স্টাফ রিপোর্টার ::
তাহিরপুরে অসহায় পরিবার ও স্কুল প্রধানের কাছে অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী নৌকা এবং বন্যা সহনশীল ঘর হস্তান্তর করেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকালে উপজেলা অডিটোরিয়ামে ইনোভেটিভ ডিআরআর ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ-এর আয়োজনে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন তিনি।
এসময় তিনি বলেন, বাংলাদেশের মধ্যে সুনামগঞ্জ জেলা দুর্যোগপ্রবণ জেলা হিসেবে প্রথম। দুর্যোগ বিষয়ে সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে। দুর্যোগের পূর্বাভাস ও সরকারের নির্দেশনা মানতে হবে। কোনোভাবেই অবহেলা করা যাবে না। অবহেলা করলেই ক্ষতিগ্রস্ত হতে হবে। এ সময় তিনি ওয়ার্ল্ড ভিশনের এমন আয়োজনের প্রশংসা করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সালমা পারভীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ-এর সিলেট রিজিওনের সিনিয়র এসিও অফিসার কাজল এ. ড্রং। আইডিপি প্রকল্প স¤পর্কে বিস্তারিত উপস্থাপন করেন প্রজেক্ট ম্যানেজার মোহাম্মদ জাফর আলম। তিনি জানান এডিএইচ জার্মানীর অর্থায়নে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর দুর্যোগ সহনশীলতা জোরদার করার লক্ষ্যে ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ জুন ২০২৩ইং হতে তাহিরপুর উপজেলার সকল (৭ টি) ইউনিয়নে একযোগে আইডিপি প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে আসছে। প্রকল্পটি উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে ৬৯ টি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিকে সক্রিয়করণ ও তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে। ইতোমধ্যে প্রকল্পটি ৩০০০ পরিবারের মধ্যে উন্নতজাতের বিভিন্ন ধরনের সবজি বীজ ও ফলের চারা বিতরণ করেছে ও কমিউনিটি পর্যায়ে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে করণীয়, দুর্যোগ সহিষ্ণু বিকল্প জীাবকা নির্বাহ ও বিভিন্ন বিষয়ে প্রায় আট শতাধিক সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক সেশন ও প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে। তিনি আরও জানান, প্রকল্পটি তাহিরপুর উপজেলার প্রত্যেকটি ইউনিয়নে ১টি করে মোট ৭টি বন্যা সহনশীল সোলার প্যানেলসহ গভীর নলকূপ স্থাপন, ৭০টি কমিউন্যাল ল্যাট্রিন ও ১৪ টি ভাসমান ল্যাট্রিন স্থাপন, ২০টি কমিউন্যাল ওয়াটার পয়েন্টকে বন্যা সহনশীলকরণসহ ডিজিটাল আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেম সেবা চালু করবে।
ইনোভেটিভ ডি আর আর প্রজেক্টের প্রজেক্ট অফিসার অরূপ রতন দাশ জানান, প্রকল্পটির কারিগরি সহায়তায় ইতোমধ্যে তাহিরপুরের সকল ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের জন্য দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন স¤পন্ন হয়েছে এবং তা বাস্তবায়নে ওয়ার্ল্ড ভিশনের কারিগরি সহায়তা অব্যহত থাকবে। তিনি বলেন, প্রদত্ত নৌকাগুলো ১৪ টি মাধ্যমিক স্কুলের দায়িত্বে থাকবে যাতে করে বর্ষা মৌসুমে সংশ্লিষ্ট স্কুলের হতদরিদ্র ও দুর্গম অঞ্চলের ছাত্র-ছাত্রীরা নিয়মিত স্কুলে যেতে পারে এবং বন্যার সময় তা অনুসন্ধান ও উদ্ধার কাজে ব্যবহৃত হয়। একইভাবে আইডিপি প্রকল্প কর্তৃক প্রদত্ত বন্যা সহনশীল ঘরগুলো ৭টি ভূমিহীন হতদরিদ্র পরিবারের দায়িত্বে থাকবে এবং তারা সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করবে, তবে বন্যার সময় বন্যাদুর্গত জনগোষ্ঠীকে সেখানে আশ্রয় নেয়ার সুযোগ দিবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, তাহিরপুর সদর ইউপি চেয়ারম্যান জুনাব আলী, দৈনিক সমকালের তাহিরপুর প্রতিনিধি আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।
এছাড়া উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তাহিরপুর উপজেলার সকল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউপি সচিববৃন্দ, ১৪ টি মাধ্যমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষকবৃন্দ ও স্কুল ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভাপতিবৃন্দ, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের তাহিরপুর এরিয়া প্রোগ্রাম ম্যানেজার বিভুদান বিশ্বাস ও প্রোগ্রাম অফিসারবৃন্দ, ইনোভেটিভ ডি আর আর প্রজেক্ট এর প্রজেক্ট অফিসার রবিন্দ্র যাকোব ত্রিপুরা ও ইউনিয়ন সুপারভাইজার ও ইউনিয়ন ফ্যাসিলিটেটরবৃন্দ।
অনুষ্ঠনটি যৌথভাবে সঞ্চালন করেন ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ এর প্রজেক্ট অফিসার অরূপ রতন দাশ ও জুনিয়র অফিসার ক্লিওপা কথা বাগচী।