদলিত করেছে। মোঘল, পাঠান, ইংরেজ, ডাচ, ওলন্দাজ, পর্তুগীজরা বিভিন্ন সময় বাঙলার শাসকগোষ্ঠীকে পরাজিত করে ক্ষমতায় এসে নানাবিধ অত্যাচার-অনাচার, হত্যা, লুণ্ঠন, ধর্ষণসহ বিভিন্ন অপকর্ম করেছে। এই সমস্ত লুণ্ঠনকারীদের বিরুদ্ধে বাংলার মানুষ কখনো কখনো প্রতিরোধ করেছে কিন্তু বিদেশিদের কূটচালে বার বার পরাজয়ের কলংক তিলক মুছতে পারেনি শুধু অনৈক্যের কারণে।
কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ বাংলার মানুষের অনৈক্য দেখে বলেছেনÑ “সাড়ে সাত কোটি মানুষেরে বাঙালি করে রেখেছো হে মুগ্ধজননী, মানুষ করোনি।”
নেতাজী সুভাষ বসু বলেছিলেনÑ “তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব।” নেতাজীর আজাদ হিন্দ ফৌজে গিয়ে হাজার হাজার বাঙালি যুদ্ধ করেছে কিন্তু নেতাজী স্বাধীনতা দিতে পারেননি।
শেরে বাংলা একে ফজলুল হক বাঙালির অনৈক্য দেখে বলেছেনÑ “ব্যাঙ যেমন এক পাল্লায় উঠেনা, তেমনি বাঙালিও একসূত্রে গ্রথিত হতে পারে না।”
পলাশীর যুদ্ধে ইংরেজদের বিজয়ের দুইশত বছর পর ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ স্বাধীনতা লাভ করে। পূর্ব বাংলা পড়ে পাকিস্তানের অংশে। পাকিস্তান ছিল দ্ইু খ-ে বিভক্ত। একখ- পূর্ব পাকিস্তান, অপরখ- পশ্চিম পাকিস্তান। একটির চেয়ে আরেকটির দূরত্ব ছিল বারশত মাইল। পাকিস্তান সৃষ্টির পর সর্বপ্রথম পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের উপর পশ্চিম পাকিস্তানিরা আঘাত হানে তাদের মাতৃভাষা বাংলার উপর। তারপর শুরু হয় বিভিন্ন ছলাকলা পূর্ব বাংলার মানুষদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করার তৎপরতা। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বাঙলার মানুষ শিকার হয় তার ন্যায্য অধিকার হতে বঞ্চনার। এই সমস্ত অন্যায়-অত্যাচার আর শোষণের বিরুদ্ধে ন্যায্য কথা বলার তথা বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে বাংলার ভাগ্যাকাশে উদিত হয় এক নতুন সূর্য্যরে, যার নামÑ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
তিনিই সর্বপ্রথম ধাপে ধাপে বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে ১৯৭১ সালে বাঙালি তথা বাঙলার মানুষকে স্বাধীনতার অগ্নিমন্ত্রে দীক্ষিত করে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতার যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। তাঁর প্রজ্ঞা, সাহস ও অকুতোভয় নেতৃত্বে যদিও তিনি পাকবাহিনীর শৃঙ্খলে আবদ্ধ ছিলেন তবুও স্বাধীনতা যুদ্ধ চলে ঐক্যবদ্ধভাবে দুর্বার গতিতে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমরা কাক্সিক্ষত বিজয় ছিনিয়ে নিয়ে আসি।
পাকিস্তানি কারাগার হতে মুক্ত হয়ে বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন ও দেশের শাসন ক্ষমতা গ্রহণ করেন। তাঁর নেতৃত্বে যখন দেশ এগিয়ে চলছিল ঠিক তখন ঘাপটি মেরে থাকা কুচক্রী মহল ও আন্তর্জাতিক সাম্রাজ্যবাদের দোসররা কিছু সংখ্যক বিপথগামী সেনাসদস্যদের নিয়ে ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে তাঁকে রাতের আঁধারে সপরিবারে হত্যা করে। বাংলার মাটিতে রচিত হয় এক কলংকজনক ইতিহাস।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর শুরু হয় ইতিহাস বিকৃত করার তা-ব নৃত্য। ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর স্বার্থে শুরু হয় স্বাধীনতা এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদান অস্বীকার করার পাঁয়তারা। ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থে ইতিহাসের পাতায় আচড় টেনে জাতিকে সাময়িকভাবে বিভ্রান্ত করা যায় কিন্তু সত্যকে ছাই দিয়ে চেপে রাখা যায় না। ইতিহাসের প্রকৃত নায়ককে ইতিহাসের পাতা থেকে নির্বাসন দিতে চাইলেই দেওয়া যায় না। সত্য ইতিহাস একদিন নিজেই কথা বলে উঠে। এ পৃথিবীর ইতিহাসে এমন দৃষ্টান্তের অভাব নেই। ইন্দোনেশিয়ায় তার স্বাধীনতার স্থপতি সুকর্ণকে বিস্মৃতির অন্ধকারে ঢেকে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল কিন্তু পারা যায়নি। মিশরে আনোয়ার সাদাতের আমলে নাসেরকে ইতিহাসের পাতা থেকে করা হয়েছিল নির্বাসিত কিন্তু এখন নাসেরই মিশরের প্রাণপুরুষ। জর্জ ওয়াশিংটনকে বাদ দিয়ে স্বাধীন আমেরিকা, কামাল আতার্তুককে বাদ দিয়ে আধুনিক তুরস্ক, হোচিমিনকে বাদ দিয়ে ভিয়েতনাম, মাও-সে-তুংকে বাদ দিয়ে চীন, মহাত্মাগান্ধীকে বাদ দিয়ে যেমন স্বাধীন ভারতের ইতিহাস হতে পারেনা ঠিক তেমনি বাঙালির ইতিহাসের একটি বাক্যও রচনা হতে পারেনা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বাদ দিয়ে। তাই আজ আমরা গর্বিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন স্বাধীনতা সংগ্রামের একজন সশস্ত্র যোদ্ধা হিসেবে।
অন্নদা শঙ্কর রায়-এর সেই উচ্চারণ আজো করতে চাই
“যতদিন রবে পদ্মা-যমুনা গৌরী মেঘনা বহমান
ততোদিন রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান…
দিকে দিকে আজ রক্ত গঙ্গা, অশ্রু গঙ্গা বহমান
তবু নাহি ভয় হবে হবে জয়
জয় মুজিবুর রহমান।”

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com