ধর্মপাশা প্রতিনিধি ::
ধর্মপাশা উপজেলার নোয়াগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা ও সহকারি শিক্ষিকা লাঞ্ছিত করার ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামিরা গ্রেপ্তার হচ্ছে না। সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে গত ৯ মার্চ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিপালী রানী দাস বাদী হয়ে এ ঘটনায় জড়িত বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির তৎকালীন সভাপতি সর্বানন্দ তালুকদারসহ পাঁচজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। গত ৭ এপ্রিল ট্রাইব্যুনাল এ মামলার প্রধান আসামি সর্বানন্দ তালুকদারসহ চারজন আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। কিন্তু গ্রেপ্তারি পারোয়ানা জারির তিন সপ্তাহ পার হলেও আসামিদের এখনো পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারছে না। উল্টো আসামিরা বিভিন্নভাবে মামলার বাদীর স্বজনদের এ মামলা তুলে নেওয়ার জন্য একের পর এক হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মামলার এজহার, এলাকাবাসী ও আহত ওই দুই শিক্ষিকার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন সংস্কারের সরকারি অর্থ বরাদ্দসহ নানা বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা ও সহকারি শিক্ষিকার সঙ্গে ওই বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সর্বানন্দ তালুকদারের বিরোধ চলে আসছিল। চলতি বছরের ৩ মার্চ সকাল ৯টার দিকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা ও সহকারি শিক্ষিকা বিদ্যালয়ে গিয়ে যথারীতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান শুরু করেন। ওইদিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সর্বানন্দ তালুকারের নেতৃত্বে ৮-১০জন লোক তখন বিদ্যালয়ে আসেন। তারা শ্রেণিকক্ষ থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকাকে বিদ্যালয় থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। তিনি এতে সম্মত না হওয়ায় তারা তাঁকে কিলঘুষি ও লাথি মারতে মারতে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেন। এ নিয়ে সহকারি শিক্ষিকা প্রতিবাদ করায় কলম দিয়ে তাঁর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে তাঁকে টেনে হিঁচড়ে এবং মারধর বের করে দেওয়া হয়। পরে হামলাকারীরা বিদ্যালয়ের শিক্ষক হাজিরা খাতা নিয়ে যায় ও শিক্ষার্থীদের হাজিরা খাতা ছিঁড়ে ফেলে। গত ৯মার্চ দুই শিক্ষিকাকে মারধরের ঘটনায় বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সর্বানন্দ তালুকদারসহ পাঁচজনকে আাসামি করে সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করা হয়। গত ৭এপ্রিল এ মামলার শুনানীর দিন ধার্য ছিল। ট্রাইব্যুনাল ওইদিন মামলাটি আমলে নিয়ে আসামি সর্বানন্দ তালুকদারসহ চারজন আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকার স্বামী দুলাল তালুকদার বলেন, সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল থেকে এই মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার পর থেকেই আসামি ও তাদের লোকজন আমাদের প্রতি আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেছে। তারা প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করলেও পুলিশ আসামিদের গ্রেফতার করছেন না। উল্টো মামলা তুলে নেওয়ার জন্য আসামিরা আমি ও আমার স্বজনদের একের পর এক ভয়ভীতি দেখানো ও হুমকি দিয়ে আসছে।
ধর্মপাশা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম কিবরিয়া বলেন, এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্টের কোনো কাগজপত্র থানায় এসে না পৌঁছায় আসামিদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হচ্ছে না।