ধর্মপাশা প্রতিনিধি ::
ধর্মপাশা উপজেলার জয়ধনা বিল জলমহালটিতে দুটি পাওয়ার পা¤প বসিয়ে ইজারাদার ও তার লোকজন এটির তলা শুকিয়ে গত বৃহ¯পতিবার (২১মার্চ) থেকে অবৈধভাব মাছ শিকার করে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই বিষয়টির সত্যতা পেয়ে এই জলমহালটির ইজারা বাতিল করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাছে গতকাল সোমবার (২৫মার্চ) দুপুরে লিখিত প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা।
উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার জয়ধনা বিল জলমহালটি উপজেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনাধীন। এটির আয়তন ১৯একর ৪৫শতক। ১৪৩০ বঙ্গাব্দ থেকে ১৪৩২বঙ্গাব্দ পর্যন্ত তিন বছরের জন্য বাৎসরিক ৩৬ হাজার ৬৯৪ টাকা ইজারা মূল্যসহ অন্যান্য পাওনাদি পরিশোধ সাপেক্ষে এটি ইজারা পায় উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়নের জয়ধনা বিল মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি মালেক শিকদার। ইজারাদার ও তার লোকজন গত বৃহ¯পতিবার সকালে জলমহালটির পাড়ে দুটি পাওয়ার পা¤প বসিয়ে জলমহালটির তলা শুকিয়ে মাছ শিকার শুরু করেন। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর কাছ থেকে ধর্মপাশার ইউএনও মৌখিক অভিযোগ পান একই সঙ্গে জলমহালটির তলা শুকানোর ভিডিও পান তিনি। এই ঘটনাটি তদন্ত করার জন্য ধর্মপাশার সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে তিনি নির্দেশ দেন। পরে সরেজমিনে জলমহালটিতে গিয়ে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য জয়শ্রী ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের ইউনিয়ন উপসহকারী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন সহকারী কমিশনার (ভূমি)। এই নির্দেশ পেয়ে গত শনিবার (২৩ মার্চ) বিকেল পাঁচটার দিকে জয়শ্রী ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা নান্নু চক্রবর্তী সরেজমিনে ওই জলমহালটিতে যান। এ সময় দুটি পাওয়ার পা¤প দিয়ে এই জলমহালটির তলা শুকিয়ে মাছ শিকারের তিনি সত্যতা পান। ইজারার শর্ত ভঙ্গ করায় ওই জলমহালটির ইজারা বাতিল করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য ওই কর্মকর্তা তদন্ত প্রতিবেদনটি গতকাল সোমবার দুপুরে ধর্মপাশার সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাছে পাঠিয়েছেন।
জয়শ্রী ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা নান্নু চক্রবর্তী বলেন, জয়ধনা বিল জলমহালটির পাড়ে দুটি পাওয়ার পা¤প বসিয়ে এটির তলা শুকিয়ে মাছ শিকারের সত্যতা পেয়েছি। ইজারার শর্ত ভঙ্গ করায় জলমহালটির ইজারা বাতিলের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাঠিয়েছি।
জয়ধনা বিল জলমহালটির ইজারাদার মালেক শিকদার (৪২) বলেন, জয়ধনা বিল জলমহালের তলা শুকিয়ে মাছ শিকার করার অভিযোগটি সত্য নয়। কয়েকজন কৃষক জলমহাল থেকে পাওয়ার পা¤প দিয়ে পানি তুলে জমিতে সেচ দিচ্ছিল। অভিযোগ থাকায় এটিও আমরা বন্ধ করেছি।
সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ইউপি সদস্য মাজহারুল ইসলাম বলেন, জয়ধনা বিল জলমহালটিতে গত বছরও এই মৌসুমে পাওয়ার পা¤প বসিয়ে তলা শুকিয়ে মাছ শিকার করা হয়েছিল। এবারও তাই করা হয়েছে। প্রশাসন ইজারাদারের বিরুদ্ধে কঠোর কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় এই কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অলিদুজ্জামান বলেন, ইজারার শর্ত ভঙ্গ করায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন আমি পেয়েছি। এটি ইউএনও স্যারের কাছে জমা দেওয়া হবে।
ইউএনও মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দীন বলেন, প্রতিবেদনটি এখনো হাতে পাইনি। এটি পাওয়ার পর বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।