সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
পবিত্র লাইলাতুল কদর বা শবে কদর আজ। যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে আজ শনিবার সন্ধ্যা থেকে সারাদেশে পবিত্র শবে কদর পালিত হবে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মহান রাব্বুল আলামিনের নৈকট্য ও রহমত লাভের আশায় ইবাদত বন্দেগির মাধ্যমে পবিত্র লাইলাতুল কদরের রজনী পালন করবেন।
মহান আল্লাহতায়ালা লাইলাতুল কদরের রাতকে অনন্য মর্যাদা দিয়েছেন। হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও এ রাতের ইবাদত উত্তম। এই রাতে আল্লাহর অশেষ রহমত ও নিয়ামত বর্ষিত হয়। পবিত্র এই রাতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় এবাদত-বন্দেগি করে থাকেন।
পবিত্র রমজান মাসের লাইলাতুল কদরে পবিত্র কোরআন নাজিল হয়েছিল। তাই মহান আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মসজিদসহ বাসা-বাড়িতে এবাদত বন্দেগিতে মশগুল থাকবেন।
মুসলমানরা নফল নামাজ আদায়, পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, জিকির-আসকার, দোয়া, মিলাদ মাহফিলের মধ্য দিয়ে শবে কদরের রজনী কাটাবেন।
পবিত্র লাইলাতুল কদর উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
পবিত্র শবে কদর উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল এবং বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি রেডিও বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে। শবে কদর উপলক্ষে আগামীকাল রোববার সরকারি ছুটি থাকবে।
লাইলাতুল কদরে ইবাদত বন্দেগিতে মুমিন মুসলমানের জন্য করণীয় :
কোরআন তেলাওয়াত করা : পবিত্র কোরআন এ রাতেই নাজিল হয়। তাই কোরআন তেলাওয়াত ও এর বিধান পালনের মাধ্যমেই এ রাত অতিবাহিত করা। কোরআন-সুন্নাহর অনুসরণে ইবাদত-বন্দেগিতে শেষ দশক অতিবাহিত করা।
গোনাহ থেকে মাফ চাওয়া : রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হজরত আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহুকে আল্লাহর কাছে গোনাহ মাফের দোয়া শিখিয়েছিলেন। তাই মুমিন মুসলমান রমজানের শেষ দশকে এ দোয়া বেশি বেশি পড়বে- উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আদফুওয়ুন; তুহিব্বুল আদফওয়া; ফাদফু আন্নি।’ অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল; ক্ষমা করতে ভালো বাসেন; অতএব আমাকে ক্ষমা করে দিন। (মুসনাদে আহমাদ, ইবনে মাজাহ, তিরমিজি, মিশকাত)
কল্যাণের দোয়া করা : লাইলাতুল কদরের রাত হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম একটি রাত। এ রাতের হক হলো আল্লাহর নৈকট্য লাভের পাশাপাশি মানুষের দুনিয়ার জীবনে সুখ-শান্তির আবেদন-নিবেদন আল্লাহর দরবারে পেশ করা। যাতে এ রাতে আল্লাহ তাআলা বান্দার জন্য সর্বোত্তম ভাগ্য নির্ধারণ করেন। দুনিয়ার যাবতীয় কল্যাণ দান করেন।
জ্ঞানার্জন করা : রমজান এবং কদর ছাড়াও জ্ঞানার্জনের গুরুত্ব অত্যাধিক। তাই লাইলাতুল কদরের রাতে জ্ঞানার্জনের জন্য কোরআন ও হাদিসের পেছনে কিছু সময় ব্যয় করা। যে সামান্য সময়ের মর্যাদা অনেক বেশি।
কাযা নামাজ পড়া : বিভিন্ন কারণে বছরজুড়ে মানুষের অনেক নামাজ কাজা হয়ে যায়। অনেকে আবার সফরে থাকার কারণে নামাজ আদায় করতে পারে না। তাই রমজানের শেষ ১০ দিন কদর তালাশে প্রতিদিন ১৭ রাকাআত ফরজ নামাজের কাযা আদায় করা উত্তম।
অতিরিক্ত না ঘুমানো : রমজানের শেষ দশকের ইবাদাত-বন্দেগি ও ইতিকাফের জন্য বিশ্বনবী কোমরে কাপড় বেঁধে লেগে যেতেন। কারণ একটাই- লাইলাতুল কদর তালাশ করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন। কারণ শেষ দশকের যে কোনো বিজোড় রাতেই লাইলাতুল কদর নিহিত থাকে।
অধিক খাবার গ্রহণ না করা : রাত জেগে ইবাদাত-বন্দেগি করতে সুস্থ সবল দেহ ও মন প্রয়োজন। মাত্রাতিরিক্ত খাবার গ্রহণ করলে লাইলাতুল কদরের ফজিলত ও তাৎপর্য থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। বেশি খাওয়ার ফলে ঘুম ও ক্লান্তিতে ইবাদতে বিঘœ ঘটতে পারে।