৩ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে প্রকাশিত গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন দুই প্রার্থী। সরে দাঁড়ানোর সে-সংবাদ তাঁরা দুজনই সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছেন। তাঁরা হলেন, সুনামগঞ্জ-৪ (সুনামগঞ্জ সদর- বিশ^ম্ভরপুর) আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) মনোনীত প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য দেওয়ান শামসুল আবেদীন ও সুনামগঞ্জ-১ আসনে জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী আব্দুল মান্নান তালুকদার।
এই সংবাদে জনমনে কিঞ্চিৎ আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে বটে কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, তা ধর্তব্যের পর্যায়ে পড়ে না। জনগণ নির্বাচন চান এটাই মূলকথা, কে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন এবং কেন সরে দাঁড়ালেন না, তাঁদের কাছে সেটা কোনও বড় কথা নয়। এটাও কোনও বড় কথা নয় যে, কে কত টাকা খরচ করে ভোট কেনার প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠ বিবেচিত হতে চান।
এই শ্রেষ্ঠতা অর্জনের পেছনে বাণিজ্যিকতা প্রচ্ছন্ন আছে, কানার মনে মনে জানার মতো জনগণ তা জানেন। নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার বদৌলতে জাতীয় সমস্যার সমাধন হোক, এই নিশ্চয়তাই জনমনের একমাত্র কামনা, কিন্তু সেটা সম্পদলিপ্সু রাজনীতিকরা হতে দিচ্ছেন না, এবংবিধ রাজনীতিক বাস্তবতার পরিসরে জনগণ দেশপ্রেমিক, সৎ ও শ্রেণি-স্তর নির্বিশেষে জনসেবায় একনিষ্ঠ হবেন এমন প্রার্থীর জন্যে অপেক্ষায় আছেন। এই কারণে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়তি নির্ধারিত নিয়মের মতো যেমন হবার তেমনই হচ্ছে। কেউ কেউ টাকা দিয়ে ভোট কেনার প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়িয়ে প্রমাণ করছেন যে, তাঁরা ভোট কেনার রাজনীতিতে মানানসই নন এবং বিপরীতে সুনামগঞ্জ-৪ আসনের প্রার্থী ড. মোহাম্মদ সাদিককে ব্যতিক্রম বাদে সাধারণ মানুষেরা দলীয় রাজনীতির বাইরে গিয়েও সমর্থন দিয়ে আসছেন ও তাঁর জন্যে কাজ করছেন, ক্রমে ক্রমে দলমত নির্বিশেষে তাঁর সমর্থন উত্তরোত্তর বাড়ছে, সমর্থনের জনজোয়ার তৈরি হয়েছে তাঁর পক্ষে।
পরিশেষে বলি, বর্তমান নির্বাচনী বাস্তবতায় এইভাবে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়টি বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে বিবেচিত হতে পারে কেবল, এর বেশি কীছু নয়। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে দেশে এবারের নির্বাচন হচ্ছে, এমন আরও অনেক বিচ্ছিন্ন ঘটনা এ নির্বাচনের পরিসরে ঘটতেই থাকবে। আমরা মনে করি নির্বাচনের লাগাম দেশের সাধারণ মানুষের কাছেই রয়েছে তারা আগামী ৭ জানুয়ারি ভোট উৎসবের মাধ্যমে এর প্রমাণ দিবেন। মনের রাখতে হবে নির্বাচনের লাগাম সাধারণ ভোটারদের হাতে থাকলেই নির্বাচনে কথিত ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরি হতে পারে।