ধর্মপাশা প্রতিনিধি ::
ধর্মপাশা উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের নিজ গাবী গ্রামে কুলসুমা আক্তার (৩০) নামের এক পাষাণী মা তার নিজ নবজাতক কন্যা শিশু সন্তানকে পুকুরের পানিতে ফেলে দিয়ে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত সোমবার দিবাগত রাতে নিজ গাবী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নিজ বাড়ি থেকে পাষাণী মা কুলসুমা আক্তারকে গ্রেফতার করেছে ধর্মপাশা থানা পুলিশ।
এলাকাবাসী ও থানা পুলিশ ও নবজাতক শিশুটির পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের নিজ গাবী গ্রামের নেকবর আলীর ছেলে শাহাজুল ইসলামের সঙ্গে ৮/৯বছর আগে পার্শ্ববর্তী বারহাট্টা উপজেলার এলকাছ মিয়ার মেয়ে কুলসুমা আক্তারের বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের পাঁচ বছর বয়সী সুমাইয়া আক্তার ও আড়াইবছর বয়সী শরীফা আক্তার নামের দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। শাহাজুল মিয়ার সংসার কৃষি কাজের ওপর নির্ভরশীল। গত শনিবার রাত তিনটার দিকে তাঁর স্ত্রী আরও একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। গত সোমবার রাত অনুমান দুইটার দিকে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের আড়ালে পাষাণী মা কুলসুমা আক্তার তার নবজাতক শিশুকন্যা সন্তানকে নিয়ে একাকি ঘর থেকে বের হয়ে বাড়ির উত্তর পাশের পুকুরের সামনে গিয়ে ওই শিশুকে পুকুরের পানিতে ছুঁড়ে ফেলে দেন। পরিবারের লোকজন ও আত্মীয় স্বজন শিশুটিকে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে স্থানীয় মাতব্বরদের সহায়তায় ঘটনাটি ধর্মপাশা থানা পুলিশকে জানান। পুলিশ গতকাল মঙ্গলবার বেলা পৌণে দুইটার দিকে সরেজমিনে নিজ গাবী গ্রামে যান এবং শিশুটির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। এক পর্যায়ে নবজাতক শিশুটির মা কুলসুমা আক্তার নবজাতক শিশুটিকে বাড়ির উত্তর পাশে পুকুরের পানিতে ফেলে দিয়েছেন বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেন। তার কথা মতো পুলিশ স্থানীয় জেলেদের সহায়তায় ওইদিন বেলা দুইটার দিকে ওই পুকুর থেকে নবজাতক শিশুটির লাশ উদ্ধার করা করে।
ধর্মপাশা থানার ওসি মো. গোলাম কিবরিয়া জানান, নিজ নবজাতক কন্যা সন্তানকে পুকুরের পানিতে ফেলে দিয়ে মেরে ফেলার কথা স্বীকার করায় কুলসুমা আক্তারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শিশুটির শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। লাশ ময়না তদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনের সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা শাহাজুল ইসলাম বাদী হয়ে স্ত্রী কুলসুমা আক্তারের বিরুদ্ধে থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।